উপমহাদেশে সন্ত্রাসের প্রশ্নে ফের পাকিস্তানকে কাঠগড়ায় তুললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।
মুম্বই হামলার মূল চক্রী জাকিউর রহমান লকভির মুক্তি ঘিরে উত্তেজনা রয়েছে দু’দেশের মধ্যে। পাক প্রশাসনের একাংশ দীর্ঘ দিন ধরে তাঁর মুক্তির পক্ষে। গত সপ্তাহে লকভিকে জেল থেকে ছাড়ার রায় দেয় ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। তবে মার্কিন প্রশাসনের চাপে তা ভেস্তে যায়। এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ এশিয়ার সন্ত্রাস কমাতে আজ পড়শি দেশকে ফের কড়া বার্তা দেন রাজনাথ। জয়পুরে সন্ত্রাস মোকাবিলা নিয়ে একটি আলোচনাচক্রে রাজনাথ বলেন, “যদি পড়শি দেশ জঙ্গিদের সমর্থন করা বন্ধ করে, তবে দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাস অনেক কমবে। পাকিস্তান সন্ত্রাসকে যে ভাবে ছায়া যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে, সেই কৌশল তারা পুনর্বিবেচনা করলে শান্তি আসবে।’’
লকভির মুক্তি ঘিরে ভারতের কড়া বার্তায় পাকিস্তান যে ক্ষুব্ধ তা গতকালই কলকাতায় জানান সে দেশের হাইকমিশনার আব্দুল বাসিত। তাঁর দাবি, বিচারব্যবস্থা যদি লকভির জামিন মঞ্জুর করে তবে সরকারের কিছু বলার থাকে না। বাসিতের ওই যুক্তি মানতে নারাজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। অভিযোগ, লকভির মামলা দুর্বল করতে সক্রিয় পাক প্রশাসনের একাংশ। তাই ভারতের দেওয়া তথ্য-প্রমাণ ব্যবহার করা হচ্ছে না।
ভারতের আশঙ্কা যে ভাবে মামলা দুর্বল করা হচ্ছে তাতে অচিরেই মুক্তি পেয়ে যেতে পারেন লকভি। আর তাতে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বাড়বে ভারতে। আজ রাজনাথ বলেন, “ভারতের অধিকাংশ সন্ত্রাসবাদী হামলার পিছনে পড়শি দেশের হাত আছে। নিজের দেশে সন্ত্রাসবাদী হামলার শিকার হয়েও পাক প্রশাসন বুঝতে পারছে না ভাল জঙ্গি আর খারাপ জঙ্গি বলে কিছু হয় না।” রাজনাথের এই মন্তব্যের ব্যাখ্যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় শত্রু এখন তেহরিক-ই তালিবান (টিটিপি)। জঙ্গি হলেও নীতিগত ভাবে এদের সঙ্গে মতপার্থক্য রয়েছে পাকিস্তানে বেড়ে ওঠা লস্কর-ই-তইবার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মতে, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার রণনীতি মেনে লকভির প্রতি নরম হচ্ছে ইসলামাবাদ। টিটিপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে লকভির নেতৃত্বে লস্কর জঙ্গি সংগঠনকে ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে পাক প্রশাসনের।
পাকিস্তানকে আক্রমণের সঙ্গে সন্ত্রাসের সঙ্গে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে এক বন্ধনীতে রাখার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাঁর মতে, “ভারতের সংখ্যালঘু সমাজ দেশভক্ত। কট্টর মৌলবাদী ভাবধারায় প্রভাবিত হওয়ার প্রবণতাও কম। সেই কারণেই ভারতে প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ হয়েছে আইএস জঙ্গি গোষ্ঠী।” সম্প্রতি বিভিন্ন দেশ থেকে ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস-এর হয়ে লড়তে যাওয়ার যে ধুম পড়েছিল তাতে অশনি সঙ্কেত দেখেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। যে ভাবে আইএস ও অন্য জঙ্গি গোষ্ঠী প্রভাব বাড়াতে প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে তা মোকাবিলা করতে ভারতকে পদক্ষেপ করতে হবে বলে জানান রাজনাথ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy