Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

দোষী সাব্যস্ত হলেও লালু-সঙ্গ ছাড়বে না কংগ্রেস

এক সময় লালু সম্পর্কে কিছুটা নেতিবাচক মনোভাবই ছিল রাহুল গাঁধীর। মনমোহন সরকার দাগি সাংসদ-বিধায়কদের সদস্যপদ রক্ষায় অধ্যাদেশ জারি করলেও পরে দিল্লির প্রেস ক্লাবে উপস্থিত হয়ে সেই অধ্যাদেশ ছিঁড়ে ফেলে রাহুল বুঝিয়েছিলেন, অপরাধীদের পাশে দাঁড়াতে তিনি নারাজ।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৩
Share: Save:

পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেলে যাওয়ার পরেও লালুপ্রসাদের পাশেই থাকছে কংগ্রেস। দলের তরফে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, কংগ্রেস এখন কোনও ভাবেই শরিক দলের এই নেতাকে ত্যাগ করবে না।

এক সময় লালু সম্পর্কে কিছুটা নেতিবাচক মনোভাবই ছিল রাহুল গাঁধীর। মনমোহন সরকার দাগি সাংসদ-বিধায়কদের সদস্যপদ রক্ষায় অধ্যাদেশ জারি করলেও পরে দিল্লির প্রেস ক্লাবে উপস্থিত হয়ে সেই অধ্যাদেশ ছিঁড়ে ফেলে রাহুল বুঝিয়েছিলেন, অপরাধীদের পাশে দাঁড়াতে তিনি নারাজ। সেই পরিস্থিতি অনেক বদলেছে। রাজনীতির অঙ্কেই কাছাকাছি এসেছে কংগ্রেস এবং লালুর আরজেডি। কংগ্রেসের মত হল, লালু জেলে গেলেও তাঁর ভোটব্যাঙ্ক শুধু অটুট নয়, এই রায়ের পরে তা আরও সুসংহত হবে। তা ছাড়া এমন নয় যে, লালু এই প্রথম জেলে গেলেন।

আগের চেয়ে অনেক পরিণত এবং কৌশলী রাহুল গত কয়েক বছর ধরেই লালুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখছেন। তাতে সাফল্যও এসেছে। বিহারে গত বিধানসভা ভোটেই বিজেপিকে রুখে দিয়েছিল আরজেডি-জেডিইউ-কংগ্রেস জোট। নীতীশ পরে জোট ভেঙে বিজেপির হাত ধরলেও সেই সাফল্য মাথায় রাখছেন রাহুল। কংগ্রেসের মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি বলেন, ‘‘ফৌজদারি মামলা ও রাজনৈতিক জোট দু’টি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। এক করে ফেলা ঠিক নয়। তা ছাড়া আইনি লড়াই তো সেই নব্বইয়ের দশক থেকে লড়ছেন লালুপ্রসাদ।’’

আরও পড়ুন: স্কুটারে গিয়েছে মোষ! ওটাই ক্লু ‘বিশ্বাসদা’র

সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মণীশের বক্তব্য, সৃজন কেলেঙ্কারিতে বিহার সরকারের ট্রেজারি থেকে অনেক বেশি টাকা গলে গিয়েছে। তখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নীতীশ ও অর্থমন্ত্রী ছিলেন বিজেপির সুশীল মোদী। সিবিআই সেই তদন্তের দায়িত্বে থাকায় তার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সন্দিহান মণীশের কটাক্ষ, ‘‘কারণ সিবিআই তো শাসক দলের পোষা তোতা!’’

সিবিআই-কে নিয়ে বিরোধীরা যা-ই কটাক্ষ করুক, আজ তারা বিজেপির মুখ বাঁচিয়েছে বলেই মত রাজনীতিকদের। টুজি থেকে আদর্শ কেলেঙ্কারি— কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা একের এক দুর্নীতি মামলার রায় বিপক্ষে যাওয়ায় অস্বস্তি বাড়ছিল নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের। এই পরিস্থিতিতে আজকের রায়ের পরেই হইহই করে মাঠে নেমেছে বিজেপি। একযোগে নিশানা করেছে কংগ্রেস ও লালুকে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জগৎপ্রসাদ নাড্ডা বলেন, ‘‘দু’দল পারস্পরিক আঁতাত করে যে এ দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে, তা আদালতের রায় থেকেই স্পষ্ট।’’

জোট প্রশ্নে কংগ্রেসকে নিশানা করার পাশাপাশি রাজনৈতিক ভাবে আরজেডি-কে বাকিদের কাছে অস্পৃশ্য করতে মরিয়া বিজেপি। বিশেষত নিশানা করা হয়েছে লালুর পরিবারকে। বিষয়টি স্পষ্ট করে কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘‘লালুপ্রসাদ জেলে। তেজস্বীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। পরিকল্পিত ভাবে আজ রায় ঘোষণার দিনই মেয়ে মিশার বিরুদ্ধেও দুর্নীতি মামলায় চার্জশিট দিয়েছে ইডি। ডিএমকে থেকে তৃণমূল— সব বিরোধী দলের বিরুদ্ধে এক নীতি নিয়েছে বিজেপি।’’ এ দিনের রায় নিয়ে মন্তব্য করেনি তৃণমূল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE