রাকেশ আস্থানা
নিজেদেরই স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানা কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশন (সিভিসি)-এ অভিযোগ জানিয়েছেন, আর সেই অভিযোগকেই ‘অসার এবং অসৎ উদ্দেশ্যে করা’ বলে বিবৃতি দিল সিবিআই। কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থার ডিরেক্টর অলোক বর্মার বিরুদ্ধেই অভিযোগটি করেছিলেন সংস্থার দু’নম্বর আস্থানা। তাঁর অভিযোগ ছিল, আইআরসিটিসি দুর্নীতি মামলায় লালু প্রসাদের বিরুদ্ধে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে তাঁকে পদে পদে বাধা দিয়েছিলেন সংস্থার প্রধান বর্মা। কয়েকটি ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তল্লাশিও করতে দেওয়া হয়নি। সেই অভিযোগ সত্য কি না জানতে সিবিআইকেই তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছিল সিভিসি। আস্থানার অভিযোগের কথা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরে শুক্রবার এই বিবৃতি দিয়েছে সিবিআই, যা বেনজির।
ডিরেক্টর অলোক বর্মার সঙ্গে মোদী-অমিত শাহের অনুগত বলে পরিচিত রাকেশ আস্থানার বিরোধ নতুন নয়। ২০০২-এ গোধরায় সাবরমতী এক্সপ্রেসে অগ্নিকাণ্ডের তদন্তে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী যে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেন, আস্থানা তার প্রধান ছিলেন। এই ঘটনায় এবং পরে গুজরাত দাঙ্গার বহু ঘটনার তদন্তে মোদী ও অমিত শাহকে ‘ছাড়’ দিয়ে এসেছেন গুজরাত ক্যাডারের অফিসার আস্থানা।
অভিযোগ আস্থানাকে সিবিআই ডিরেক্টর করার জন্য নিয়ম ভাঙতেও তৈরি ছিলেন মোদী। এ জন্য ওই সংস্থার ডিরেক্টর পদে নিয়োগ বহু দিন আটকে রাখা হয়। কিন্তু বিষয়টি আদালতে গড়ালে নিয়ম মেনে অলোক বর্মাকে ডিরেক্টর করা হয়। তাতেও না দমে আস্থানাকে স্পেশাল ডিরেক্টর হিসেবে নিয়োগ করা হয়। সেই নিয়োগ-বৈঠকে আস্থানার নামে কড়া আপত্তি জানিয়ে বর্মা বলেছিলেন, এই অফিসারের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের কাছেই বহু মামলা রয়েছে। এমন এক জন ‘দাগি’ লোককে সিবিআইয়ের দায়িত্বশীল পদে নিয়োগে সংস্থার ভাবমূর্তি খারাপ হতে বাধ্য। কিন্তু তাঁর আপত্তি খারিজ করেই আস্থানাকে নিয়োগ করা হয়।
সিবিআইয়ে কয়েক জন অফিসারের নিয়োগ নিয়ে সম্প্রতি একটি বৈঠকের আগে দেশের বাইরে থাকা ডিরেক্টর সিভিসি-কে চিঠি দিয়ে জানান, তাঁর অনুপস্থিতিতে যেন বৈঠক না করা হয়। আরও জানান, ওই বৈঠকে উপস্থিত হওয়ার অধিকার স্পেশাল ডিরেক্টর আস্থানাকে দেওয়া হয়নি। এ ঘটনাতেও সিবিআইয়ের দুই মাথার বিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসে। কারণ বর্মার আশঙ্কা ছিল, তাঁর অনুপস্থিতিতে অযোগ্য কিছু অফিসারকে এনে সিবিআইয়ে নিজের অনুগত লোক বাড়ানোর চেষ্টা করবেন আস্থানা।
এর পরেই ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে আইআরসিটিসি দুর্নীতির তদন্তে লাগাম টানার অভিযোগ তুলে সিভিসি-তে নালিশ করেন আস্থানা। বর্মা তার জবাবে সিভিসি-কে জানিয়ে দেন, আইআরসিটিসি দুর্নীতি মামলার তদন্ত শেষে লালু প্রসাদ ও তাঁর পরিজনদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই। ডিরেক্টর হিসাবে তিনি না চাইলে তা কি হওয়া সম্ভব?
এ দিন সিবিআই বিবৃতিতে আরও বলেছে, ‘কয়েক জন অফিসারকে ভয় দেখাতেই আস্থানা সিভিসি-তে এই অভিযোগ করেছিলেন।’ সন্দেহ নেই এই ঘটনার পরে সিবিআইয়ের ভাবমূর্তি আরও খারাপ হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy