Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Mahua Moitra-Jai Anant Dehadrai

মহুয়ার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা তুললেন দেহদ্রাই

মহুয়া বলেন, আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তিনি লোকসভায় সব চেয়ে সরব বলেই বিজেপি দেহদ্রাইদের ঘুঁটি করে তাঁর সদস্যপদ কেড়ে মুখ বন্ধ করিয়েছে। প্রথমে দূরত্ব রচনা করলেও পরে তৃণমূল নেতৃত্ব মহুয়ার পাশে দাঁড়ান।

মহুয়া মৈত্র এবং জয় অনন্ত দেহাদ্রাই। —ফাইল চিত্র।

মহুয়া মৈত্র এবং জয় অনন্ত দেহাদ্রাই। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৩৬
Share: Save:

কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী ও প্রাক্তন সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে করা মানহানির মামলা প্রত্যাহার করে নিলেন আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদ্রাই। এই আইনজীবীর আনা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই সাংসদ পদ হারিয়েছেন মহুয়া।

বৃহস্পতিবার দিল্লি হাই কোর্টে এই মামলার শুনানি ছিল। সেই সময়ে আবেদনকারী দেহদ্রাইয়ের কৌঁসুলি রাঘব অবস্তী জানান, প্রাক্তন সাংসদ যদি ঘোষণা করেন যে দেহদ্রাইয়ের বিরুদ্ধে তিনি আর কোনও ‘দৃশ্যত অসত্য অভিযোগ’ আনবেন না, তা হলে ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের এই মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া যেতে পারে। মামলার শুনানিতে হাজির হয়ে মহুয়া দেহদ্রাইকে ‘লুনাটিক’ বা পাগল বলে মন্তব্য করেছিলেন, বিচারপতি প্রতীক জালান যাঁর প্রতিবাদ করে বলেছিলেন, মহুয়ার মন্তব্য ‘দৃশ্যতই অসত্য’। এ দিন বিচারপতি জালান বলেন, বোঝাপড়ার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান হয়ে গেলে সেটা সদর্থকই হবে। ঘরের ঝগড়া প্রকাশ্যে আসবে না। এর পরে মহুয়ার আইনজীবী সমুদ্র ষড়ঙ্গীকে বিচারপতি বলেন, “আপনি চাইলে বাদী পক্ষের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করে নিতে পারেন। তার জন্য কিছুটা সময় দিচ্ছি।” এজলাসের এক পাশে অবস্তী এবং ষড়ঙ্গী বেশ কিছু ক্ষণ কথাবার্তা বলেন। তার পরে দেহদ্রাইয়ের পক্ষে আইনজীবী অবস্তী বিচারপতিকে বলেন, কোনও শর্ত ছাড়াই মামলাটি প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন।

এর পরে বিচারপতি জালান ঘোষণা করেন, “বাদী পক্ষের অনুমতি নিয়ে তাঁর কৌঁসুলি মামলা প্রত্যাহার করতে চেয়েছেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি খারিজ করে দেওয়া হল।”

ব্যবসায়ী দর্শন হিরানন্দানির কাছ থেকে ঘুষ ও উপহারের পরিবর্তে মহুয়া মৈত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অনুগত শিল্পপতি আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লোকসভায় প্রশ্ন তুলতেন বলে অভিযোগ করেছিলেন দেহদ্রাই। বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে সেই অভিযোগ লোকসভার স্পিকারের নজরে আনেন, যার পরিপ্রেক্ষিত‌ে মহুয়ার সাংসদ পদ কেড়ে নেয় লোকসভার শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। পাল্টা হিসাবে মহুয়া দেহদ্রাইকে ‘কর্মহীন আইনজীবী’ এবং ‘প্রত্যাখ্যাত প্রেমিক’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। এই মন্তব্যের জন্যই মহুয়ার বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেছিলেন দেহদ্রাই। একই সঙ্গে দ্য টেলিগ্রাফ-সহ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের নামও মামলায় জুড়েছিলেন দেহদ্রাই, যিনি মহুয়ার বক্তব্য প্রকাশ করে তাঁর মানহানি করেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছিল।

তবে মহুয়াও দেহদ্রাইয়ের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন। সেই মামলা এখনও চলছে। মহুয়া বরাবর দেহদ্রাইয়ের আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। দেহদ্রাই জানিয়েছিলেন, লোকসভা সদস্য হিসাবে নিজের লগইন ও পাসওয়ার্ডও মহুয়া হিরানন্দানির এক কর্মচারীকে দিয়ে রেখেছিলেন, যিনি মহুয়ার নামে লোকসভায় প্রশ্ন তৈরি করে পেশ করতেন। মহুয়া বলেন, লগইন-পাসওয়ার্ড কোনও গোপনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয় যে তা অন্যকে দেওয়া যায় না। সাংসদদের সহায়কেরাই এটি ব্যবহার করে। হিরানন্দানির ওই কর্মচারী তাঁর সহায়কের কাজই করতেন। কিন্তু তাঁর হয়ে অন্য কেউ প্রশ্ন তৈরি করে দিয়েছেন, দেহদ্রাইয়ের তোলা সেই অভিযোগ ডাহা মিথ্যা, যেমন মিথ্যা তাঁর বিরুদ্ধে আনা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ।

মহুয়া বলেন, আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তিনি লোকসভায় সব চেয়ে সরব বলেই বিজেপি দেহদ্রাইদের ঘুঁটি করে তাঁর সদস্যপদ কেড়ে মুখ বন্ধ করিয়েছে। প্রথমে দূরত্ব রচনা করলেও পরে তৃণমূল নেতৃত্ব মহুয়ার পাশে দাঁড়ান। কৃষ্ণনগরে প্রার্থীও করেছেন। এই পরিস্থিতিতে দেহদ্রাইয়ের সিদ্ধান্ত কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে মহুয়াকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE