Advertisement
১১ মে ২০২৪
আলোচনা

আতঙ্ক  পেরিয়ে

কালো সাদা ধূসর বর্ণের বিশাল বিষণ্ণ চিত্রপট তৈরি করেছেন প্রদোষ পাল। স্রোতের মতো সর্পিল গতিতে কালচে কাদার রাস্তা দূরে মিলিয়ে গেছে। একটি ঘোড়া, ভারী আকাশের দিগন্তে নেমে আসছে। বিষণ্ণতার ছবি ‘গ্লুমি হরাইজন’।

রূপকল্প: পেন্টার্স ৮০ আয়োজিত প্রদর্শনীতে প্রদোষ পালের ছবি

রূপকল্প: পেন্টার্স ৮০ আয়োজিত প্রদর্শনীতে প্রদোষ পালের ছবি

শমিতা নাগ
শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

ভয়, আতঙ্ক, বিপন্নতা এখন কোনও বিশেষ ভৌগোলিক অংশে সীমাবদ্ধ নয়। দেশ ও সমাজের গণ্ডি পেরিয়ে ক্রমে শিল্পীমানসেও রেখাপাত করেছে। এ রকমই রূপকল্প উপস্থাপনা করলেন ‘পেন্টার্স ৮০’-র শিল্পীরা। তরুণ দে’র ছবিতে পরস্পর বিপরীতে রাখা দুটি শুকনো গাছের কাণ্ড, প্রাণহীন সাদা রক্ত মাটিতে পড়েছে, নিষ্পলক চোখে তাকিয়ে আছে গাছগুলি। এই ভাবনায় আছে বিষাদ ও শরণার্থী সমস্যা।

কালো সাদা ধূসর বর্ণের বিশাল বিষণ্ণ চিত্রপট তৈরি করেছেন প্রদোষ পাল। স্রোতের মতো সর্পিল গতিতে কালচে কাদার রাস্তা দূরে মিলিয়ে গেছে। একটি ঘোড়া, ভারী আকাশের দিগন্তে নেমে আসছে। বিষণ্ণতার ছবি ‘গ্লুমি হরাইজন’। কিন্তু আকাশে ভাসমান কিছু আকার যেন ফ্রেম ছেড়ে বেরিয়ে আসছে এবং ছবির ভারসাম্য নষ্ট করছে। ‘স্পেস উইদিন’ অমিত চক্রবর্তীর। গভীর কূপের নীচ থেকে আলোর আভাস আসছে, অসংখ্য টিকটিকি সে দিকেই ধাবমান। প্রাণীগুলির চলনে অদ্ভুত চোরাস্রোত টের পাওয়া যাচ্ছে। বলিষ্ঠ ফোটোগ্রাফি করেছেন অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। বিযয় হল কালীঘাট এলাকা।

প্রদর্শনীতে একটি মাত্র এচিং রেখেছেন স্নেহাশিস মাইতি। তিমির ব্রহ্মের ক্যানভাসে হংসপাখাযুক্ত বিমানে উড়ে যাচ্ছেন লালমুখো একজন ‘অবতার’। তিনি ধ্যানমুদ্রাতে রয়েছেন। অপু দাশগুপ্তের একই ফিগার, একই রকম টেকনিক ও বর্ণ নিয়ে একঘেয়ে অনেকগুলি ছবি। দীপঙ্কর দত্ত ক্যানভাসের কালো জমিতে জীবনের বোঝাস্বরূপ বিশাল ব্যাগ নামিয়ে রেখেছেন। দেবাশিস চক্রবর্তী করেছেন ত্রিমাত্রিক কতকগুলি মুণ্ডু। ‘আননোন পোট্রেট’ যেন মুখ নয়, মুখোশ। হিংস্র, ক্রূর। এই সব মুখগুলিতে তিনি আদিম উল্কির নকশায় অতি দক্ষতার সঙ্গে বিভিন্ন অভিব্যক্তি ফুটিয়েছেন। একটি মুখে ভয়ের শিরশিরে ভাব পাওয়া যায়। তবে মুণ্ডুগুলি অবাস্তব হলেও দর্শককে কিছুক্ষণ ভাবতে হবে।

চার দশকেও

কাশীনাথ রায়

সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে অলোক রায়চৌধুরীর সঙ্গীত জীবনের চার দশক পূর্তি উপলক্ষে কথায় ও গানে মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল রবিছন্দম। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের গান তো ছিলই, সেই সঙ্গেই ছিল শিল্পীর চার দশকের অভিজ্ঞতার ডালি। কথক মৈত্রেয়ী মিত্রের সঙ্গে আলাপচারিতার মাধ্যমে শিল্পী বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা উপস্থাপন করলেন। এ দিন শিল্পী ওঁর ভাল লাগা বিভিন্ন রবীন্দ্রসঙ্গীত, অতুলপ্রসাদের গান, নজরুলগীতি ও আধুনিক গেয়ে শোনান। অনুষ্ঠানে তাঁর প্রথম গানটি ছিল ‘পৃথিবী আমারে চায়’। গানের মেজাজকে অক্ষুণ্ণ রেখে প্রতিটি গানই শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছে। তার মধ্যেও উল্লেখযোগ্য ‘যদি কাগজে লেখো নাম’, ‘সোনার হাতে সোনার কাঁকন’ এবং তিনটি হাস্যরসাত্মক গান। ওঁর সহশিল্পীরা ছিলেন দেবাশিস সাহা, অলোক রায়, দেবজ্যোতি গোস্বামী, শম্ভুনাথ দে ও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।

অধরা সুখ

সুকোমল ঘোষ

ভিক্টর রজভ-এর ‘ইন সার্চ অব হ্যাপিনেস’ কাহিনি অবলম্বনে ঋতবাক-এর নতুন প্রযোজনা ‘বৃষ্টির পরে’। নাটক ও নির্দেশনায় শেখর দাশগুপ্ত। নাটকটি শুরুর আগে কলাকুশলীদের অর্থাৎ অন্তরালে থেকে যাঁরা নাটকের প্রদর্শনকে সফল করে গেলেন তাঁদের সংবর্ধনা প্রশংসনীয়।

নাটকের মঞ্চ চমৎকার। আলো ও সঙ্গীতের ব্যবহার যথাযথ। অভিনয়ে প্রত্যেকেই বেশ ভাল। বড় ছেলে রাজু বাবার মৃত্যুর পরে মা, স্ত্রী, ভাই-বোন নিয়ে সুখেই সংসার চালাচ্ছিল। কিন্তু সেই সুখ বেশি দিন রইল না। রাজু তার স্ত্রীকে নিয়ে সংসার ছাড়ল। নানা ঘটনা। টানটান উত্তেজনায় নাটকের পরিণতি গড়ায়। সংসার ফের জোড়া লাগবে কি না, তাই নিয়ে শেষ অবধি প্রত্যেক দর্শকই অপেক্ষা করেছেন। সুন্দর অভিনয় করেছেন সুস্মিতা মিত্র, মমতা সাহু, শতাব্দী বসু, সুনীল নস্কর, ভোলানাথ ঘোষাল প্রমুখ। মঞ্চ পরিকল্পনায় নীলাভ চট্টোপাধ্যায়, আলো কল্যাণ ঘোষের।

দু’ বার নাটকের গতি রুদ্ধ হয়েছে। একবার যখন বড় ভাইয়ের বন্ধুকে সোফায় বসিয়ে সবাই চলে যায়। আর দ্বিতীয় বার যখন বেড়াতে আসা কাকার প্রতি একই ব্যবহার করা হয়। যে দলের বয়স কুড়ির কাছাকাছি, তাদের পক্ষে এই ত্রুটি অমার্জনীয়।

অনুষ্ঠান

• স্বর ও শ্রুতি নিবেদন করেছিল গান ও পাঠের অনুষ্ঠান ‘সহোদরা’। অনুষ্ঠানে একক গানে ছিলেন সুতপা ভট্টাচার্য। পাঠে ছিলেন মৌনীতা। সঙ্গে অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন শুভাশিস, সৌম্যজ্যোতি, সুরজিৎ, রূপক ও সুভাষ। সঞ্চালনায় শুভ্রজিৎ দত্ত।

• বিড়লা অ্যাকাডেমিতে সোনারতরী কলাকেন্দ্র-র অনুষ্ঠানের শুরু নমিতা দেবের পরিচালনায় ‘আনন্দধ্বনি’ সমবেত গান দিয়ে। এ দিন গান ও পাঠে অংশ নিয়েছিলেন তানিয়া দাস, মৌসুমী কর্মকার, দেবাশিস মিত্র, ঈশিতা দাস অধিকারী, সুস্মেলী দত্ত প্রমুখ।

• শ্রাবণী সেন মিউজিক অ্যাকাডেমি আয়োজিত অনুষ্ঠানের শিরোনাম ছিল ‘আলোর উৎসব’। পরিবেশনে ছিলেন সংস্থার শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা। তবে নজর কেড়েছে নৃত্যানুষ্ঠান ‘মোহন বাঁশি’। পরিবেশনায় ছিলেন মধুবনী চট্টোপাধ্যায়। ‘জাহ্নবী’র শিল্পীরা সুনাম বজায় রেখেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Review Painting Drama
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE