Advertisement
০৭ মে ২০২৪

বাবার অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে চান পেমা

শাসক-বিরোধী সব দলের নেতা-বিধায়কদের পাশে নিয়ে ‘টিম অরুণাচল’ গড়ে রাজ্যের উন্নয়নের কাজ করতে চান অরুণাচলপ্রদেশের নবনিযুক্ত মুখ্যমন্ত্রী পেমা খাণ্ডু। আজ শপথগ্রহণের পর তিনি জানিয়েছেন, বাবা দোর্জি খাণ্ডুর অসমাপ্ত কাজগুলি শেষ করাই তাঁর প্রাথমিক লক্ষ্য হবে।

শপথগ্রহণের পর সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করছেন অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু। রবিবার। — নিজস্ব চিত্র।

শপথগ্রহণের পর সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করছেন অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু। রবিবার। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৬ ০৩:০৮
Share: Save:

শাসক-বিরোধী সব দলের নেতা-বিধায়কদের পাশে নিয়ে ‘টিম অরুণাচল’ গড়ে রাজ্যের উন্নয়নের কাজ করতে চান অরুণাচলপ্রদেশের নবনিযুক্ত মুখ্যমন্ত্রী পেমা খাণ্ডু। আজ শপথগ্রহণের পর তিনি জানিয়েছেন, বাবা দোর্জি খাণ্ডুর অসমাপ্ত কাজগুলি শেষ করাই তাঁর প্রাথমিক লক্ষ্য হবে।

এ দিকে, ঘুরপথে অরুণাচলের ক্ষমতা দখল করতে গিয়ে হাত পুড়েছে বিজেপির। কিন্তু ভেঙেও মচকাচ্ছে না রাজ্য বিজেপি। উল্টে তাঁদের দাবি, ৬ মাস ধরে ‘নাটক’ করার জন্য রাজ্যবাসীর কাছে কংগ্রেস বিধায়কদের ক্ষমা চাওয়া উচিত।

গত ৭২ ঘণ্টায় বিস্তর নাটকীয়তা পার করে শেষমেশ মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি পেমার হাতে আসে। কংগ্রেসের ঘর ভেঙে পিপিএ সরকার গড়া ৩০ জন বিধায়ক বিধানসভা বাঁচাতে ফের সনিয়া গাঁধী ও রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বই মেনে নেন। আপোস রফায় পদত্যাগ করেন টুকি। ক্ষমতা পান পুল গোষ্ঠীতে থাকা পেমা।

এ দিন শপথ নেওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনে পেমা দাবি করেন, তাঁরা কখনওই কংগ্রেস ছাড়তে চাননি। দাবি ছিল নেতৃত্ব বদলের। কিছু মতানৈক্য হয়। কিন্তু সব জটিলতা শেষ। দলে কোনও বিভাজন নেই। সকলে হাত মিলিয়ে রাজ্যের উন্নতিতে কাজ করবেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, বিধানসভায় শক্তিপরীক্ষার জন্য তিনি প্রস্তুত। তবে মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের জন্য রাজ্যপালের কাছে কয়েক দিন সময় চেয়েছেন।

কালিখো পুল ও পিপিএ সরকারের উপরে চাপ সৃষ্টি করে অরুণাচলে পুরোপুরি বিজেপি সরকার গড়ার চেষ্টা চালাচ্ছিল রাজ্য বিজেপি। এমনকী ১৩ জুলাই নেডার সম্মেলনে রাজ্য বিজেপি তেমন ঘোষণাও করে দেয়। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই পট পরিবর্তন ঘটে রাজ্যে। প্রথমে সুপ্রিম কোর্ট নাবাম টুকি সরকারকে ক্ষমতায় ফেরায়। তার পর এআইসিসি বিদ্রোহীদের ফের দলে টানতে সফল হয়।

রাজ্যপালের দফতরের মুখপাত্র আতোম পোতোম জানান, ৪৭ জন বিধায়কের সমর্থন-সহ পেমা গত কাল রাজ্যপালের কাছে সরকার গঠনের আবেদন জানিয়েছিলেন। ভারপ্রাপ্ত রাজ্যপাল তথাগত রায় তাঁর দাবি খতিয়ে দেখার পর আজই পেমাকে শপথ নিতে ডাকেন। এ দিন তথাগতবাবু পেমাকে শপথবাক্য পাঠ করান। উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন চাওনা মেইন।

যে ভাবে পিপিএ সরকার গড়া কংগ্রেস বিধায়করা পাঁচ মাসের মধ্যে ফের কংগ্রেস সরকার গড়লেন, তাকে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিজেপি। রাজ্য বিজেপি সভাপতি তাপির গাও বলেন, “কংগ্রেস বিধায়কদের ক্ষমতা দখলের দ্বন্দ্বের জন্যই রাজ্যে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হয়েছিল। তাঁরা মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ নন, প্রলোভনে পরিচালিত।” কংগ্রেস ভাঙায় হাত থাকার অভিযোগ উড়িয়ে গাও বলেন, “বিজেপি কালিখো পুলের নেতৃত্বে আঞ্চলিক পিপিএ দলের সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন করেছিল। কিন্তু তাঁর পক্ষে থাকা ৩০ জন কংগ্রেস বিধায়কের দলত্যাগ ও ফের ফিরে যাওয়ার নাটকে বিজেপির কোনও ভূমিকা ছিল না।” প্রদেশ বিজেপির সতর্কবার্তা— এআইসিসি ও কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের অবজ্ঞায় অরুণাচলে কংগ্রেসের সমস্যার সূত্রপাত। সেই অবজ্ঞা ও সমস্যা ভবিষ্যতেও থাকবে।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পাদি রিচো বিজেপির বক্তব্যের পাল্টা জবাবে বলেন, “তামাম দেশবাসীর কাছে বিজেপির ক্ষমা চাওয়া উচিত। তারাই কেন্দ্রের সাহায্য নিয়ে নির্বাচিত সরকারে ভাঙন ধরিয়ে অরুণাচল দখল করতে চেয়েছিল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arunachal Chief Minister Pema Khandu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE