রিয়াজই হতে পারে পরবর্তী হিজবুল কম্যান্ডার। ছবি:সংগৃহীত।
বুরহানের পর সবজার। খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে দু’টো বড় ধাক্কা খেয়েছে হিজবুল মুজাহিদিন। উপত্যকায় জঙ্গি সংগঠনের কম্যান্ডার এ বার কে হবে, তা নিয়েই শুরু হয়েছে টানাপড়েন। নানা জল্পনার মাঝে যে নামটা সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে, সেটি হল রিয়াজ আহমেদ নাইকু। গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত, টেক-স্যাভি এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় এই জঙ্গিকেই উপত্যকায় হিজবুলের পরবর্তী কম্যান্ডার বানানো হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
শনিবার ভোরে সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে সবজার আহমেদ বাটের মৃত্যু হয়। গত বছর বুরহান ওয়ানি সেনা অভিযানে নিহত হওয়ার পর এই সবজারকে কাশ্মীর উপত্যকার কম্যান্ডার হিসেবে বেছে নিয়েছিল হিজবুল। কিন্তু এ বার সবজারও শেষ। তাই আবার কোনও কম্যান্ডার খোঁজার জন্য তৎপর হতে হয়েছে হিজবুলকে। যে কোনও জঙ্গিকে কম্যান্ডার করতে চায় না হিজবুল। এমন কোনও মুখকে তারা খুঁজে নিতে চায়, জম্মু-কাশ্মীরের শিক্ষিত তরুণদের মধ্যেও যে প্রভাব ফেলতে পারবে। সেই কারণেই এক সময় সুদর্শন, শিক্ষিত, টেক-স্যাভি এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় একাংশে জনপ্রিয় বুরহানকে কম্যান্ডার হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। বুরহানের মৃত্যুর পর একই ভাবে সবজারকে বেছে নেওয়া হয়। কিন্তু খুব অল্প সময়ের মধ্যে সবজারও সেনা অভিযানে নিহত হওয়ায় এমন কোনও মুখ খুঁজে বার করতে হিজবুল সমস্যায় পড়ছে, যে মুখ উপত্যকার বিভিন্ন মহলে প্রভাব ফেলতে পারবে। রিয়াজ আহমেদ নাইকু এখনও পর্যন্ত হিজবুলের প্রথম পছন্দ বলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে উপত্যকায়।
আরও পড়ুন: ‘পাথর না ছুড়ে ওরা গুলি করলেই আমাদের সুবিধা হতো’
কে এই রিয়াজ আহমেদ নাইকু?
হিজবুলের বহু পুরনো সদস্য রিয়াজ অবন্তীপুরার দুরবাগের বাসিন্দা। বুরহানের মতো জনপ্রিয় না হলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় নিত্য যাতায়াত আছে তার। বেশ কয়েকটি ছবিতে বুরহানের পাশেই দেখা গিয়েছে তাকে। উপত্যকায় একাধিক বার নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে এই জঙ্গি। হামলা চালিয়েছে পুলিশ চৌকিগুলিতেও। একাধিক নিরাপত্তা কর্মী এবং পুলিশ আধিকারিক হত্যার দায়ে অন্যতম মোস্ট ওয়ান্টেড এই জঙ্গির মাথার দাম ঘোষিত হয়েছে ২০ লক্ষ টাকা। রিয়াজকে ধরতে ফাঁদও পাতা হয়েছিল অনেক বার। কিন্তু বার বার ফাঁদ কেটে বেরিয়েছে সে। দীর্ঘদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর সে ফের নজরে আসে গত বছরের জানুয়ারিতে। সে সময় সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত সারিখ আহমেদ বাটের শেষকৃত্যে দেখা গিয়েছিল তাকে। সঙ্গে ছিল হিজবুলের আরও দুই কম্যান্ডার লতিফ আহমেদ ধর ও ইসফাক আহমেদ ধর। তিনজনের হাতেই ছিল একে-৪৭। মৃত সারিখ আহমেদ বাটকে ‘শহিদ’-এর মর্যাদা দিতে শেষকৃত্যের সময় শূন্যে কয়েকবার গুলি ছুড়েছিল তারা। গোটা ঘটনার ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েও দেওয়া হয়েছিল। অনেকের মতে, তরুণ প্রজন্মের সমবেদনা আদায়ের লক্ষ্যেই এত কাণ্ড করেছিল রিয়াজ। তাতে কিছু প্রভাবও পড়েছিল। রিয়াজদের উদ্যোগে বেশ কিছু তরুণ কাশ্মীরি সে সময় জঙ্গি সংগঠনে নাম লিখিয়েছিল। এ হেন রিয়াজকেই এ বার উপত্যকায় হিজবুলের কম্যান্ডার করা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। তবে সেনাবাহিনীর দাবি, নতুন কম্যান্ডার হিসেবে যাকেই বেছে নেওয়া হোক, হিজবুল আর ঘুরে বেড়াতে পারবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy