গত বছরের কাজের নিরিখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক দেশের সব থানার মধ্যে সেরা দশের তালিকা করেছে। তার মধ্যে চার নম্বরে নাম রয়েছে জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ির। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টুইটে এই নামগুলো জানিয়েছেন।
বছর চারেক আগে ধূপগুড়িতেই পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছিল। রেল লাইনের পাশ থেকে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর ক্ষতবিক্ষত বিবস্ত্র দেহ উদ্ধারের পরে সারা দেশের সংবাদমাধ্যমে ধূপগুড়ি নিয়ে চর্চা শুরু হয়। সালিশি সভায় বাবাকে মারধরের প্রতিবাদ করায় নাবালিকাকে গণধর্ষণ করে ট্রেনের নীচে ছুড়ে ফেলা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। তদন্তে পুলিশ গড়িমসি করে বলে অভিযোগ ওঠে। তবে পরে সব অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় তদন্ত করেছে রেলপুলিশও।
তবে তার পরে গত চার বছরে পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টেছে। থানায় জমা পড়া কোনও অভিযোগের তদন্তই বাকি নেই। গত দু’বছরে ধূপগুড়ি থানার অধীনে বড় কোনও অপরাধ হয়নি। কয়েক মাস আগে ধূপগুড়ির বারহালিয়া গ্রামে গরু পাচারকারী সন্দেহে গ্রামবাসীরা দুই যুবককে পিটিয়ে খুন করে। সেই ঘটনায় অভিযোগ হলে তৃণমূলের নেতা সহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
নভেম্বরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের গোয়েন্দাদের একটি দল ধূপগুড়িতে এসে পুলিশের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখেন। বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের গোয়েন্দারা ধূপগুড়ির বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে বলে দেখেছেন, কেউ পুলিশের বিরুদ্ধে কথা বলেনি। জেনেছেন, যতগুলো চুরি হয়েছে, তার বেশির ভাগ জিনিস মানুষ ফেরত পেয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, থানার পরিকাঠামো, এলাকায় চুরি ছিনতাই-সহ অপরাধ দমনে ব্যবস্থা, বাসিন্দারা সমস্যায় পড়লে তাদের পাশে দাঁড়ানো কিংবা নানা সামাজিক কাজে পুলিশের যোগদান সহ নানা মাপকাঠিকে সামনে রেখেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন একটি ব্যুরো অফ পাবলিক রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট দেশার সেরা থানা বাছাইয়ের কাজে নেমেছিল৷ এ জন্য তাদের দেওয়া মাপকাঠিগুলো বিচার করে বিভিন্ন জেলার শীর্ষ পুলিশ কর্তারাই সেই জেলার কয়েকটি করে থানার নাম বাছাই করে দেন৷ রাজ্যের পুলিশ কর্তারা চূড়ান্ত বাছাইয়ের কাজ করেন৷ মাস কয়েক আগে সেই চূড়ান্ত বাছাইয়ে বিধান নগর কমিশনারেটের অধীনে থাকা নিউটাউন থানা ও ধূপগুড়ি থানা জায়গা পায়৷
ধূপগুড়ি থানায় পুলিশকর্মীদের কাজের পরিবেশ অনেক আগে থেকেই উন্নত৷ সাধারণ মানুষ সেখানে গেলে যাতে শৌচাগার ব্যবহার থেকে শুরু করে ন্যূনতম পরিষেবা পান, তারও ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে৷ থানার এক অফিসার জানান, কোনও সমস্যা নিয়ে থানায় গেলে তাঁরা সমাধানের জন্য সবরকম চেষ্টা করেন।
পুলিশের একাংশের মতে, কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দল আলাদা৷ অযথা কেউ কেন কিছু বলে ঝুঁকি নিতে যাবেন? এতে করে তো কারও বিরাগভাজন হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে৷ পুলিশ মহলের কেউ কেউ আবার এর পিছনে রাজনীতিও দেখছেন৷ তাঁদের কথায়, কাকতালীয়ভাবে হলেও এ বার পুরভোটে ধূপগুড়িতে অনেকটাই সাফল্য পেয়েছে বিজেপি৷ আবার বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকারই ধূপগুড়িকে অন্যতম সেরা থানা বাছল৷ পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘সরকারিভাবে কোনও তথ্য আমাদের কাছে আসেনি৷ তাই মন্তব্য করব না৷
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy