জমি বিল নিয়ে আক্রমণাত্মক সনিয়া গাঁধীর জবাব দিতে এ বার সঙ্ঘের দ্বারস্থ হল বিজেপি।
আজ বিষয়টি নিয়ে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর বাড়িতে বিজেপি ও আরএসএসের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে সাড়ে তিন ঘণ্টার বৈঠক হয়। বিজেপির পক্ষ থেকে সভাপতি অমিত শাহ, রাজনাথ সিংহ, অরুণ জেটলি, সুষমা স্বরাজ, রাম মাধবের পাশাপাশি আরএসএসের ভাইয়াজি জোশী, সুরেশ সোনিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে স্থির হয়েছে, আরএসএসের কর্মীরা জমি বিলের সদর্থক দিকগুলি গ্রামে-গ্রামে গিয়ে কৃষকদের বোঝাবেন। যাতে কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের প্রচারের মোকাবিলা করা সম্ভব হয়। প্রয়োজনে বিলে আরও সংশোধনের জন্যও সরকার প্রস্তুত। রাজনীতিকদের মতে, যে ভাবে সনিয়া জমি বিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘কৃষক-বিরোধী’ অ্যাখ্যা দিয়ে রাজ্যওয়াড়ি প্রচারে নেমেছেন, তাতে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে সরকারের ভাবমূর্তি। তার মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই গডকড়ী খোলা বিতর্কের চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন সনিয়াকে। মোদীও সব সাংসদকে এই বিলের ইতিবাচক দিকগুলি তুলে ধরার নির্দেশ দিয়েছেন। গত কাল প্রধানমন্ত্রী নিজেই আকাশবাণীতে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, তিনি কৃষক-বিরোধী নন। আজও পঞ্জাবের জনসভায় কৃষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “রাজনৈতিক কারণে জমি বিল নিয়ে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে। যদি উন্নয়নই না হয়, তা হলে পরবর্তী প্রজন্মের কী হবে? তাঁরা কি বড় শহরের বস্তিতে থাকবেন? উন্নয়ন শুধু কৃষকদের নয়, তাঁদের সন্তান ও গ্রামেরও সুফল আনবে।” মোদীর এই আবেদনের পরেও যে অবস্থার তেমন পরিবর্তন হচ্ছে না, সেটি বুঝেই এখন সঙ্ঘের দ্বারস্থ হতে হল বিজেপিকে।
আজ বিজেপির পক্ষ থেকে সঙ্ঘ নেতৃত্বকে জানানো হয়, কৃষক সংগঠনগুলির কথা মাথায় রেখেই বিলে সংশোধন করা হয়েছে। সরকার আরও সংশোধন করতে রাজি। গত কাল আকাশবাণীর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই স্পষ্ট হয়েছে জমি বিল নিয়ে চাপের মুখে রয়েছেন মোদী। কিন্তু এই বিলে খুব বেশি হেরফের করারও পক্ষপাতী নন তিনি। কারণ, তা হলে বিলের উদ্দেশ্যই ব্যাহত হবে। কংগ্রেস নেতৃত্ব অবশ্য মনে করছেন, বিরোধীদের চাপে এমনিতেই ন’টি সংশোধন আনতে বাধ্য হয়েছে সরকার। এর পর কৃষকদের অনুমতি নেওয়ার বিষয়টি আরও শিথিল করার জন্য সরকারের উপর চাপ বাড়ানো উচিত। সরকার এই বিষয়ে কিছুটা সংশোধনে প্রস্তুত থাকলেও তারা ভালই জানে, বিরোধীরা একটি মোক্ষম অস্ত্র হাতে পেয়ে গিয়েছে। যেটি রাজনৈতিক ভাবে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তারা কাজে লাগাতে চায়।
তাই এপ্রিলে সংসদের অধিবেশন ফের শুরুর আগে যে ভাবে সনিয়া রাস্তায় নেমেছেন, বিজেপিও তার পাল্টা রাজনৈতিক প্রচারের কৌশল নিচ্ছে। সঙ্ঘ নেতৃত্ব অবশ্য জমি বিল নিয়ে গডকড়ীর আক্রমণাত্মক ভঙ্গির তারিফই করেছেন। এই লক্ষ্যে এ বার আরএসএস কর্মীরাও গ্রামে-গ্রামে প্রচার করবেন।
এই বিষয়গুলি ছাড়াও আজকের বৈঠকে দীনদয়াল উপাধ্যায়ের জন্মশতবর্ষ পালন ও গঙ্গা সাফাই নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান রাম মাধব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy