Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus Update

দেশে মোট আক্রান্ত ১৫ লাখ ছাড়াল, আক্রান্তের ৬৪ শতাংশের বেশি সুস্থ

গত দু’দিনে এই সংক্রমণের হার নেমেছিল দশ শতাংশের নীচে। বুধবার ফের তা কিছুটা হলেও বাড়ল।

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮ হাজার ৫১৩ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮ হাজার ৫১৩ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২০ ১১:৪০
Share: Save:

সংক্রমণের হার, কোভিড পরীক্ষার পরিসংখ্যান গত দু’দিন একটু স্বস্তি দিয়েছিল। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় বাড়ল সংক্রমণের হার, পাশাপাশি কমল পরীক্ষার সংখ্যা। যদিও তার মধ্যেই আশা জাগাল আক্রান্ত রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠা। আগের সঙ্গে তুলমূল বিচারে দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধিও গত কয়েকদিন ধরে স্বস্তি দিচ্ছে। ২৪ জুলাই নতুন আক্রান্ত বেড়ে হয়েছিল ৫০ হাজার ছুঁইছুঁই। কিন্তু তার পর থেকে বিগত কয়েকদিনে দৈনিক নতুন আক্রান্ত ৪৭-৪৮ হাজারের গণ্ডিতেই ঘোরাফেরা করছে। শেষ কয়েকদিনে সংক্রমণের সংখ্যা অন্তত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়েনি।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮ হাজার ৫১৩ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। যার ফলে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ লক্ষ ছাড়িয়ে গেল। গত ১২ দিনে দেশে আক্রান্ত হলেন পাঁচ লক্ষ মানুষ। এখন দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ লক্ষ ৩১ হাজার ৬৬৯ জন।

প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। গত সপ্তাহ থেকে উর্ধ্বমুখী থাকার পর গত দু’দিনে এই সংক্রমণের হার নেমেছিল দশ শতাংশের নীচে। বুধবার ফের তা কিছুটা হলেও বাড়ল। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণের হার ১১.৮৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে পরীক্ষা হয়েছে চার লক্ষ আট হাজার ৮৫৫ জনের। গত দু’দিনের তুলনায় যা বেশ খানিকটা কম।

আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও বেশ স্বস্তিদায়ক। প্রতিদিন সুস্থ হয়ে ওঠার হারটাও বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত মোট ন’লক্ষ ৮৮ হাজার ২৯ জন করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের প্রায় ৬৪.৫১ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৩৫ হাজার ২৮৬ জন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

মৃত্যুর নিরিখে স্পেন ও ফ্রান্সকে টপকে গেলেও, ভারতে মৃত্যু হার ওই সব দেশগুলির তুলনায় অনেক কম। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৭৬৮ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৩৪ হাজার ১৯৩ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ১৪ হাজার ১৬৫ জন। মৃত্যুর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা দিল্লিতে প্রাণ গিয়েছে তিন হাজার ৮৮১ জনের। তিন হাজার ৬৫৯ জনের মৃত্যু নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে তামিলনাড়ু। গুজরাতে দু’হাজার ৩৭২ জন প্রাণ হারিয়েছেন করোনার কারণে। কর্নাটকে বুধবার মৃত্যুর সংখ্যা দু’হাজার ছাড়়াল (২,০৫৫)। উত্তরপ্রদেশ (১,৪৯৭), পশ্চিমবঙ্গ (১,৪৪৯) ও অন্ধ্রপ্রদেশে (১,১৪৮) মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে রোজদিন বেড়েই চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (৮৩০), রাজস্থান (৬৪৪), তেলঙ্গানা (৪৮০, ২৪ ঘণ্টায় অপরিবর্তিত), হরিয়ানা (৪০৬), পঞ্জাব (৩৩৬), জম্মু ও কাশ্মীর (৩৩৩), বিহার (২৬৯) ও ওড়িশা (১৫৪)। বাকি রাজ্যগুলিতে মৃতের সংখ্যা এখনও ১০০ পেরোয়নি।

শুরু থেকেই মহারাষ্ট্র সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে। সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হয়েছেন তিন লক্ষ ৯১ হাজার ৪৪০ জন। প্রায় সাত হাজার বেড়ে তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত দু’লক্ষ ২৭ হাজার ৬৮৮ জন। জুলাইয়ের শেষ দিকে রাজধানী দিল্লিতে দৈনিক সংক্রমণে বেশ খানিকটা লাগাম পড়েছে। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষ ৩২ হাজার ২৭৫ জন। গত কয়েক দিনে দৈনিক সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্নাটকে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ছাড়িয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ১০ হাজার ২৯৭ জন ও কর্নাটকে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ সাত হাজার এক জন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

উত্তরপ্রদেশ (৭৩,৯৫১), পশ্চিমবঙ্গ (৬২,৯৬৪), গুজরাত (৫৭,৯৮২), তেলঙ্গানা (৫৭,১৪২, ২৪ ঘণ্টায় অপরিবর্তিত) ও বিহারে (৪৩,৮৪৩) আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়ে চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে রাজস্থান (৩৮,৫১৪), অসম (৩৪,৯৪৭), হরিয়ানা (৩২,৮৭৬), মধ্যপ্রদেশ (২৯,২১৭), ওড়িশা (২৮,১০৭), কেরল (২০,৮৯৪), জম্মু ও কাশ্মীর (১৮,৮৭৯) ও পঞ্জাব (১৪,৩৭৮)। ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, ত্রিপুরার মতো রাজ্যে মোট আক্রান্ত এখনও দশ হাজারের কম।

পশ্চিমবঙ্গেও গড়ে দু’হাজার লোকের দৈনিক সংক্রমণ হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে দু’হাজার ১৩৪ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ৬২ হাজার ৯৬৪ জন। সংক্রমণের হার খানিক কমলেও মৃত্যুর ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে রাজ্যে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৩৮ জনের। এ নিয়ে এক হাজার ৪৪৯ জন করোনার কবলে পড়ে প্রাণ হারালেন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus COVID-19 Coronavirus in India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE