Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কোথায়-কাদের সভা, উত্তর খুঁজছে শিলচর

সভাই বা কারা ডেকেছিলেন? এসএমএস, হোয়াটস অ্যাপে বলা হয়েছিল, নাগরিক সুরক্ষা মঞ্চ সভার আহ্বায়ক। কোথা থেকে এল এই মঞ্চ, জবাব নেই কারও কাছেই। বার্তা-প্রেরক এক এসইউসিআই নেতাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, মোবাইলে পাওয়া বার্তাটি পরিচিতদের পাঠিয়েছিলেন তিনি। কে আহ্বায়ক, সুরক্ষা মঞ্চের কর্মকর্তা কারা—কিছুই তিনি জানেন না।

শিলচর বিমানবন্দরে আটকে তৃণমূল প্রতিনিধি দল। —ফাইল চিত্র।

শিলচর বিমানবন্দরে আটকে তৃণমূল প্রতিনিধি দল। —ফাইল চিত্র।

উত্তম সাহা
শিলচর শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৮ ০৪:৩৩
Share: Save:

শিলচরে কোথায় সভা করতেন তৃণমূল নেতারা?

‘উস্কানিমূলক’ বক্তব্যের আশঙ্কায় বিমানবন্দরে তাঁদের আটকে দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পরেও প্রশাসন ও পুলিশের কাছে তার কোনও উত্তর নেই। বুধবার, অগস্টের প্রথম দিনের সকাল থেকেই মোবাইলে-মোবাইলে ছড়িয়ে পড়েছিল, রাজীব ভবনে শিলচরবাসীর সঙ্গে মত বিনিময় করবেন তৃণমূল নেতারা। ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। সে দিনই রাজীব ভবন কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, তাদের হল কেউ ভাড়াই নেয়নি। বৃহস্পতিবার নতুন বার্তা মেলে, সভা হবে গাঁধী ভবনে। বিজেপি পরিচালিত শিলচর পুরসভার এই ভবনেও সেদিন কোনও ‘বুকিং’ ছিল না।

সভাই বা কারা ডেকেছিলেন? এসএমএস, হোয়াটস অ্যাপে বলা হয়েছিল, নাগরিক সুরক্ষা মঞ্চ সভার আহ্বায়ক। কোথা থেকে এল এই মঞ্চ, জবাব নেই কারও কাছেই। বার্তা-প্রেরক এক এসইউসিআই নেতাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, মোবাইলে পাওয়া বার্তাটি পরিচিতদের পাঠিয়েছিলেন তিনি। কে আহ্বায়ক, সুরক্ষা মঞ্চের কর্মকর্তা কারা—কিছুই তিনি জানেন না। আরও যাঁদের মোবাইল থেকে আমন্ত্রণ ছড়িয়ে পড়ে, সকলেরই এক বক্তব্য। জানেন না জেলাশাসক এস লক্ষ্মণনও। তিনি বলেন, শহরে যে সব জায়গায় সাধারণত সভা-সমিতি হয়,সেখানে কোনও বুকিং ছিল না।

কাছাড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের অস্তিত্বই নেই। তাই ‘সুরক্ষা মঞ্চ’-এর ব্যানারে সভার আয়োজন হচ্ছিল। তার পরও প্রশাসন তাঁদের এত গুরুত্ব দিল কেন? পুলিশ সুপার রাকেশ রৌশন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ না করেই বলেন, ‘‘গৃহযুদ্ধ, রক্তগঙ্গা ইত্যাদি নানা শব্দ শোনা যাচ্ছিল। এর পর ঝুঁকি নেওয়া যায় না।’’ একই কথা রাজ্যের বনমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যেরও। তিনি অবশ্য মমতাদেবীর নাম করেই বলেন, ‘‘গৃহযুদ্ধের সেনাপতিকে তো আর ছেড়ে রাখা যায় না।’’ বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার দিলীপ পাল তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে শিলচরে আনার পিছনে কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেবের হাত রয়েছে বলে ইঙ্গিত দেন। সুস্মিতা দেব অবশ্য এই অভিযোগকে কোনও গুরুত্বই দিতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, ‘‘কাউকে আটকে দেওয়াটা ঠিক নয়।’’ তবে করিমগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ সেদিন দলবল নিয়েই শিলচরে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিনিধি দলটির সঙ্গে দেখা করে এই অঞ্চলের সমস্যার কথা তুলে ধরতে চেয়েছিলাম।’’ তবে তিনি সভা আয়োজনে তাঁর কোনও রকম ভূমিকার কথা অস্বীকার করেন।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সভা হলেও যা হত না, তাঁদের আটকে তার থেকে অনেক বেশি প্রচারের সুযোগ পেয়ে গেল তৃণমূল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

NRC Assam Silchar TMC Meeting Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE