Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

অরুণাচলে রেল, দিল্লি-বেজিং কাজিয়া

বার্তা দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। প্রতিক্রিয়া জানাল চিনও। ফলে, অরুণাচল প্রদেশের প্রতিষ্ঠাদিবসে ওই রাজ্য নিয়ে দু’দেশের কাজিয়া ফের মাথাচাড়া দিল। অরুণাচল প্রদেশের ২৯তম প্রতিষ্ঠাদিবসে ওই রাজ্যের সঙ্গে বাকি দেশের প্রথম রেল যোগাযোগের উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদী। এই প্রথম দেশের প্রধানমন্ত্রী ওই রাজ্যের প্রতিষ্ঠাদিবসের উদ্বোধন করলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:১৭
Share: Save:

বার্তা দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। প্রতিক্রিয়া জানাল চিনও। ফলে, অরুণাচল প্রদেশের প্রতিষ্ঠাদিবসে ওই রাজ্য নিয়ে দু’দেশের কাজিয়া ফের মাথাচাড়া দিল।

অরুণাচল প্রদেশের ২৯তম প্রতিষ্ঠাদিবসে ওই রাজ্যের সঙ্গে বাকি দেশের প্রথম রেল যোগাযোগের উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদী। এই প্রথম দেশের প্রধানমন্ত্রী ওই রাজ্যের প্রতিষ্ঠাদিবসের উদ্বোধন করলেন। সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে, মাথায় ধনেশ-টুপি, পরনে স্থানীয় জ্যাকেট ও কাঁধে অরুণাচলি ব্যাগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইটানগরে, ইন্দিরা গাঁধী উদ্যানের মঞ্চে আসেন। সঙ্গে ছিলেন অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী নাবাম টুকি, রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু ও রাজ্যপাল নির্ভয় শর্মা।

জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীতের সুরে অনুষ্ঠান শুরু হয়। মোদী মঞ্চেই বোতাম টিপে সবুজ পতাকা নাড়ান। সেই সঙ্গে, নাহারলাগুন স্টেশন থেকে দিল্লিগামী রাজধানী এক্সপ্রেস যাত্রা শুরু করে। যার হাত ধরে, দেশের রেল মানচিত্রে ঢুকে পড়ল অরুণাচল। মোদী বলেন, “উত্তর-পূর্বের উন্নয়নে সবচেয়ে বড় সমস্যা যোগাযোগের অভাব। ভৌগোলিক গুরুত্বের জন্য অরুণাচলের বিকাশ গুরুত্বপূর্ণ।” তাঁর কথায়, “রেল হল উন্নয়নের মেরুদণ্ড। এখন থেকে ইটানগরের মানুষ ৩ দিনের রাস্তা ৩৮ ঘণ্টায় পার হবেন।” আজ ৩২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি ১৩২ কেভি বিদ্যুৎ পরিবাহী প্রকল্প ও ইটানগর পানীয় জল প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেন মোদী। বরাবরই অরুণাচলকে ‘বিতর্কিত এলাকা’ আখ্যা দিয়ে এসেছে চিন। আজ সেই রাজ্যকে বাকি দেশের সঙ্গে রেলপথে জুড়ে যে মোদী সরকার চিনকে কৌশলে কড়া বার্তা দিতে চেয়েছিল তা জানতেন কূটনীতিকেরা। নয়াদিল্লির কৌশল বুঝে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বেজিংও। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হুয়া চুনইং এক বিবৃতিতে জানান, ভারতের এই পদক্ষেপের বিরোধী চিন। সে কথা ভারতকে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।

চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মতে, চিনের অন্তর্গত তিব্বতের মনিয়ুল, লোয়ুল ও নিম্ন সায়ুল এলাকা নিয়ে ‘তথাকথিত’ অরুণাচল প্রদেশ গড়েছিল নয়াদিল্লি। ওই এলাকাগুলি এখনও ভারতের ‘বেআইনি দখলদারি’র কবলে রয়েছে। চিন কখনওই ‘তথাকথিত’ অরুণাচল প্রদেশকে স্বীকৃতি দেয়নি। ভারত-চিন সীমান্তের পূর্ব দিকে বিরাট এলাকা নিয়ে বিবাদ রয়েছে। নয়াদিল্লির এই ধরনের পদক্ষেপ সেই বিবাদ মেটানোর ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।

তবে কেবল পড়শি দেশ নয়, আজ বিরোধীদেরও কটাক্ষ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মোদীর কথায়, “আজ আমার কাছে আনন্দের দিন। আবার দুঃখেরও। গোটা দেশ ও বিশ্ববাসী এক দিকে দেখলেন অরুণাচল উন্নয়নের পথে পা মেলালো। অন্য দিকে সকলে জানতে পারলেন, এত দিন স্বাধীন ভারত অরুণাচলবাসীকে ন্যূনতম সুবিধাটুকু দিয়ে উঠতে পারেনি।” তিনি জানিয়েছেন, উত্তর-পূর্বের জন্য গত বছরে ৫৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সেই টাকার হিসেব দিতে কেন্দ্র ও রাজ্য বাধ্য। তাই তিনি নিয়ম করে প্রতি মাসে দু’জন মন্ত্রী এবং বিভিন্ন বিভাগের আমলাদের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে পাঠাচ্ছেন। তাঁরা এসে সব উন্নয়ন প্রকল্প ও কেন্দ্রের টাকার হিসেব নিচ্ছেন। মোদীর কথায়, “উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন মন্ত্রককে বলেছি, মেক ইন ইন্ডিয়া-র ধাঁচে, মেক ইন নর্থ-ইস্ট প্রকল্পের পরিকল্পনা জমা দেওয়া হোক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

delhi beijing
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE