Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Rafale

দুর্নীতি বিরোধী শর্তই বাদ দেওয়া হয়েছিল! রাফাল নিয়ে ফের বিপাকে মোদী সরকার

ভারত-সহ বিশ্বের প্রতিটি দেশে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত চুক্তির ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত থাকে, যার মধ্যে অন্যতম হল দুর্নীতি বিরোধী জরিমানা শর্ত।

রাফাল নিয়ে অস্বস্তি বাড়ল।—ফাইল চিত্র।

রাফাল নিয়ে অস্বস্তি বাড়ল।—ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৫:০৪
Share: Save:

লোকসভা নির্বাচনের আগে রাফাল নিয়ে নতুন করে অস্বস্তিতে মোদী সরকার। রাফাল চুক্তিতে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের হস্তক্ষেপের কথা সামনে এসেছে আগেই। এ বার চুক্তি থেকে দুর্নীতি বিরোধী জরিমানার শর্ত বাদ দেওয়ার অভিযোগ উঠল কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে কংগ্রেস।

রাফাল চুক্তি সংক্রান্ত নথি তুলে ধরে সোমবার ‘দ্য হিন্দু’ পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, প্রতিরক্ষা সামগ্রী কেনাবেচা প্রক্রিয়া (ডিপিপি) সংক্রান্ত নিয়মাবলীর ধার ধারেনি মোদী সরকার। মোটা অঙ্কের চুক্তির ক্ষেত্রে নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশ্ন জড়িয়ে থাকে। সে সবকে গুরুত্বই দেওয়া হয়নি।

ভারত-সহ বিশ্বের প্রতিটি দেশে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত চুক্তির ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত থাকে, যার মধ্যে অন্যতম হল দুর্নীতি বিরোধী জরিমানা শর্ত। যাতে দুই দেশের মধ্যে হওয়া চুক্তিতে কোনও দালাল, সংস্থা বা প্রভাবশালীর ভূমিকা না থাকে। শর্ত ভঙ্গ হলে জরিমানার সংস্থানও থাকে।

আরও পড়ুন: লখনউয়ে জনজোয়ার, প্রিয়ঙ্কার রোড শো থেকেও মোদীকে রাফাল খোঁচা রাহুলের​

আবার অনেক সময় টাকা-পয়সা মিটিয়ে দেওয়া হলেও, নির্ধারিত সময়ে জিনিসপত্র সরবরাহ করতে পারে না বিক্রেতা। জিনিসপত্র হাতে পেয়েও ক্রেতা টাকা মেটাননি, এমন ঘটনাও ঘটে থাকে। তাই ক্রেতা ও বিক্রেতার নিরাপত্তা ও স্বার্থের কথা মাথায় রেখে বড় ধরনের চুক্তির ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন হয়। আইনি ভাষায় যাকে বলা হয় এস্ক্রো অ্যাকাউন্ট। চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর ওই অ্যাকাউন্টে পুরো টাকা জমা করে দেন ক্রেতা। দুই পক্ষের সম্মতিতে একজন এজেন্ট নিয়োগ করা হয়। জিনিসপত্র সরবরাহ হয়ে গেলে এবং তা নিয়ে ক্রেতার কোনও অভিযোগ না থাকলে, এস্ক্রো অ্যাকাউন্ট থেকে পুরো টাকাটা বিক্রেতার অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করে দেন ওই এজেন্ট।

রাফাল এবং বফর্স কান্ড নিয়ে কিছু প্রশ্ন

কিন্তু ২০১৬ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে ফরাসি সংস্থা দাসোঁ এভিয়েশন এবং এমবিডিএ ফ্রান্সের সঙ্গে ৫৮ হাজার ৮৯১ কোটি টাকার বিনিময়ে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি স্বাক্ষর করে কেন্দ্রীয় সরকার। তার ঠিক একমাস আগে, অগস্টে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক বসে। সেখানে দুর্নীতি বিরোধী জরিমানা শর্ত এবং এসক্রো অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেনের প্রক্রিয়া চুক্তিপত্র থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেই সঙ্গে বিমান সরবরাহ প্রক্রিয়া, অফসেট বরাত এবং সময়সূচি সংক্রান্ত মোট ৮টি বদলের প্রস্তাব দেওয়া হয়। সেপ্টেম্বর মাসে তত্কালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পর্রীকরের নেতৃত্বে ডিফেন্স অ্যাকুইজিশন কাউন্সিল (ডিএসি)-এর বৈঠক বসে। সেখানে যাবতীয় বদলে অনুমোদন দেওয়া হয়। তাতে সই করেন তত্কালীন ভাইস অ্যাডমিরাল অজিত কুমার। সেই সময় ডিফেন্স অ্যাকুইজিশন কাউন্সিলের সদস্য তথা সচিব ছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: বিপুল আত্মপ্রকাশ, রোড শোয়ের দিনই টুইটারে যোগ দিলেন প্রিয়ঙ্কা​

দ্য হিন্দু-র দাবি, ফ্রান্সের সঙ্গে রাফাল নিয়ে দরদামে নিযুক্ত থাকা উপদেষ্টা এম পি সিংহ, বায়ু সেনার ফাইনান্সিয়াল ম্যানেজার এ আর সুলে এবং বায়ুসেনার যুগ্ম সচিব ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয়সংক্রান্ত ম্যানেজার রাজীব বর্মা এই বদলে আপত্তি তুলেছিলেন। কিন্তু তাঁদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। বিমান সরবরাহে ব্যর্থ হলে ভারত সরকারকে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ফ্রান্সের। সেই মতো ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি দিতে হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাও মানা হয়নি। শুধু মাত্র ফরাসি প্রেসিডেন্টের তরফে চিঠি মারফত আশ্বস্ত করা হয়েছিল ৮ সেপ্টেম্বর। যার কোনও আইনি গুরুত্ব নেই।

(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE