—ফাইল চিত্র।
লোকসভার দিন ঘোষণার ঠিক আগে জাতীয় স্তরে বিরোধী রাজনীতির সলতে পাকাতে আজ সন্ধ্যায় দিল্লি পৌঁছলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামিকাল যন্তরমন্তরে বিরোধী ধর্না সমাবেশে যোগ দেওয়াটাই মুখ্য উদ্দেশ্য। পাশাপাশি দিল্লিতে জিটিএ ভবনের শিলান্যাস করবেন তিনি। পরশু দিল্লিতে থাকার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। সূত্রের খবর, সে দিন বিরোধী দলগুলির নেতাদের মধ্যে একটি বৈঠক হতে পারে। আগামিকাল সকালে সংসদের বাইরে ধর্নায় বসবেন তৃণমূল সাংসদেরা।
আজ রাতেই মমতার সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছে গিয়েছেন টিডিপি নেতা চন্দ্রবাবু নায়ডু। তার পর তিনি নিজের রাজ্যে ফেরার বিমান ধরেন। প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক হয়েছে দুই নেতার। গত কাল বারো ঘণ্টা অনশন ধর্নার পরে নায়ডু আজ টিডিপি-র সাংসদ এবং বিধায়কদের নিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ ভবন থেকে রাষ্ট্রপতি ভবনে মিছিল করে গিয়ে রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করেছেন। রাজ্যের বিশেষ মর্যাদার দাবিতে ১৮ দফার একটি স্মারকলিপি তিনি তুলে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতির হাতে।
আজ রাতের বৈঠকে চন্দ্রবাবু গত কাল এবং আজকের বিরোধী সমাবেশের গতিবিধির বিষয়ে জানিয়েছেন মমতাকে। তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘‘আজ ফিরে যাচ্ছেন চন্দ্রবাবু নায়ডু। কাল আবার ধর্নায় আসবেন দিল্লি। আবার আমাদের আগামিকাল ধর্নায় দেখা হবে।’’ কাল এই লোকসভার শেষ দিন। সংসদে যাবেন কি না জানতে চাইলেন মমতার উত্তর ‘‘আমি তো আর সাংসদ নই! তবে সেন্ট্রাল হল আমার প্রিয় জায়গা। এলে এক বার যাই। কাল যাব কি না এখনও স্থির করিনি।’’
দিল্লি রওনা হওয়ার আগে আজ বিকেলে কলকাতা বিমানবন্দরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অরবিন্দ কেজরীবালের ডাকা ধর্নায় কাল যোগ দেব। দিল্লিতে আমার একটা অন্য অনুষ্ঠানও রয়েছে। জিটিএ দিল্লিতে যে গোর্খা ভবন তৈরি করেছে, তার উদ্বোধন হবে কাল।’’ দিল্লিতে বিজেপি-বিরোধী বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হবে বলে মমতা আশাবাদী। বিরোধীদের সঙ্গে এ বারের আলোচনায় আগামী লোকসভা ভোটের অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি তৈরি হবে কি না, তা জানতে চাইলে মমতার সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘‘দেখা যাক।’’
গত কাল চন্দ্রবাবুর অনশন ধর্নায় যোগ দেন কংগ্রেস-সহ বেশির ভাগ বিরোধী দলের নেতা ও প্রতিনিধিরা। কাল যাতে কংগ্রেসও উপস্থিত থাকে তার জন্য চেষ্টা চলছে। সূত্রের খবর, চন্দ্রবাবু যোগাযোগ করেছেন কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে। যে-হেতু আপ-এর সঙ্গে কংগ্রেসের সম্পর্ক মধুর নয় তাই আগামিকালের মঞ্চে কংগ্রেসের শীর্ষ পর্যায়ের কোনও নেতার থাকার সম্ভাবনা কম। তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা চলছে। সিপিএম আসছে না বলেই জানিয়ে দিয়েছে। তৃণমূলের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নিতে চাইছে না সিপিএম। দলের সাংসদ মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘আগামিকাল কিসের কর্মসূচি? গণতন্ত্র বাঁচাও? আমরা বইয়ের প্রচ্ছদটা দেখে কোথাও যাই না! ভিতরটা দেখি।’’
গোর্খাদের জন্য ভবনের বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন মমতা। দিল্লিতে একটি পুরনো গোর্খা ভবন আছে সফদরজঙে। এ বার সাকেতে নতুনটি তৈরি হবে। আগামিকাল দুপুরে ধর্নায় যাওয়ার আগে মমতা তার শিল্যান্যাস করবেন চাণক্যপুরীর নতুন বাংলা ভবন থেকে রিমোট কন্ট্রোলে। সঙ্গে আসা মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন তখন সাকেতে থাকবেন। জিটিএ-র কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান বিনয় তামাং, ভাইস চেয়ারম্যান অনীত থাপা, রাজ্যসভার সাংসদ শান্তা ছেত্রীও থাকবেন। এর আগের ভবনটি ছিল সুবাস ঘিসিংয়ের সময়ে তৈরি। এখন মমতা নিজের হাতে নিয়েছেন জিটিএ-র অনেক কার্যকলাপই। প্রায়শই তিনি পাহাড়ে যান। এ বার দিল্লি সফরে পাহাড়ের মন জয়ের চেষ্টাও থাকছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই ভবনে গোর্খাদের কল্যাণমূলক কাজ হবে। দিল্লিতে বসবাসকারী অনেক গোর্খা কর্মীর যোগাযোগের কেন্দ্র হবে এখানে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy