ছবি: পিটিআই।
সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ স্লোগানের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার জন্য শীর্ষ আদালতের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করবেন বলে জানালেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। সোমবারের মধ্যেই এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে নতুন হলফনামা জমা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি।
এই ঘটনায় বিজেপি নেতৃত্ব উল্লসিত হলেও, রাফাল রায় পুনর্বিবেচনার মামলায় মোদী সরকারের স্বস্তি মেলেনি। সুপ্রিম কোর্ট এর আগে রাফাল চুক্তিতে তদন্তের দাবি খারিজ করতে দিলেও তা পুনর্বিবেচনায় রাজি হয়েছে। কেন্দ্র চাইছিল, এই গোটা শুনানি লোকসভা ভোটের পরে পিছিয়ে দিতে। যশবন্ত সিনহা, অরুণ শৌরি, প্রশান্ত ভূষণদের তরফে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জির জবাব দিতে কেন্দ্র এক মাস সময়ও চেয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র আগামী শনিবারের মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
রাফাল চুক্তিতে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ স্লোগান তুলেছিলেন রাহুল গাঁধী। প্রধানমন্ত্রীর দফতর রাফাল চুক্তিতে নাক গলিয়েছিল, এমন অভিযোগের সপক্ষে প্রকাশ্যে আসা নতুন নথি সুপ্রিম কোর্ট খতিয়ে দেখতে রাজি হওয়ায় রাহুল মন্তব্য করেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টও বলে দিল যে চৌকিদার চোর হ্যায়। এরপরেই তাঁর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আদালত অবমাননার মামলা করেন বিজেপি সাংসদ মীনাক্ষী লেখি। রাহুল এর জবাবে হলফনামায় বন্ধনীর মধ্যে দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন। জানান, সুপ্রিম কোর্টকে উদ্ধৃত করে চৌকিদার চোর হ্যায় বলে তিনি ভুল করেছেন। শীর্ষ আদালতকে রাজনীতির মধ্যে টেনে আনার কোনও অভিপ্রায় তাঁর ছিল না। কিন্তু প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ রাহুলের আইনজীবী মনুসিঙ্ঘভিকে আজ বলেন, ‘‘আপনি ২২ পৃষ্ঠা নিলেন দুঃখপ্রকাশ করার জন্য?’’ বন্ধনীর মধ্যে দুঃখপ্রকাশের কথা লেখার অর্থ কী, তা-ও জানতে চান প্রধান বিচারপতি। ক্ষমাপ্রার্থনা কোথায় করা হয়েছে, সে প্রশ্ন তোলে আদালত। মনুসিঙ্ঘভি প্রথমে যুক্তি দেন, দুঃখপ্রকাশ ও ক্ষমাপ্রার্থনা একই। তারপর তিনি অবশ্য জানিয়ে দেন, রাহুল ক্ষমাপ্রার্থনা করবেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
শুনানির পরে মনুসিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘আমরা ক্ষমাপ্রার্থনা করব। তার বেশিও না, কমও না। চৌকিদার চোর হ্যায় সুপ্রিম কোর্টের মুখে বসানোর কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। তবে এর সঙ্গে রাজনৈতিক বক্তব্যের সম্পর্ক নেই। রাফাল চুক্তির দুর্নীতিতে প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের ব্যক্তিরা জড়িত। তাই এই স্লোগান তৈরি হয়েছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সেই স্লোগানে সিলমোহর বসিয়েছে, এমন বোঝানো উদ্দেশ্য ছিল না।’’
লেখির আইনজীবী রুচি কোহলি আজ বলেন, ‘‘মিস্টার গাঁধী বলেছেন....।’’ তাঁকে থামিয়ে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, কোন গাঁধী। কোহলি রাহুল গাঁধীর নাম বলায় প্রধান বিচারপতি বলেন, দেশের সব গাঁধী রাহুল গাঁধী নন। লেখির আইনজীবী মুকুল রোহতগি বলেন, ‘‘রাহুল দু’টি হলফনামায় একটি শব্দ বলেছেন, তা হল, দুঃখপ্রকাশ। তাঁকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। কারণ, এ হল সবথেকে বড় ধরনের আদালত অবমাননা। তিনি ইচ্ছাকৃত ভাবে আদালতের মুখে কথা বসিয়েছেন। আবার যুক্তি দিচ্ছেন, অন্য নেতারাও একই মন্তব্য করেছেন। তা হলে শুধু তাঁর বিরুদ্ধেই আদালত অবমাননার অভিযোগ কেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy