Advertisement
E-Paper

বিদেশে সি-ফিশ থেকে সাবধান

না হলেই বিপদ। ডা. সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বললেন সুজাতা মুখোপাধ্যায়।সস্তায় বিদেশ বেড়ানোর হিড়িক পড়ে গেছে। শখ হল নতুন নতুন বিদেশি খাবার খাওয়ার, বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ। এতে ক্ষতি নেই তো? বিদেশের সমুদ্রে দূষণ কম। কাজেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে বানানো হলে তেমন ক্ষতি নেই। তবে মাছে পারদ বেশি থাকলে কিন্তু ফিরে আসার পরেও ক্ষতির বহর চলতে পারে।

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৬ ০০:০০

প্র: সস্তায় বিদেশ বেড়ানোর হিড়িক পড়ে গেছে। শখ হল নতুন নতুন বিদেশি খাবার খাওয়ার, বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ। এতে ক্ষতি নেই তো?

উ: বিদেশের সমুদ্রে দূষণ কম। কাজেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে বানানো হলে তেমন ক্ষতি নেই। তবে মাছে পারদ বেশি থাকলে কিন্তু ফিরে আসার পরেও ক্ষতির বহর চলতে পারে।

প্র: মাছে পারদ?

উ: সামুদ্রিক মাছে থাকে তো। তবে অল্পস্বল্প থাকলে তেমন ক্ষতি নেই।

প্র: কোন মাছে কত পারদ আছে তা আমরা বুঝব কী করে?

উ: স্যালমন, সার্ডিন বা টুনাতে সামান্য আছে। কাজেই ওই মাছ নিশ্চিন্তে খান। কিং ম্যাকারেল, শার্ক বা সোর্ড ফিশ এড়িয়ে চলুন। তবে সামুদ্রিক মাছে সেলেনিয়ামও থাকে। পারদের ক্ষতি ঠেকাতে যে একাই একশো।

প্র: এক আধ-দিন খেলেই ক্ষতি হয়?

উ: এক আধ-দিনে হয়তো হয় না। তবে ফিশ সেফটি এক্সপার্টদের মতে প্রেগন্যান্ট ও নার্সিং মা, যিনি প্রেগন্যান্ট হতে চলেছেন ও ছোট বাচ্চাদের এ রিস্ক না নেওয়াই ভাল।

প্র: শুধু পারদই যত নষ্টের গোড়া?

উ: আরও আছে। পিসিবি, ডাইঅক্সিন, পিউরিন। ব্লু-ফিশ-এ পিসিবি বেশি থাকে বলে এক-আধবারের বেশি না খাওয়াই ভাল। কিং ম্যাকারেল, শার্ক বা সোর্ড ফিশও এক-আধবার খেতে পারেন। অবশ্য যদি অ্যালার্জির ধাত না থাকে।

প্র: অ্যালার্জির ধাত থাকলে সামুদ্রিক মাছ বারণ?

উ: অ্যালার্জি আছে তা জানা থাকলে তো খাবেনই না। না থাকলে সামান্য খেয়ে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। সমস্যা না হলে খান। তবে আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে যেতে পারলে ভাল।

প্র: প্রস্তুতি বলতে?

উ: অ্যান্টিঅ্যালার্জিক ওষুধপত্র। অল্পস্বল্প সমস্যা হলে কাজে দেবে। আর মারাত্মক শ্বাসকষ্ট হলে স্টেরয়েড ও অ্যাড্রেনালিন ইনজেকশন দিতে হতে পারে। সঙ্গে ডাক্তার থাকলে সে সবও নিয়ে যান। না হলে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে যেতে হবে।

প্র: অন্য আর কিছু ওষুধ?

উ: মাছের কোয়ালিটি ও রান্নার পদ্ধতি ঠিক না থাকলে ফুড পয়জন হতে পারে। বেশি খেয়ে ফেললে হতে পারে অম্বল, বদহজম, লুজ মোশন। কারণ আমরা প্রায় সবাই-ই কিন্তু মিষ্টি জলের মাছ খেতে অভ্যস্ত। হঠাৎ গাদা গাদা সামুদ্রিক মাছ খেতে শুরু করলে পেট আপসেট হওয়া কিছু বিচিত্র নয়। কাজেই সে সব সামলানোর ওষুধও নিতে হবে সঙ্গে।

প্র: যেমন?

উ: ফুড পয়জন হলে কুইনোলন গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিক, যেমন সিপ্রোফ্লক্সাসিন, ওফ্লক্সাসিন ইত্যাদি। বমির ওষুধ ডমপেরিডন ও ওআরএস। মারাত্মক লুজ মোশন হলে লোপেরামাইড খেতে হতে পারে। তাও নেবেন দু-চারটে। অম্বলের ওষুধ, হজমের ওষুধ নেবেন, যার যা ইচ্ছে।

সামুদ্রিক মাছের বিপদ

প্রচুর খেলে হজমের গণ্ডগোল, অম্বল, লুজ মোশন, পেট ফাঁপা, বমি হতে পারে

ফুড পয়জনের আশঙ্কা আছে অ্যালার্জির ধাত থাকলে সাধারণ অ্যালার্জি থেকে শুরু করে শ্বাসকষ্ট হয়ে প্রাণ নিয়ে টানাটানি হতে পারে

পিউরিনে ঠাসা মাছ প্রচুর খেলে হৃদরোগ, হাই প্রেশার, গাউটের প্রকোপ বাড়তে পারে

পিসিবি, ডাইঅক্সিনের প্রভাবে বাড়তে পারে বন্ধ্যাত্ব ও কিছু ক্যানসারের প্রকোপ

পারদ বেশি আছে এমন মাছ দীর্ঘদিন খেলে নার্ভের নানা রকম অসুখ, চামড়ার রোগ, কিডনির অসুখ হতে পারে। ভ্রূণ ও শিশুদের ওপর এর প্রভাব বেশি পড়ে।

প্র: সুশি খাওয়া যাবে?

উ: হ্যাঁ। কাঁচা স্যালমন বা শ্রিম্প দিয়ে বানানো হয় সচরাচর। মাছের কোয়ালিটি খারাপ থাকলে ফুড পয়জন অবধারিত।

প্র: এক-আধ পিসেও সমস্যা হবে?

উ: মাছ ভাল থাকলে ১০ পিসেও হওয়ার কথা নয়। খারাপ হলে এক পিসেও হতে পারে। তবে কম খেলে কম সমস্যা হবে।

প্র: অয়েস্টারে?

উ: একই ব্যাপার।

প্র: সামুদ্রিক মাছের তো কত উপকারও আছে?

উ: আছেই তো। স্যালমন, শার্ডিন, টুনা খান না। প্রচুর ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড পাবে শরীর। হার্ট-অ্যাটাক ও স্ট্রোকের রিস্ক কমবে। কিছু ক্যানসার ও চোখের রোগ ঠেকাতেও এর বেশ ভাল ভূমিকা আছে।

প্র: নিয়মিত খেতে হবে নিশ্চয়ই?

উ: সপ্তাহে বার দুয়েক খেলেই হবে। আর বেড়াতে গিয়ে সব দিক বজায় রেখে একটু বেশি খেলেও সমস্যা নেই।

Sea Food Susi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy