Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পটেলে ‘মন’ মোদীর, কংগ্রেস শুধু ইন্দিরায়

বেশ কয়েক বছর ধরেই জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে বল্লভভাই পটেলের বিবাদের কাহিনি প্রচার করে সর্দারকে ‘আপন’ করে নিয়েছে গেরুয়া শিবির।

সর্দার বল্লভভাই পটেল।—ফাইল চিত্র।

সর্দার বল্লভভাই পটেল।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৪৮
Share: Save:

মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর সার্ধশতবর্ষ ধুমধাম করে পালন করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। পিছিয়ে থাকতে চায়নি কংগ্রেসও। সনিয়া গাঁধীর নির্দেশে রাজ্যে-রাজ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল দল। কিন্তু আড়ম্বরে পেরে ওঠেনি। আর চার দিন পরে কংগ্রেসের আরও এক ‘আইকন’ সর্দার বল্লভভাই পটেলের জন্মদিন। মোদী এ বারও ঝাঁপাচ্ছেন। কিন্তু হাল যেন অনেকটা ছেড়েই দিয়েছে কংগ্রেস।

বেশ কয়েক বছর ধরেই জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে বল্লভভাই পটেলের বিবাদের কাহিনি প্রচার করে সর্দারকে ‘আপন’ করে নিয়েছে গেরুয়া শিবির। মোদী নিজের রাজ্য গুজরাতে সর্দার পটেলের সব থেকে উঁচু মূর্তি তৈরি করেছেন। জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পরে এখন তার বিভাজনও হচ্ছে ৩১ অক্টোবর পটেলের জন্মবার্ষিকীতে। মোদীর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজের মন্ত্রকে পটেলের প্রচার করছেন আনুষ্ঠানিক ভাবে। এমনকি শাহের মধ্যে পটেলের ‘ছায়া’ও দেখতে শুরু করেছেন অনেকে। এমন এক আবহে আজ রেডিয়োর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে মোদী দীর্ঘ সময় ব্যয় করলেন পটেলকে নিয়েই। শোনালেন, ৩১ অক্টোবর সরকারের কী কর্মসূচি।

আর কংগ্রেস সে দিন পটেল ছেড়ে বেশি মন দেবে ইন্দিরা গাঁধীতেই। কারণ, সে দিন ইন্দিরার মৃত্যুদিনও। কংগ্রেসের সংগঠনের দায়িত্বে থাকা নেতা কে সি বেণুগোপালকে প্রশ্ন করা হয়, ‘‘গাঁধীর মতো সর্দার পটেলের জন্মদিন নিয়েও কি কংগ্রেসের কোনও ভাবনা আছে?’’ জবাবে বেণুগোপাল বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত দলের পক্ষ থেকে দু’টিই কর্মসূচি রয়েছে ৩১ অক্টোবর। সকালে শক্তিস্থলে, যেখানে ইন্দিরা গাঁধীর সমাধি রয়েছে। আর বিকেলে ইন্দিরা গাঁধীর নামে ‘ঐক্যের পুরস্কার’ দেবেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। এ ছাড়া আর কোনও অনুষ্ঠান নেই।’’

মোদী অবশ্য আজ ইন্দিরার প্রসঙ্গও একটু ছুঁয়ে যান। তিনি বলেন, ‘‘৩১ অক্টোবর আমাদের দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর হত্যা হয়েছিল। দেশ তাতে শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। আমি আজ তাঁকেও শ্রদ্ধাঞ্জলি দিচ্ছি।’’ আসলে এই শ্রদ্ধাঞ্জলিও প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন পটেলের

বিষয়ে সবিস্তার জানানোর পরে। কংগ্রেসের অধিবেশনে পটেলের অবদানের কথা শুনিয়ে তিনি ঘুরপথে কটাক্ষ করেন সনিয়া গাঁধীর দলকে। বোঝাতে চান, পটেলের থেকে কংগ্রেস যা শিখতে পারেনি, তিনি শিখে পালন করেছেন।

মোদী শোনান, ১৯২১ সালে আমদাবাদে কংগ্রেসের অধিবেশনে শামিল হতে সারা দেশ থেকে হাজারো প্রতিনিধি এসেছিলেন। সেই অধিবেশন আয়োজনের দায়িত্ব ছিল পটেলের উপরে। ছোট-ছোট খুঁটিনাটির উপরেও জোর দিতেন তিনি। আগত প্রতিনিধিদের জলের সমস্যা যাতে না হয়, তার খেয়াল রেখেছেন। তেমনই জুতো চুরিও যাতে না-যায়, সে কথাও ভেবেছেন। কী ভাবে? চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে খাদির থলি আনান পটেল। প্রতিনিধিদের কিনতে বলেন। সেই থলিতে জুতো ও বাকি সরঞ্জাম রেখে চুরির ভয়ও গেল। আবার খাদিরও বিক্রি হল।

বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে বিভিন্ন রাজ্যকে কী ভাবে এক সূত্রে গেঁথেছিলেন পটেল, বিজেপি সেই প্রচার অনেক করেছে। স্বাধীনতার পরে লক্ষদ্বীপকে পড়শি দেশের নজর থেকে বাঁচাতে কী পদক্ষেপ করেছিলেন পটেল, আজ সে কথাও শুনিয়েছেন মোদী। সঙ্গে গত পাঁচ বছরের মতো ৩১ অক্টোবরে ‘ঐক্যের জন্য দৌড়’ কর্মসূচিও ঘোষণা করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Vallabhbhai Patel BJP Congress Indira Gandhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE