Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মন্ত্রীর বাড়ি আজ গেছো বিদ্যুৎ

এ-ও এক গাছ! তবে কি না খাবার নয়, তৈরি করে বিদ্যুৎ। ফলে এর পাতায় পাতায় সবুজকণা নয়, সূর্যের আলো শুষে নেওয়ার জন্য রয়েছে সোলার প্যানেল। নিজের বাড়িতে এমনই এক গাছ লাগিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৬ ০৩:৩৩
Share: Save:

এ-ও এক গাছ! তবে কি না খাবার নয়, তৈরি করে বিদ্যুৎ। ফলে এর পাতায় পাতায় সবুজকণা নয়, সূর্যের আলো শুষে নেওয়ার জন্য রয়েছে সোলার প্যানেল। নিজের বাড়িতে এমনই এক গাছ লাগিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। এই সৌরতরু তৈরি করেছেন দুর্গাপুরের বাঙালি বিজ্ঞানী শিবনাথ মাইতি। একটি গাছ থেকে ৫ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ তৈরি হয়। যা থেকে গ্রামে অন্তত ৫টি বাড়িতে আলো জ্বলতে পারে। কাল থেকে রাজধানীর তিস জানুয়ারি মার্গে মন্ত্রীর বাংলোতেও এই সৌরতরু থেকে অনেকখানি বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে।

বাড়ির ছাদে তো সোলার প্যানেল লাগানোই হয়। গাছ কেন?

দুর্গাপুরের সেন্ট্রাল মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিএমইআরআই)-এর সিনিয়র সায়েন্টিস্ট শিবনাথবাবুর ব্যাখ্যা, এতে জমি লাগে অনেক কম। ছাদে-উঠোনে-ময়দানে বসালে সোলার প্যানেল অনেকটা জায়গা নিয়ে নেয়। বর্তমান পদ্ধতিতে এক মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ তৈরি করতে জমি লাগে ৫ একর। ১০ হাজার মেগাওয়াটের জন্য ৫০ হাজার একর। ‘সোলার পাওয়ার ট্রি’ বসাতে মাত্র ৪ বর্গফুট জমি প্রয়োজন। পশ্চিমবঙ্গ-কেরলের মতো রাজ্যে জমি পাওয়াই দুষ্কর। বড়-ছোট শহরে জমির দাম আকাশছোঁয়া। এই সব জায়গায় রাস্তার ধারে, ছাদে বা অন্য অল্প জমিতেই এই সৌরতরুর ঢালাও চাষ সম্ভব বলে মনে করছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের কর্তারা।

গেছো-বিদ্যুতের ভাবনার পিছনে রয়েছে আরও একটি বড় কারণ। গাছে এমন ভাবে পাতা তৈরি হয় যে প্রতিটিই সবচেয়ে বেশি সূর্যের আলো পায়। প্রকৃতির পাতা সাজানোর এই বিজ্ঞানকেই কাজে লাগিয়েছেন শিবনাথবাবুরা। তাঁদের তৈরি ধাতব গাছের ডালে এমন ভাবে সোলার প্যানেল সাজানো থাকে যে সারা

দিন ধরে সূর্যের আলোর পুরোপুরি ব্যবহার হয়।

সিএমইআরআই-এর বিজ্ঞানী রুদ্রপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় বলেন, সৌর প্যানেলে ধুলোময়লা জমায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যায়। তাই এই গাছে জল ছড়ানোরও ব্যবস্থা রয়েছে।

কয়েক মাস আগে সিএসআইআর (কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল রিসার্চ)-এর অধীন দুর্গাপুরে ওই সংস্থায় গিয়েছিলেন হর্ষ বর্ধন। সেখানে ওই সৌর বিদ্যুতের গাছ দেখে পছন্দ হয়ে যায়। বলেন, ‘‘আমার বাড়ির জন্য এমনই একটা চাই।’’ সেই মতোই আগামিকাল তাঁর বাড়িতে এ’টি চালু হচ্ছে। দিল্লিতে সিএসআইআর-এর সদর দফতর অনুসন্ধান ভবনেও একটি বিদ্যুৎ বৃক্ষ বসানো হয়েছে।

প্রশ্ন শুধু এর দাম নিয়ে। ৫ কিলোওয়াটের একটি গাছ তৈরিতে লাগছে ৫ লক্ষ টাকা। সন্দেহ নেই, বেশি সংখ্যায় তৈরি হলে দামটাও কমে আসবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bunglow Harsh Vardhan Solar panel
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE