ভোট দেব না, অথচ সরকারের সমালোচনা করব, এমনটা হতে পারে না বলে মন্তব্য করল দেশের শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কথায়, ‘‘ভোট না দিলে সরকারকে প্রশ্ন করার অধিকারও থাকে না।’’
ফুটপাথ ও রাস্তা থেকে দখলদারি হটাতে দীর্ঘ দিন ধরেই সুপ্রিম কোর্টে আইনি লড়াই চালাচ্ছে দিল্লির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সেই মামলাতেই গত বছরের অগস্ট মাসে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, সারা দেশে দখলদারি তোলার নির্দেশ দিয়ে কোনও লাভ হবে না। বিচারপতিরা সে সময় আবেদনকারীকে বলেছিলেন, ‘‘আমাদের ইচ্ছে থাকলেও ক্ষমতার অভাবে অনেক কিছুই করতে পারি না। আপনার কি মনে হয়, আমাদের নির্দেশে দেশে রাম রাজ্য তৈরি হয়ে যাবে? না দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যাবে?’’
সেই মামলারই ফের শুনানি ছিল চলতি সপ্তাহে। নয়া প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের বেঞ্চে সওয়াল করতে গিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির প্রতিনিধি ধনেশ লেশধন জানান, দখলদারি হটাতে সরকার কিছুই করে না। তাই শীর্ষ আদালতের নির্দেশ প্রয়োজন। কিন্তু এ বারও সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, দেশে দখলদারি হটানো নিয়ে নির্দেশ দিয়ে লাভ নেই। এ নিয়ে বিভিন্ন হাইকোর্টে মামলা করতে হবে। এর পরে প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘সব সমস্যার জন্য সরকারকে দোষও দেওয়া যায় না। আপনি ভোট দিয়েছিলেন?’’ ধনেশ বলেন, ‘‘সত্যি বলতে কোনও দিনই দিইনি।’’ দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘যাঁরা ভোট দেন না, তাঁদের সরকারকে প্রশ্ন করার অধিকার নেই।’’
গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সংগঠন এপিডিআর-এর সহ-সভাপতি রঞ্জিত শূরের মন্তব্য, ‘‘শীর্ষ আদালতের এই মন্তব্য গণতন্ত্র সম্পর্কে সাংবিধানিক ধারণারই বিরোধী।’’ তবে রাজনীতিকদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে স্পষ্টতই মতভেদ রয়েছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের কথায়, ‘‘ভোটাধিকার প্রয়োগ নৈতিক কর্তব্য। আবার ভোট না দেওয়াটা অপরাধও নয়। দেশের শীর্ষ আদালত একটা বিতর্ক তুলেছে।’’ কিন্তু সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তী সরাসরিই বলছেন, ‘‘ভোটার না হলেও নাগরিকের সংবিধান স্বীকৃত অধিকার থাকে। তার মধ্যে সরকারকে প্রশ্ন করার অধিকারও পড়ে।’’ বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহের মতে, ‘‘নোটা হওয়ার পরেও যিনি ভোট দেন না, তাঁর নাগরিকত্ব নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। তাই আমি শীর্ষ আদালতের সঙ্গে একমত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy