Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিজেপি তাড়ালে বাঙালি-বিহারির আশ্রয় বঙ্গে: মমতা

 —ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৮ ০৭:৫৩
Share: Save:

রাজ্যের প্রান্তিক জেলা সদর থেকে অসম মেরেকেটে ঘণ্টা দেড়েকের পথ। সেখানে দাঁড়িয়ে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বার্তা দিলেন, এনআরসি করে তাড়ানো যাবে না বাঙালিদের। এমনকি, বিহারিদের তাড়ানোর চেষ্টা হলেও আশ্রয় দেবে বাংলা। কোচবিহার শহরের রাসমেলা মাঠে জনসভা থেকে তাঁর এই বার্তাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক শিবির। একই সঙ্গে বলা হচ্ছে, কড়া ভাষায় বিজেপির সমালোচনা করে এবং নিজের সরকারের উন্নয়নের প্রচার করে মমতা এ দিন কার্যত লোকসভা ভোটের প্রচারই করে গেলেন।

দু’বছর আগে কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বামেদের পিছনে ঠেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে বিজেপি। তার পর থেকেই এই অঞ্চলে গেরুয়া শিবিরের গতিবিধি চোখে পড়ার মতো। তাই এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতায় মূল আক্রমণের লক্ষ্য ছিল কেন্দ্রের শাসকদলই। বামেদেরও তিনি বিঁধেছেন। তবে তা সামান্যই।

এ দিন এনআরসি প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আজ অসমে কী হচ্ছে? আমাদের চল্লিশ লক্ষ ভাই-বোনের নাম বাদ গিয়েছে। মানুষ আত্মহত্যা করছে।” তিনি আরও বলেন, “অসমে বাঙালি খেদাও, গুজরাতে বিহারি খেদাও। আত্মমর্যাদার লড়াইয়ে আমার ভাইবোনের উপর যদি অত্যাচার হয়, সে বাঙালি, বিহারি বা অসমিয়া, যে-ই হোন, মনে রাখবেন বাংলা তাঁদের নিজের মতো করে আশ্রয় দেবে।” মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, বিজেপিশাসিত রাজ্যে শ্রমিকরাও নিরাপদ নয়।

অনেকেই বলছেন, বাঙালি সঙ্গে বিহারি ভোটও তৃণমূলের কাছে এখন গুরুত্বপূর্ণ। উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় বিহার, ঝাড়খণ্ডের লোকজন কর্মসূত্রে রয়েছেন। তাই এ দিন মুখ্যমন্ত্রী এনআরসি-র পাশাপাশি গুজরাতে বিহারিদের উপরে অত্যাচারের বিষয়টিও জুড়ে দিলেন। এবং সব মিলিয়ে দোষ দিলেন সেই বিজেপির ঘাড়ে।

কেন্দ্রের প্রকল্প নিয়েও তোপ দাগেন মমতা। প্রধানমন্ত্রীর পছন্দের ‘বেটি বচাও বেটি পঢ়াও’ প্রকল্প নিয়ে তাঁর অভিযোগ, এতে নামমাত্র বরাদ্দ করা হয়। ওই টাকা বিজ্ঞাপনেই শেষ হয়ে যায়। সেখানে কন্যাশ্রী প্রকল্পে রাজ্যে সাড়ে ছ’হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে জানান তিনি।

ছিটমহল সমস্যার সমাধান থেকে বাংলাদেশ-ভুটান-নেপাল সংযোগকারী রাস্তা, সব কিছুর জন্যই নিজের সরকারের কৃতিত্ব দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “গত সত্তর বছরে কোচবিহার কিছু পায়নি। আমরা এই সাত বছরে তা করে দিয়েছি।”

বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “রাজ্য জুড়ে অস্থিরতা চলছে। মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। বিজেপিশাসিত রাজ্য নিরাপদ বলেই মানুষ সেখানে যাচ্ছে।” সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “বিজেপি ও তৃণমূল দুই মিলে দেশ ও রাজ্যের ক্ষতি করছে। মানুষ এর জবাব দেবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE