মনিকা খানগেমবাম। ফাইল চিত্র।
ফের জাতিবিদ্বেষের শিকার এক মণিপুরী। এ বারও সেই দিল্লি। সোলে যাওয়ার সময় মণিপুরের সামাজিক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত এক মহিলাকে দিল্লি বিমানবন্দরে শুনতে হল, “আপনি পাক্কা ভারতীয় তো?” তা-ও আবার বিমানবন্দরের এক সরকারি অফিসারের কাছে! এই ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
সোলে গ্লোবাল উইমেন’স কনফারেন্সে যোগ দিতে যাবেন বলে দিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছন মনিকা খানগেমবাম। অভিযোগ, সেখানে অভিবাসন দফতরে যখন তিনি তাঁর পাসপোর্টটি আধিকারিকের হাতে দেন, তখন ওই আধিকারিক তাঁকে কটাক্ষ করে বলেন, “ভারতীয় বলে তো মনে হচ্ছে না!” এখানেই থেমে থাকেননি ওই অফিসার। মনিকাকে ভারতের কতগুলো রাজ্য সেটাও জিজ্ঞেস করেন। যখন ওই অফিসার মনিকাকে বিব্রত করছিলেন, পাশে বসা এক মহিলা কর্মী এ সব দেখে হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছিলেন। মনিকা জানান, বিমান ধরতে তাঁর দেরি হয়ে যাবে, এ কথা বলা সত্ত্বেও ওই অফিসার তাঁর কথায় কান দেননি। এর পরে ফের প্রশ্ন উড়ে আসে মনিকার কাছে, “মণিপুরের সীমানা লাগোয়া রাজ্যগুলোর নাম বলুন।” একের পর এক প্রশ্নে বিব্রত বোধ করতে থাকেন মনিকা। তিনি জানান, বিমান ধরতে দেরি হয়ে যাবে বলে সেই মুহূর্তে তিনি কোথাও কোনও অভিযোগ করতে পারেননি। ১৫ দিন পর সোল থেকে ফিরেও আসেন তিনি। কী ভাবে তাঁকে জাতিবিদ্বেষের শিকার হতে হয়েছে দিল্লি বিমানবন্দরে, সেটা ফেসবুকে লেখেন।
মনিকা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, কোন রাজ্য থেকে তিনি এসেছেন, এটা জিজ্ঞাসা করলে বিষয়টি মিটে যেত। কিন্তু, যে ভাবে তাঁকে বাচ্চাদের মতো প্রশ্ন করা হয়েছে এবং কটাক্ষ করে তা সত্যিই এক জন ভারতীয় নাগরিক হিসাবে অপমানজনক। তাঁর এই অবস্থার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করে নানা মহল থেকে। মণিপুরের বিজেপি নেতা নিমাই লুয়াং এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে টুইট করে জানান, ‘এক জন সরকারি আধিকারিকের কাছে আমাদের মেয়ে এই ধরনের জাতিবিদ্বেষের শিকার হবে এটা মেনে নেওয়া যায় না।’ সুষমা পাল্টা টুইটে লেখেন, ‘মনিকা খানগেমবাম, বিষয়টি জানতে পেরে সত্যিই আমি দুঃখিত। এ বিষয়ে আমি রাজনাথ সিংহের সঙ্গে কথা বলব।’
উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে আসা ছেলেমেয়েরা প্রায়ই জাতিবিদ্বেষের শিকার হয়। দিল্লিতে এর আগে বেশ কয়েক বার এমন ঘটনা ঘটেছে। ২০১৪-তে অরুণাচল থেকে দিল্লিতে পড়তে আসা নিদো টানিয়ামকে লাজপতনগরে খুন করা হয়েছিল। অভিযোগ উঠেছিল দিল্লিরই কয়েক জন যুবকের বিরুদ্ধে। নিদোর মৃত্যুতে গোটা দেশ সরব হয়েছিল জাতিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে। নিদোর মৃত্যু যে দিল্লির ছবিটা বদলায়নি মনিকার ঘটনাই তা ফের প্রমাণ করল।
আরও খবর...
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy