Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সময় না দিয়ে বিল পাশ, ক্ষোভ সংসদে

গত শুক্রবার বিলটি লোকসভায় পাশ হয়েছিল। সে দিন বেলা পাঁচটায় সেই তথ্য রাজ্যসভায় জানান সেক্রেটারি জেনারেল।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯ ০৩:৩৩
Share: Save:

চলতি অধিবেশনে ইতিমধ্যেই ডজনখানেক বিল পাশ হয়েছে সংসদের উভয় কক্ষে। কিন্তু বিল পেশ, আলোচনা ও বিরোধীদের সংশোধনী দেওয়া নিয়ে শাসক শিবির সংসদীয় নিয়ম মানছে না বলে অভিযোগ করে আজ রাজ্যসভায় মানবাধিকার রক্ষা বিল নিয়ে আলোচনার সময় ওয়াক আউট করলেন তৃণমূলের সাংসদেরা। যদিও দিনের শেষে নির্বিঘ্নেই বিলটি পাশ করিয়ে নেয় সরকার।

গত শুক্রবার বিলটি লোকসভায় পাশ হয়েছিল। সে দিন বেলা পাঁচটায় সেই তথ্য রাজ্যসভায় জানান সেক্রেটারি জেনারেল। তার পরে আজই বিলটি আলোচনার জন্য রাজ্যসভায় নিয়ে আসা হয়। এর বিরোধিতা করে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের যুক্তি, ‘‘কোনও বিল নিয়ে আলোচনা শুরু করার আগে বিরোধীরা যাতে সংশোধনী আনতে পারেন সে জন্য এক দিন সময় দিতে হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিরোধীদের কিছু না জানিয়েই বিলটি নিয়ে আসা হয়। তা ছাড়া, আগের দু’দিন সপ্তাহান্তের ছুটি থাকায় সংশোধনী দেওয়া সম্ভব ছিল না।’’

রাজ্যসভায় তৃণমূলের আর এক সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের অভিযোগ, ‘‘সংসদের বিষয় উপদেষ্টা কমিটি আসলে সময় ধার্য করা কমিটিতে পরিণত হয়েছে। সরকারের লক্ষ্যই হল যত বেশি সংখ্যক বিল পাশ করিয়ে নেওয়া। কারণ বিভিন্ন মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলি এখনও তৈরি হয়নি। ফলে বিল সংসদীয় কমিটিতে পাঠানোর দায় থাকছে না সরকারের।’’

যদিও বিজেপির পাল্টা দাবি, প্রতিটি বিল নিয়ে সংসদে সুষ্ঠু আলোচনা হচ্ছে। বিরোধীরা তাঁদের আপত্তি জানাচ্ছেন। এ বারের অধিবেশন ভবিষ্যতের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। শাসক শিবিরের এক নেতার কথায়, ‘‘তৃণমূল যুক্তিহীন কথা বলছে। সিপিএম সাংসদ ই করিম মানবাধিকার বিলে সংশোধনী এনেছিলেন। তা নিয়ে আলোচনা হয়। তৃণমূল তো শুনেছি সংশোধনী জমা দিয়েছিল। এ হল বিরোধিতা করার জন্য বিরোধিতা।’’

চলতি বিলের সংশোধনীতে বলা হয়েছে আগামী দিনে মানবাধিকার কমিশনের শীর্ষ পদে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ছাড়াও শীর্ষ আদালতের যে কোনও বিচারপতি বসতে পারবেন। এর ফলে ওই পদের গরিমা লঘু হতে চলেছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। বিল সংক্রান্ত বিতর্কের জবাবে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বলেন, ‘‘কমিশনের শীর্ষ পদ যাতে ফাঁকা না থাকে তার জন্য ওই সিদ্ধান্ত। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা পদমর্যাদায় সমান। শুধু প্রধান বিচারপতির উপর কিছু বাড়তি দায়িত্ব থাকে।’’

অভিযোগ ওঠে নিয়োগে স্বজনপোষণের। জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘‘যে নিয়োগ কমিটিতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, লোকসভার স্পিকার, প্রধান বিরোধী দলের নেতা উপস্থিত থাকেন, সেই কমিটির সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলা অনুচিত। যদি নিয়োগকে বিরোধীরা সন্দেহের চোখে দেখেন, তা হলে কোনও গণতান্ত্রিক সংস্থা কাজ করতে পারবে না।’’

এই বিল নিয়ে আলোচনার আগে বেলা বারোটায় সোনভদ্রের ঘটনা নিয়ে আলোচনার জন্য নোটিস দেয় তৃণমূল। কিন্তু চেয়ারম্যান তা না মানায় রাজ্যসভার ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। যোগ দেয় কংগ্রেস-সহ প্রায় সমস্ত বিরোধী দল। অচল হয়ে যায় রাজ্যসভা। আজ রাজ্যসভা বসতেই কংগ্রেস কর্নাটক নিয়ে আলোচনার জন্য নোটিস দেয়। সেটিও অগ্রাহ্য হওয়ায় কংগ্রেস বিক্ষোভ দেখায়। পাশে দাঁড়ায় তৃণমূল। বিরোধী ঐক্যের চিত্রটি দেখতে পাওয়া যাবে আগামিকালও। কাল সকালে সংসদ শুরু হওয়ার আগে শেষ সপ্তাহের রণকৌশল ঠিক করতে বৈঠকে বসতে চলেছে বিরোধী দলগুলি।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Parliament Human rights protection bill
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE