প্রতীকী ছবি।
‘লাভ জেহাদ’ রুখতে উত্তরপ্রদেশে সদ্য জারি হয়েছে ধর্মান্তরণ বিরোধী অধ্যাদেশ। ওই আইনে সম্প্রতি গ্রেফতার করা হয় বরেলীর ২১ বছরের যুবক ওয়াইস আহমেদকে। সেই ঘটনার জের কাটতে না কাটতে এ বার আসরে ঢুকে বিয়ে রুখে দিল পুলিশ।
লখনউয়ের পারায় ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ সূত্রের খবর, বাড়ির লোকের সম্মতিতেই বুধবার বিয়ের আয়োজন করেছিল রায়না গুপ্ত (২২) ও মহম্মদ আসিফের (২৩) পরিবার। কিন্তু নতুন অধ্যাদেশ মেনে কিছু আইনি প্রক্রিয়া তাঁরা সম্পূর্ণ করেননি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। দুই পরিবারকে বিষয়টি বোঝালে তারা বিয়ে পিছিয়ে দিয়ে আইনি পদ্ধতি মেনেই পরে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন।
নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ধর্ম পরিবর্তন না করে ‘স্পেশাল ম্যারেজ’ আইনে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা বিয়ে করতেই পারেন। সে ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। কিন্তু কেউ ধর্ম পরিবর্তন করতে চাইলে বিয়ের ৬০ দিন আগে জেলাশাসকের দফতরে একটি নির্দিষ্ট ফর্ম জমা দিতে হবে। শুধু তা-ই নয়, কোনও চাপ, প্রলোভন বা উস্কানির কারণে যে কেউ ধর্ম পরিবর্তন করছেন না, সে কথা জানিয়ে বিয়ের ৬ মাসের মধ্যে আরও একটি ফর্ম জমা করতে হবে। পুলিশের বক্তব্য, রায়না ও আসিফ বিষয়টি জানতেন না। তবে এ দিনের ঘটনায় কোনও এফআইআর দায়ের করা হয়নি।
অন্য দিকে নতুন আইনে গ্রেফতার হওয়া যুবক ওয়াইস আহমেদের বাবা ৭০ বছরের মহম্মদ রফিক আজ পুলিশের বিরুদ্ধেই দুই পরিবারের উপরে চাপ সৃষ্টির অভিযোগ তুলেছেন। বরেলীর পুলিশ আগে জানিয়েছিল, ধর্ম পরিবর্তন করে এক হিন্দু তরুণীকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিল ওয়াইস। দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও সম্প্রতি তরুণীর অন্যত্র বিয়ে হয়ে যায়। তরুণীর বাবার অভিযোগ, তার পরেই চাপ দিতে শুরু করে যুবক।
আজ এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওয়াইসের বাবা পাল্টা দাবি করেন, পুলিশি চাপের মুখে পড়েই তরুণীর পরিবার এফআইআর দায়ের করেছে। রফিকের আরও অভিযোগ, ছেলের খোঁজে এসে তাঁকে মারধর করেছে পুলিশ। রফিক সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘‘লাভ জেহাদের অভিযোগ শুধু দুঃখজনক নয়, ভয়েরও। মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে আমাদের কোনও বিবাদ নেই। ওঁরা ভাল মানুষ।’’ ওয়াইসের গ্রেফতারির খবরে বিস্মিত তাঁদের প্রতিবেশীরাও। গ্রামপ্রধান ধ্রুব রাজ জানান, এপ্রিল মাসেই দুই পরিবারের মধ্যে বিষয়টি ‘মিটমাট’ হয়ে গিয়েছিল। তবে তরুণীর পরিবার এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
উত্তরপ্রদেশ সরকারের নতুন এই অধ্যাদেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে দু’টি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাকারীদের আবেদন, ওই আইনে ব্যক্তি পরিসর এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy