Advertisement
০৮ মে ২০২৪
general-election-2019-national

সাসপেনশনে প্রশ্ন, বিতর্কে নতুন বাক্স

কংগ্রেসের প্রশ্ন, নিজের দায়িত্ব পালন করা সত্ত্বেও কেন ওই আমলাকে সাসপেন্ড করা হল। প্রধানমন্ত্রীর চপারে কী ছিল, সেই রহস্য আরও বাড়িয়ে তুলেছে সাসপেনশনের এই ঘটনা।

মোদীর কপ্টার নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ফাইল চিত্র।

মোদীর কপ্টার নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:০৫
Share: Save:

সম্বলপুরের নির্বাচনী পর্যবেক্ষক মহম্মদ মহসিনকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলল কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রীর চপারে তল্লাশি চালানোর জেরে কর্নাটক ক্যাডারের এই অফিসারকে গত রাতে সাসপেন্ড করেছে নির্বাচন কমিশন।

কংগ্রেসের প্রশ্ন, নিজের দায়িত্ব পালন করা সত্ত্বেও কেন ওই আমলাকে সাসপেন্ড করা হল। প্রধানমন্ত্রীর চপারে কী ছিল, সেই রহস্য আরও বাড়িয়ে তুলেছে সাসপেনশনের এই ঘটনা। কর্নাটকে প্রধানমন্ত্রীর সফর-কপ্টার থেকে নামানো কালো বাক্স এবং দু’জন লোকের তা নিয়ে দৌড়ের ছবি ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছিল। সম্বলপুরে নামা প্রধানমন্ত্রীর চপারে তল্লাশি করতে গিয়েছিলেন সেখানকার নির্বাচনী পর্যবেক্ষক মহম্মদ মহসিন। এই বিতর্কের মধ্যে আবার মোদীরই তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের বিরুদ্ধে চপারে করে বাক্স আনার অভিযোগ উঠেছে সম্বলপুরে। যদিও বাক্সে কী রয়েছেন, তা দেখতে দেননি ধর্মেন্দ্র। উল্টে কর্তব্যরত অফিসারদের শাসানি-হুমকি দিয়ে কাজ থেকে বিরত রেখেছিলেন বলে অভিযোগ। বিরোধী বিজু জনতা দলের দাবি, বাক্সে টাকা ছিল। ভোট কেনার পরিকল্পনা করেছে বিজেপি। কেন্দ্রে শাসক দল এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।

কমিশন জানিয়েছে, সম্বলপুর জেলার নির্বাচনী আধিকারিক, সম্বলপুরের ডিআইজি-র রিপোর্টে জানানো হয়েছে, এসপিজি (স্পেশ্যাল প্রোটেকশন গ্রুপ) নিরাপত্তায় থাকা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে তল্লাশি চালানো সংক্রান্ত যে নিয়ম রয়েছে, কর্নাটক ক্যাডারের অফিসার মহসিন নামের ওই পর্যবেক্ষক তা লঙ্ঘন করেছেন। সেই কারণে তাঁকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করে নির্বাচন সংক্রান্ত কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উপ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার চন্দ্র ভূষণ কুমার আজ দিল্লিতে বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিশেষ অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি আগামিকালের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবেন।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

১০ এপ্রিলের একটি নির্দেশিকার উল্লেখ করে কমিশন সূত্রে আজ দাবি করা হয়, প্রধানমন্ত্রী ও যে সব রাজনৈতিক নেতাদের উপর হামলার সম্ভাবনা রয়েছে এবং যাঁরা কেন্দ্র বা রাজ্যের নির্দেশে বিশেষ ধরনের নিরাপত্তা পান (এসপিজি), একমাত্র তাঁদের যানবাহন পরীক্ষা করতে পারবেন না নির্বাচনী আধিকারিকেরা। এ ক্ষেত্রে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ আহমেদ পটেল। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কংগ্রেসের বর্তমান ও প্রাক্তন সভাপতি দু’জনেই এসপিজি নিরাপত্তা পান। কিন্তু নির্বাচনের সময়ে একাধিকবার তাঁদের গাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছেন নির্বাচনী আধিকারিকেরা। কমিশন কি বোঝাতে চাইছে, আইনের সুবিধা কেবল বিশেষ কিছু ক্ষমতাধারীরাই পাবেন?’’ এসপিজি নিরাপত্তাপ্রাপ্তদের যানবাহনকে ছাড় দেওয়ার যে নির্দেশের কথা কমিশনের তরফে বলা হচ্ছে, তা টুইটারে প্রকাশ করে কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছে, বিশেষ ক্ষেত্রে এসপিজি নিরাপত্তাপ্রাপ্তদের যানবাহনেও যে তল্লাশি করানো যায়, তা ওই নির্দেশেই বলা রয়েছে। কংগ্রেসের এই যুক্তির অবশ্য কোনও জবাব দেননি কমিশন কর্তারা। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন প্রাক্তন এক কেন্দ্রীয় সচিবও। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে প্রাক্তন সচিব ই এ এস শর্মা আজ চিঠি দেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরাকে। তিনি লিখেছেন, ‘‘এসপিজি নিরাপত্তা প্রাপ্ত ব্যক্তিদের তল্লাশি নিয়ে স্পষ্ট আইন নেই। একজন আমলা নিজের দায়িত্ব পালন করা সত্ত্বেও তাঁকে অহেতুক সাসপেন্ড করা হয়েছে।’’

কালো বাক্সে কী রয়েছে, ধর্মেন্দ্র গতকাল তা দেখাতে না চাইলেও, সেই রাজ্যের রৌরকেলায় মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের প্রচারে তাঁর হেলিকপ্টার পরীক্ষা করে দেখেন নির্বাচন কমিশনের ফ্লাইং স্কোয়াডের অফিসারেরা। সেই ঘটনার উল্লেখ করে শর্মা লিখেছেন, ‘‘একজন মুখ্যমন্ত্রীর কপ্টারে যদি তল্লাশি করা যায়, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর চপারে তা কেন করা যাবে না। কারণ, দু’জনেই নির্বাচনী প্রচারের কাজে ঘুরছেন। প্রধানমন্ত্রীকে আর পাঁচজন রাজনৈতিক নেতার মতোই দেখা উচিত কমিশনের। কারণ, বিরোধী দলের নেতা-প্রার্থীদের তল্লাশি চালাতে কমিশনের অফিসারদের দ্বিধা নেই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রে সেই অফিসারেরাই গুটিয়ে যাচ্ছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE