Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

দু’চাকা আর মহিলাদের ছাড় কেন, প্রশ্ন কোর্টের

নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই জোড়-বিজোড় নীতি মেনে গাড়ি নামবে দিল্লির রাস্তায়। তার ঠিক দু’দিন আগে, আজই রাস্তায় নামলেন তিনি। আর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল তাঁর অস্ত্র হিসেবে বাছলেন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের। উদ্দেশ্য একটাই। পড়ুয়াদের মাধ্যমে তাদের বাড়ির লোকজনের সমর্থন পাওয়া, যাতে এই নয়া নীতি আরও সফল ভাবে প্রয়োগ করা যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:৪৩
Share: Save:

নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই জোড়-বিজোড় নীতি মেনে গাড়ি নামবে দিল্লির রাস্তায়। তার ঠিক দু’দিন আগে, আজই রাস্তায় নামলেন তিনি। আর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল তাঁর অস্ত্র হিসেবে বাছলেন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের। উদ্দেশ্য একটাই। পড়ুয়াদের মাধ্যমে তাদের বাড়ির লোকজনের সমর্থন পাওয়া, যাতে এই নয়া নীতি আরও সফল ভাবে প্রয়োগ করা যায়।

গোটা বিষয়টিতে কেজরীবালের পাশে দাঁড়িয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর। সমর্থন জানিয়েছে, দিল্লিতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসও। কিন্তু সেই সঙ্গে প্রশ্নও উঠছে। কেজরী তাঁর এই নয়া নীতিতে মহিলাদের কেন ছাড় দিচ্ছেন, কেনই বা দু’চাকার গাড়িগুলো (স্কুটার ও মোটরবাইক) রোজ বেরোতে পারবে, সে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দিল্লি হাইকোর্ট। এ নিয়ে দিল্লি সরকারের জবাব জানতে চেয়েছে তারা।

পরীক্ষামূলক প্রয়োগ মাত্র ১৫ দিনের জন্য হলেও এর ফলাফলের দিকে তাকিয়ে রয়েছে গোটা দেশ। নিজেদের পরিকল্পনার সফল ভাবে রূপায়ণ করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে আপ সরকারও। গাড়ি চালকেরা নিয়ম অমান্য করলে, তাদের বোঝানোর জন্য শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রায় দশ হাজার আপ সমর্থক নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। চলছে তাঁদের প্রশিক্ষণও। সব সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দিল্লি পুলিশও।

বায়ু দূষণের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে প্রথম থেকেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর। এই নীতি ঘোষণা হওয়ার পরে আইনজীবীদের একাংশ তাতে ছাড় চেয়ে কেজরীবালের দ্বারস্থ হলেও তা খারিজ করে দেয় সরকার। তবে পদাধিকারবলে ছাড় পেলেও প্রধান বিচারপতি অবশ্য এই নিয়ম মেনে চলার পক্ষপাতী। একই ভাবে এই নীতি থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছিল বিভিন্ন দূতাবাসের গাড়িগুলিকে। কিন্তু আজ মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বিশেষ প্রয়োজন না হলে, আগামী পনেরো দিন দূতাবাস যথা সম্ভব ওই নিয়ম মেনে চলার চেষ্টা করবে।

তবে কেজরীর পথে কাঁটাও রয়েছে বেশ কিছু। রাজধানীতে দূষণের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে দিল্লি সরকারকে চলতি মাসেই ভর্ৎসনা করেছিল দিল্লি হাইকোর্ট। মূলত এর পরই জোড়-বিজোড় নীতিতে হাতে দেন তিনি। কিন্তু সেই নীতিতে কেন মহিলা ও দু’চাকার আরোহীদের ছাড় দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে আজ প্রশ্ন তুলেছে সেই দিল্লি হাইকোর্ট। ৬ জানুয়ারির মধ্যে আপ সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে আদালতের কাছে।

আজ দিল্লির এক স্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেন কেজরীবাল। দিল্লিকে দূষণ মুক্ত করার জন্য পড়ুয়াদের শপথ বাক্য পাঠ করানো হয় সেখানে। কেন এ নিয়ম চালু হচ্ছে, শিশুদের তা বোঝান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘বাচ্চারা এখন বাড়ি গিয়ে বাবা-মা, আত্মীয়-পরিজনদের এই নিয়মের সুফল জানাবে। বোঝাবে পরিবারের লোকজন যেন একসঙ্গে একটি গাড়িতে অফিস যান। এতে দূষণ কমবে।’’ কেজরীবালের আশা, কেউ নিয়ম ভাঙলে তাঁকে যদি সারা দিনে অন্তত দশ বার কেউ ভুল ধরিয়ে দেন, তা হলে অন্তত ওই ব্যক্তির শুভবুদ্ধি জাগবে। এক পড়ুয়ার প্রশ্নের উত্তরে কেজরীবাল এ-ও বলেন, ‘‘দিল্লিতে সাইকেলের জন্য আলাদা লেনের কথা ভাবা হচ্ছে।’’ এক ছাত্রের আবার পরামর্শ ছিল, শনিবারেও ছুটি ঘোষণা করুক স্কুলগুলি। শুনে হেসে ফেলেন কেজরীবাল। বলেন, ‘‘আমরা এটাও ভেবে দেখব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE