Advertisement
E-Paper

সূর্যের আলোর ব্যঞ্জনা পত্রহীন বৃক্ষে

প্রকৃতির উদ্ভিদকে শিল্পী দেখেন তাঁর সৌন্দর্যের দৃষ্টিকোণ থেকে। বৃক্ষ, লতা, ফুল—সবই প্রকৃতির বিভিন্ন অভিব্যক্তি। সৌন্দর্যচেতনা দিয়েই শিল্পী তাদের সত্তার স্বরূপ সন্ধান করেন। কোনও শিল্পী প্রকৃতিকে অনুধাবন করতে চেয়েছেন বিজ্ঞানীর দৃষ্টিতে।

মৃণাল ঘোষ

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৭ ০০:০০
অভিব্যক্তি: কেমোল্ড গ্যালারিতে সুপ্রীতি দত্তের প্রদর্শনীর একটি ছবি

অভিব্যক্তি: কেমোল্ড গ্যালারিতে সুপ্রীতি দত্তের প্রদর্শনীর একটি ছবি

প্রকৃতির উদ্ভিদকে শিল্পী দেখেন তাঁর সৌন্দর্যের দৃষ্টিকোণ থেকে। বৃক্ষ, লতা, ফুল—সবই প্রকৃতির বিভিন্ন অভিব্যক্তি। সৌন্দর্যচেতনা দিয়েই শিল্পী তাদের সত্তার স্বরূপ সন্ধান করেন। কোনও শিল্পী প্রকৃতিকে অনুধাবন করতে চেয়েছেন বিজ্ঞানীর দৃষ্টিতে। যেমন রেনেসাঁসের শিল্পী লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি। আবার কোনও কোনও বিজ্ঞানী পরিস্ফুট করতে চেয়েছেন প্রকৃতির প্রাণের ব্যঞ্জনা, তার সত্তার সৌন্দর্য। যেমন জগদীশচন্দ্র বসু। এই দুই দৃষ্টিকোণকে মিলিয়ে নিয়ে শিল্পসৃষ্টি করেছেন, এমন শিল্পীও আছেন। ক্যানদিনস্কি বা পিট মন্ড্রিয়ান-এর কথা মনে আসতে পারে এ প্রসঙ্গে। আমাদের রবীন্দ্রনাথ যখন ছবি এঁকেছেন, তখন এই দুই দৃষ্টিকোণ তাঁর মধ্যেও ছিল।

কেমোল্ড আর্ট গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত হল উদ্ভিদ বিজ্ঞানের গবেষক ও শিক্ষক ড. সুপ্রীতি দত্তের ছবির প্রদর্শনী। বাস্তবের প্রকৃত স্বরূপ উন্মোচন করতে চাইলে বিজ্ঞানী বা শিল্পী উভয়েই তো এক ধরনের বিমূর্তের মুখোমুখি হন। যেমন একটি অনুর গঠন তো আপাতভাবে সব সময়ই বিমূর্ত। অনেক শিল্পী সেই গঠন নিয়েই বিমূর্ত ছবি অঁকেন, সুপ্রীতি সে রকম করেননি। তিনি প্রকৃতিকে তার সম্পূর্ণতায় ধরতে চেয়েছেন। প্রকৃত প্রকৃতি থেকে নিষ্কাশিত করে এনেছেন সৌন্দর্যের নির্দিষ্ট একটি তরঙ্গ আর তাকেই রূপবদ্ধ করেছেন তার প্রাকৃতিকতা বজায় রেখেই। তার ছন্দোময়তাকে উদ্ভাসিত করতে চেয়েছেন। কাজেই তিনি রূপায়িত করেছেন প্রকৃত প্রকৃতি থেকে রূপান্তরিত তাঁর নিজস্ব প্রকৃতি।

একটি ছবিতে সম্মুখপটে উদ্ভিদহীন শূন্য প্রান্তর। সেই পরিসরকে তিনি রেখায় অলঙ্কৃত করেছেন। পশ্চাৎভাগে উদিত সূর্যের আলোর ব্যঞ্জনা। আর মধ্যভাগে দণ্ডায়মান দুটি পত্রহীন বৃক্ষ। ডুয়ার্স-এর একটি নিসর্গে দূরে পাহাড়, তার সামনে বনাঞ্চল অতিক্রম করে হলুদাভ ও নীল শূন্য জমি। এ ছবিতে অনেকটাই স্বাভাবিকতার অনুসরণ আছে। ‘রুটলেস অন দ্য টপ’ শীর্ষক বিস্তারের মধ্যে জলাশয়ে ফুটে থাকা শালুক ফুলের তন্ময়তাকে শিল্পী ধরেছেন কবির দৃষ্টিতে। তাঁর এই বোধ ও রূপায়ণ কৌশল প্রশংসনীয়। যদিও তাঁকে এখনও অনেক অনুশীলনের মধ্য দিয়ে আঙ্গিকের নিজস্বতায় পৌঁছতে হবে।

নিসর্গ ছাড়াও তিনি এঁকেছেন প্রকৃতির অন্য রূপ। প্যাঁচার রূপায়ণে কৌতুকদীপ্ত তাঁর রূপবোধের পরিচয় আছে। একটি গণেশের ছবি এঁকেছেন। সেখানেও কৌতুকের দীপ্তি এসেছে। কিন্তু মানবীর মুখগুলিতে একটু আড়ষ্টতা এসেছে।

Painting
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy