Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কেরলের রেশ বাংলায় নয়, সক্রিয় ইয়েচুরিরা

কেরল-কাণ্ডকে অন্য কোনও জায়গার রাজনীতির সঙ্গে যোগ না করে ফেলার জন্য তাই সক্রিয় হতে হল সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে।

কেরল-কাণ্ডের পর সক্রিয় হতে হল সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে। —ফাইল চিত্র।

কেরল-কাণ্ডের পর সক্রিয় হতে হল সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে। —ফাইল চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৫৩
Share: Save:

দু’দলের দুই শীর্ষ নেতাই মুখোমুখি বসে সমঝোতার বল গড়ানো শুরু করেছিলেন।হঠাৎই বাম-কংগ্রেসের উপর মহলের সেই সমীকরণে ছায়া ফেলছে কেরলের একটা ঘটনা! কেরল-কাণ্ডকে অন্য কোনও জায়গার রাজনীতির সঙ্গে যোগ না করে ফেলার জন্য সক্রিয় হতে হল সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে।

কেরলের কাসারগোড় জেলায় গত রবিবার কুপিয়ে খুন করা হয় যুব কংগ্রেসের দুই কর্মী কৃপেশ ও শরৎকুমার জোশীকে। ওই ঘটনায় কেরল কংগ্রেসের অভিযোগের তির সিপিএমের দিকে। দক্ষিণী ওই রাজ্যে সিপিএম ‘হিংসার রাজনীতি’ করছে, এই অভিযোগে খাস দিল্লিতে ইয়েচুরিদের সদর দফতর এ কে জি ভবনের সামনে ব্যারিকেড টপকে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন যুব কংগ্রেসের কর্মীরা। কেরলের বিরোধী দলনেতা রমেশ চেন্নিথালা তিরুঅনন্তপুরমে রাজ্যপাল পি সদাশিবমের কাছে নালিশ জানিয়েছেন পিনারাই বিজয়নের সরকারের বিরুদ্ধে। এ সব ঘটনার প্রেক্ষিতে শেষমেশ ইয়েচুরিই কথা বলেছেন কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের সঙ্গে। তাঁর বার্তা, কার বিরুদ্ধে এখন ‘আসল লড়াই’, কংগ্রেস সেই অগ্রাধিকার ঠিক করুক! কংগ্রেসের ওই কেন্দ্রীয় নেতা তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন, কেরলের ঘটনার প্রভাব অন্যত্র পড়বে না। বাংলাতেও সমঝোতার প্রক্রিয়া এর জন্য বেলাইন হবে না।

কাসারগোড়ে জোড়া খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত যে কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, তার মধ্যে এক জন সিপিএমের লোকাল কমিটির সদস্য। গ্রেফতারের সঙ্গে সঙ্গেই অবশ্য সিপিএম তাঁকে বহিষ্কার করেছে। রাজ্যের কংগ্রেস নেতারা খুনের পিছনে সিপিএমের ভূমিকা দেখতে পেলেও কেরলের শাসক দলের পাল্টা দাবি, ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। নিহত দুই যুব কংগ্রেস কর্মীর বিরুদ্ধেই বরং আগে সিপিএমের স্থানীয় লোকজনের উপরে চড়াও হওয়ার অভিযোগ ছিল। মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন জানিয়েছেন, পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দ্রুত অপরাধীদের খুঁজে বার করতে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক তথা পলিটব্যুরোর সদস্য কোডিয়ারি বালকৃষ্ণনের মন্তব্য, ‘‘দেশের অন্য অনেক জায়গার মতো কেরলেও হিংসার রাজনীতি করছে আরএসএস ও বিজেপি। কিন্তু কংগ্রেস আসল প্রতিপক্ষকে চিহ্নিত না করে বিভ্রান্তিকর অভিযোগ করছে।’’

হায়দরাবাদে দলীয় কর্মসূচিতে যাওয়ার আগে ইয়েচুরি বুধবার এআইসিসি-র এক নেতার কাছে প্রশ্ন তুলেছেন, কেরলের ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলছে। তার মাঝেই দিল্লিতে তার রেশ টেনে এনে ধর্মনিরপেক্ষ ঐক্যের বাতাবরণে মেঘসঞ্চার হতে দেওয়া হবে কেন? সিপিএম সূত্রের দাবি, কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও তাঁদের সঙ্গে সহমত। কলকাতায় প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বও জানাচ্ছেন, কেরল নিয়ে না ভেবে তাঁরা বামেদের সঙ্গে বোঝাপড়ার আলোচনা এগোতে চাইছেন।

কলকাতায় বাম শরিক সিপিআইয়ের সঙ্গে এক প্রস্ত আলোচনা হয়েছে কংগ্রেসের।লোকসভা ভোটে প্রার্থী দেয়, বামফ্রন্টের এমন চার শরিক দল এ বার আলিমুদ্দিনে আলোচনায় বসছে। তার পরে বৈঠকে বসার কথা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের। প্রদেশ কংগ্রেস ২৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিটির বৈঠক ডেকেছে। পর দিন বৈঠক সিপিএমের রাজ্য কমিটির।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Violence Political Murder Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE