রেলমন্ত্রী সময়ে ট্রেন চালানোর ফরমান দিলে কী হবে, এক বছরের আগে পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন রেল বোর্ডের কর্তারা।
গত দেড় বছর ধরে হাওড়া-দিল্লি রুটে রাজধানী-দুরন্তর মতো ট্রেন বাদে অধিকাংশ এক্সপ্রেস ট্রেন গড়ে ছয় থেকে আট ঘণ্টা লেট। এই পরিস্থিতিতে হঠাৎই গত সপ্তাহে ফরমান জারি করে রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল জানান, দেরিতে ট্রেন চললে তার দায় নিতে হবে সংশ্লিষ্ট জোনের কর্তাদের। আটকে যাবে সেই কর্তার পদোন্নতিও। মন্ত্রীর বক্তব্যে ক্ষোভ জানিয়ে একাধিক জোনের কর্তা দ্বারস্থ হন রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান অশ্বিনী লোহানির কাছে। লোহানি মন্ত্রীকে জানান, সুরক্ষার বিষয়টিতে জোর দিতে হলে ট্রেন দেরিতে চলানো ছাড়া ভিন্ন রাস্তা নেই।
গয়াল-লোহানির বিবাদ সামনে এসে পড়ে ওই ঘটনাকে ঘিরেই। তা এমন পর্যায়ে পৌঁছয়, যে হস্তক্ষেপ করতে হয় প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়কে। ঐক্যের বার্তা দিতে পীযূষ ও লোহানিকে একসঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলন করার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই সূত্র মেনেই আজ রেল মন্ত্রকের চার বছরের সাফল্য নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে একই মঞ্চে দেখা গেল দু’জনকে। কিন্তু রেল বোর্ডের কর্তারা বলে দিলেন, বিভিন্ন জোনে সুরক্ষা ও মেরামতির কাজ চলায় আরও প্রায় এক বছর দেরিতে চলবে ট্রেন।
সমীক্ষা বলছে, দেশের উত্তর ও পূর্ব ভারতের ট্রেনগুলি দেরিতে চলে। কারণ লাইনের উপরের অতিরিক্ত চাপ। উপরন্তু এক দশক লাইনগুলিতে মেরামতি ও সুরক্ষার কাজ বন্ধ ছিল। আজ লোহানি বলেন, ‘‘সুরক্ষার স্বার্থে লাইনে মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। মুঘলসরাই, কানপুরে তৈরি হচ্ছে তৃতীয় ও চতুর্থ লাইন। তাই ট্রেনের গতি বেঁধে দিতে বাধ্য হয়েছে রেল।’’ কবে কাজ শেষ হবে? রেল বোর্ডের মেম্বার (ট্র্যাফিক) মহম্মদ জামশিদ বলেন, ‘‘এক বছর সময় লাগবে।’’
রেলমন্ত্রীও আজ লাইনে সুরক্ষার কাজকে অগ্রাধিকার দিয়ে বলেন, ‘‘কোথায় কখন মেরামতি হবে, তার জন্য একটি টাইমটেবিল বানানো হোক। সেই মতো পাল্টানো হোক ট্রেনের সময়।’’ রেলমন্ত্রী চাইছেন, যদি কোনও ট্রেন গড়ে পাঁচ ঘণ্টা দেরিতে চলে, তা হলে সে ভাবেই আগামী এক বছর ট্রেনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হোক। যাতে যাত্রীরা আগে থেকেই মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে ট্রেনে উঠতে পারেন। যা দেখে রেলকর্তারা বলছেন, বাস্তব পরিস্থিতি বুঝে নিজের দেওয়া ফরমান থেকে সরে আসতে বাধ্য হলেন রেলমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy