Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বিক্ষোভেও নাগরিকত্ব বিল নিয়ে অনড় মোদী

দেশভাগের পরে যাঁরা পড়শি দেশে তাঁদের ধর্মবিশ্বাসের জন্য অত্যাচারিত হয়ে, সব কিছু সে দেশে ফেলে চলে এসেছেন তাঁদের আশ্রয় দেওয়া ভারতের কর্তব্য বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি ও আগরতলা শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:০০
Share: Save:

দেশভাগের পরে যাঁরা পড়শি দেশে তাঁদের ধর্মবিশ্বাসের জন্য অত্যাচারিত হয়ে, সব কিছু সে দেশে ফেলে চলে এসেছেন তাঁদের আশ্রয় দেওয়া ভারতের কর্তব্য বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে উত্তপ্ত অসম-সহ উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন রাজ্য। তার মধ্যেই উত্তর-পূর্ব সফরে এসে তিনি স্পষ্ট করে জানালেন, সংশোধনী বিলে পিছু হঠছে না কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।

একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী অসম-সহ উত্তর-পূর্ববাসীকে আশ্বস্ত করেছেন, উত্তর-পূর্বের মানুষের নিজস্ব সংস্কৃতি, ভাষা স্বাতন্ত্র্য ও সার্বিক আশা-আকাঙ্খা অক্ষুণ্ণ রাখার ব্যাপারে সরকার বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, ‘‘নাগরিকত্ব সংশোধনীর কোনও আঁচ অসম বা উত্তর-পূর্বে পড়বে না।’’ এটা সার্বিক ভাবে দেশের দায়।

গত রাতে গুয়াহাটি পৌঁছে একাধিক জায়গায় ‘কালো পতাকা’-র মুখোমুখি হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিল-বিরোধী যৌথ মঞ্চ তাঁর সফর বয়কট করেছে। উজানি অসমে আজ

ডাকা হয়েছে বন্‌ধ। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় প্রধানমন্ত্রী কুশপুতুল পুড়েছে। চলেছে রাস্তা অবরোধ। দিসপুরে সচিবালয়ের সামনে নগ্ন প্রতিবাদ দেখিয়েছেন আন্দোলনকারীদের একাংশ। তবে সেই বিক্ষোভকে উপেক্ষা করেই অসমের চাংসারির সভায় উপস্থিত জনসমাবেশের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘নাগরিকত্ব বিলের নামে যে রাজনৈতিক প্রচার চালানো হচ্ছে তার জবাব আজকের জনসমাগম।’’

এ দিকে, ত্রিপুরাতেও আজ প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে কংগ্রেস কালো পতাকা নিয়ে মিছিল বের করে। পুলিশ অবশ্য তাদের পথ রোধ করে। বিবেকান্দ ময়দানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের সময় আগরতলার শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে কে বা কারা ‘কালো বেলুন’ ওড়ায়। তা নিয়ে পুলিশ ধোঁয়াশায় থাকলেও গতকালই কংগ্রেসের তরফে এমন কিছু করার পরিকল্পনা জানানো হয়েছিল। এবং উল্লেখযোগ্য বিষয়টি হল, মোদীর চোখের সামনেই রাজবাড়ি থেকে উড়ল শ’খানেক কালো বেলুন। উজ্জ্বয়ন্ত প্রাসাদের সাদা গম্বুজের উপর দিয়ে উড়ে গেল সেই কালো গ্যাস বেলুন। প্রধানমন্ত্রী সেই সময় ভাষণ দিচ্ছিলেন। বর্তমান মহারাজা তথা কংগ্রেস নেতা প্রদ্যোত কিশোর কিছু দিন ধরেই বিভিন্ন জায়গায় নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে সভা করছেন। বিল প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছেন।

অসম, অরুণাচল বা ত্রিপুরায় নাগরিকত্ব বিল নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ ও সভা বয়কটের জবাবে তাঁর ঘোষণা, “ভারতে অনুপ্রবেশকারীদের স্থান নেই। কিন্তু ভারত দখলের উদ্দেশে আসা অনুপ্রবেশকারী ও অত্যাচারিত আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে তফাৎ আমাদের বুঝতে হবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা বাধ্য হয়ে এদেশে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁদের দুঃখও বুঝতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী জানান, আগের সরকারের ঢিলেমির পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তাঁরাই অসমে এনআরসি নবীকরণ করছেন। অসম চুক্তি রূপায়ণেও বিজেপি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে তিনি জানান।

তাঁর বক্তব্য, ‘‘অসমবাসীর ৩৬ বছরের দাবি কেউ পূরণ করলে এই মোদী সরকারই করবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE