এন সি হিলস ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্ট ফোরামের ডাকা রেল অবরোধে আজ দ্বিতীয় দিনেও লামডিং-বদরপুর লাইনে ট্রেন চলেনি। জেলা প্রশাসন ও উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের প্রতিনিধিরা গত কাল থেকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকে বসেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত না হওয়ায় পাহাড় লাইনে ট্রেন চলাচল অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
অবরোধ প্রত্যাহার না হলে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য হবেন বলে শুনিয়ে দিযেছেন জেলাশাসক মনোজ কুমার। তিনি আলোচনার মাধ্যমে রেলের সঙ্গে বিবাদ মিটিয়ে ফেলতে আন্দোলনকারীদের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে ছাত্র সংগঠনের সভাপতি ডেভিড কেভম জানিয়েছেন, ব্রডগেজের কাজের জন্য মাহুর থেকে নিউ হারাঙ্গাজাও পর্যন্ত বিভিন্ন গ্রামের যে সব বাসিন্দার কৃষিজমি নষ্ট হয়েছে, তাঁদের ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলতে থাকবে। কিন্তু উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল ক্ষতিপূরণ প্রদানের কোনও সময়সীমা জানাতে অস্বীকার করে। ফলে বিবাদের নিষ্পত্তি হয়নি।
এ দিকে রেল অবরোধের জেরে গত কাল সকাল থেকে গুয়াহাটি-শিলচর যাওয়ার ফাস্ট প্যাসেঞ্জার ট্রেন নিউহাফলং স্টেশনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। প্রায় ১ হাজার ২০০ যাত্রী তাতে আটকে পড়েন। ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার পরও রেল বিভাগ যাত্রীদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেনি। দেয়নি পানীয় জল। অনেক মহিলা সন্তানদের নিয়ে ২৪ ঘণ্টার বেশি না খেয়ে থাকতে বাধ্য হন। তবে রেল বিভাগ উদাসীন থাকলেও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আরো সোসাইটি, ব্লু হিলস সোসাইটি ও গ্রিন সোসাইটির পক্ষ থেকে আটকে পড়া যাত্রীদের আজ পাউরুটি, বিস্কুট ও জল দেওয়া হয়। রেলওয়ে ইউজার্স কমিটির সদস্য লিটন চক্রবর্তী সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেন।
ডিমা হাসাওয়ের জেলাশাসক মনোজ কুমার ও ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার কঙ্কনজ্যোতি শইকিয়া গত কাল থেকে কয়েক বার আটকে পড়া ট্রেনটিকে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। পুলিশ দিয়ে লাইন থেকে পিকেটার সরানো হবে বললেও ট্রেনচালক আপত্তি জানান। পুরনো অভিজ্ঞতার উল্লেখ করে তিনি ট্রেন চালাতে বলপ্রয়োগের রাস্তায় না যেতে পরামর্শ দেন। জেলাশাসক অবশ্য স্টেশনে গিয়ে দু’টি ট্রলিতে নিরাপত্তা বাহিনী ও রেলকর্মীদের রেল লাইন পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু নিউ হারাঙ্গাজাও স্টেশনে গিয়ে তাঁরা দেখা যায়, কয়েকশো পিকেটার রেল লাইনের ওপর। কাছাকাছি এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আরও অনেকে। পরে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল লামডিং-বদরপুর লাইনের সব ট্রেন আজও বাতিল করে দেয়।
এই অবস্থায় ডিমা হাসাও জেলা প্রশাসন আটকে পড়া যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে কিছু গাড়ির ব্যবস্থা করে। কিন্তু সুযোগ বুঝে একাংশ গাড়িচালক ২০০ টাকার জায়গায় ৩০০-৪০০ টাকা ভাড়া আদায় করে। হাতে টাকা ফুরিয়ে যাওয়ার দরুন বেশ কিছু যাত্রী ছোট গাড়িতে যেতে পারেননি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরে একটি বাসের ব্যবস্থা করে তাঁদের শিলচর পাঠানো হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy