Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

আন্দামানে আটক পর্যটকদের উদ্ধার নৌসেনার

চার দিন ধরে প্রচণ্ড দুর্যোগের মধ্যে আটকে পড়েন হাজারেরও বেশি মানুষ। আন্দামানের হ্যাভলক ও নীল দ্বীপের সেই সব আটকে পড়া পর্যটককে অবশেষে উদ্ধার করে আনল ভারতীয় নৌসেনা বাহিনী। শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হওয়া সেই উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছিল উপকূলরক্ষী বাহিনীও।

চলছে পর্যটকদের উদ্ধারের কাজ।

চলছে পর্যটকদের উদ্ধারের কাজ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৪:০৫
Share: Save:

চার দিন ধরে প্রচণ্ড দুর্যোগের মধ্যে আটকে পড়েন হাজারেরও বেশি মানুষ। আন্দামানের হ্যাভলক ও নীল দ্বীপের সেই সব আটকে পড়া পর্যটককে অবশেষে উদ্ধার করে আনল ভারতীয় নৌসেনা বাহিনী। শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হওয়া সেই উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছিল উপকূলরক্ষী বাহিনীও।

এ দিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ওই দুই দ্বীপে আটকে প়়ড়া প্রায় সব পর্যটককে তুলে নিয়ে পোর্ট ব্লেয়ারে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার দুপুরের পর থেকে এই যাত্রীরা বিমান ধরে যে যার শহরে ফিরতে শুরু করে দিয়েছেন। আটকে প়ড়া বেশির ভাগ যাত্রীই কলকাতার বলে আগামী দু’দিন পোর্ট ব্লেয়ার থেকে কলকাতার সমস্ত উড়ানে চাপ থাকবে। বিমান সংস্থাগুলির তরফে বলা হয়েছে, যাঁরা দুর্যোগের কারণে উড়ান ধরতে পারেননি, তাঁদের পুরনো টিকিটেই ফিরিয়ে আনা হবে।

এ দিন হ্যাভলকে আটকে পড়া বাঙালি পর্যটক শুভব্রত দত্তের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, শুক্রবার সকাল থেকে আর দমকা হাওয়া বইছে না। সমুদ্রের গর্জনও কিছুটা কমেছে। মাঝে মধ্যে কয়েক পশলা ঝিরঝিরে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে রোদেরও দেখা মিলছে। নীল দ্বীপে আবহাওয়ার অবশ্য এতটা উন্নতি হয়নি। যে কারণে, সেখানে হেলিকপ্টার নামাতে পারেনি নৌসেনা। পর্যটকদের জাহাজে করে পোর্ট ব্লেয়ারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

নৌসেনা জানিয়েছে, শুক্রবার সকালে আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ার পরে প্রথমেই তিনটি হেলিকপ্টার পাঠিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়। পোর্ট ব্লেয়ার বিমানবন্দর সূত্রের খবর, নৌসেনার তিনটি কপ্টার ১০ বার যাতায়াত করে হ্যাভলক থেকে প্রায় ৪০০ জন পর্যটককে তুলে নিয়ে আসে। এঁরা দুপুরের মধ্যে পোর্ট ব্লেয়ার বিমানবন্দরে পৌঁছে যান। পরে দুপুর আর বিকেলের বিমানে এঁদের অনেকেই কলকাতায় ফেরেন।

সকাল সাড়ে ন’টায় পোর্ট ব্লেয়ার থেকে নৌসেনার ছ’টি জাহাজ হ্যাভলক ও নীল দ্বীপের দিকে রওনা হয়ে যায়। উপকূলরক্ষী বাহিনীর দু’টি জাহাজও উদ্ধারকাজে নামে। বিকেলের মধ্যে সেই ৮টি জাহাজে করে নীল ও হ্যাভলকে আটকে পড়া বাকি পর্যটকেরা পোর্ট ব্লেয়ার ফেরেন। শনি এবং রবিবারের বিমানে তাঁদের কলকাতা ফেরার কথা।

জাহাজের জন্য নীল দ্বীপের জেটিতে অপেক্ষমান পর্যটক সুপর্ণা গোস্বামী ফোনে বলেন, ‘‘রাস্তায় বৃষ্টিতে দাঁড়ানো যাচ্ছে না। ঝোড়ো হাওয়া বইছে। বৃষ্টি মাথায় নিয়েই হোটেল থেকে বেরিয়েছি। সমুদ্র এখনও উত্তাল। এই বৃষ্টিতে কী করে জাহাজে উঠব বুঝতে পারছি না। প্রাণ নিয়ে ফিরতে পারব তো!’’

ভারতীয় বায়ু সেনার হেলিকপ্টারে পোর্ট ব্লেয়ার বিমানবন্দরে পৌঁছনোর পরে রাম রায় নামে এক পর্যটক বলেন, ‘‘কোনও মতে এ দিন হেলিকপ্টারে জায়গা করে নিতে পেরেছিলাম। গত তিন দিন ধরেই শুনছিলাম আমাদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হবে।’’

পর্যটকদের একাংশ জানান, দুর্যোগের পরে হোটেলে থাকা- খাওয়া ও জাহাজে বা কপ্টারে পোর্ট ব্লেয়ারে ফিরে আসার জন্য তাঁদের খরচ দিতে হয়নি। হোটেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রশাসন তাঁদের নির্দেশ পাঠিয়েছিল, এই বিপর্যয়ে পর্যটকদের সব রকম সুবিধা বিনা মূল্যে দিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Navy Andaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE