Advertisement
E-Paper

শুরু থেকেই কৌতূহল

চার্লস ডারউইন এ বার মঞ্চে, ‘কলাপী’র গ্যালাপাগোসের পাখি। লিখছেন মনসিজ মজুমদারচার্লস ডারউইন এ বার মঞ্চে, নাটক ‘গ্যালাপাগোসের পাখি’ হয়ে। চার্লস ডারউইনকে মঞ্চে আনার এই সাহসী পদক্ষেপে দর্শকদের প্রশংসা আদায় করে নিল কলাপী নাট্যমঞ্চ। শুরু থেকেই কৌতূহল ও টানটান উত্তেজনা। এমন বৈচিত্রপূর্ণ দ্বান্দ্বিক জীবনকে তথ্যনির্ভর করে নাটকে সরল এবং সাবলীল ভাবে তুলে ধরেছেন নাট্যকার তীর্থঙ্কর চন্দ। নির্দেশকের ভূমিকায় জ্যোতির্ময়ও সফল।

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৪ ০০:৪৮

চার্লস ডারউইন এ বার মঞ্চে, নাটক ‘গ্যালাপাগোসের পাখি’ হয়ে। চার্লস ডারউইনকে মঞ্চে আনার এই সাহসী পদক্ষেপে দর্শকদের প্রশংসা আদায় করে নিল কলাপী নাট্যমঞ্চ। শুরু থেকেই কৌতূহল ও টানটান উত্তেজনা। এমন বৈচিত্রপূর্ণ দ্বান্দ্বিক জীবনকে তথ্যনির্ভর করে নাটকে সরল এবং সাবলীল ভাবে তুলে ধরেছেন নাট্যকার তীর্থঙ্কর চন্দ। নির্দেশকের ভূমিকায় জ্যোতির্ময়ও সফল। দৃষ্টিনন্দন সেট, শ্রুতিমধুর আবহ, মঞ্চ, আলো এবং বলিষ্ঠ অভিনয়--প্রত্যেকটি বিষয়ের সুচারু সমন্বয় ঘটিয়েছেন নির্দেশক জ্যোতির্ময়। বিশেষ করে সুন্দর কিছু নাটকীয় মুহূর্ত তৈরির জন্যও বাহবা পাবেন তিনি। দর্শকদের আপ্লুত করেছে মঞ্চ, আলো এবং আবহের সাহায্যে জাহাজ তৈরির দৃশ্য। যা উপভোগ্য। তবে এই অঙ্কেরই তৃতীয় দৃশ্যে নৃত্যের ভঙ্গিমায় জাহাজের ডেক ঝাড়ু দেওয়ার মুহূর্ত অনির্বচনীয়। দেবস্মিতা দাশ ও রিজাউল সানা অপূর্ব। নৃত্য পরিকল্পনায় কস্তুরী চক্রবর্তী দক্ষতার ছাপ রেখেছেন।

চার্লস ডারউইন শৈশবে মাকে হারিয়েছিলেন। ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন পোকামাকড় ধরার আগ্রহ ছিল। একটু বড় হয়ে তিনি শিকার করে প্রাণীর প্রজাতি নির্ধারণ এবং প্রকৃতির মধ্যে কাটাতে ব্যস্ত থাকতেন। বাবা চাইলেও ডাক্তারি পড়ায় মন ছিল না। প্রবল অনিচ্ছা সত্ত্বেও চার্চের যাজক হতে যান। তাঁর জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন তাঁর দু’জন শিক্ষক প্রফেসর হেনস্লো ও প্রফেসর সেজউইক। এই দু’জন তাঁকে একাধারে মাতৃস্নেহ দিয়েছেন, অন্য দিকে অনুসন্ধিৎসু করে তুলেছিলেন। ১৮৩১ থেকে ১৮৩৫ এইচ এম এস বিগল জাহাজে পর্যবেক্ষণ ভ্রমণের সময় বিভিন্ন প্রজাতির বৈচিত্র লক্ষ করলেন। গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জে একই প্রজাতির কিন্তু বিভিন্ন আকৃতির এবং প্রকৃতির ফিঞ্জ পাখি এবং কাঁকড়াদের দেখে ডারউইনের মনে বিবর্তনবাদের ধারণা জন্মায়। কিন্তু সর্বত্রই তাঁর এই বিবর্তনবাদের তত্ত্ব প্রত্যাখ্যাত হয়। তাঁর দুজন প্রিয় শিক্ষকও তাঁর এই বিবর্তনবাদের ধারণাকে মানতে অস্বীকার করেন। তবুও ডারউইন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত অবিচল ছিলেন। এই নাটকে ভিডিয়ো প্রজেক্টারের মাধ্যমে ছবিগুলি দেখানো হয়েছে তাতে বিজ্ঞানের ভাষা সহজ হয়েছে দর্শকের কাছে। চার্লস হোজের বক্তব্যের সময় পুড়িয়ে মারার দৃশ্যটি (সম্ভবত ব্রুনোকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছিল) গায়ে কাঁটা দেয়। ‘দিশারী’র বুদ্ধিদীপ্ত সুর নাটককে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছে।

নাটকে ডারউইনের জীবনকে তিন ভাগে ভাগ করেছেন নাট্যকার। ছোট ডারউইনের ভূমিকায় দেবদাস ঘোষ। দ্বিতীয় ভাগে অনির্বাণ চক্রবর্তী দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। বৃদ্ধের ভূমিকায় প্রদীপ চক্রবর্তী নৈপুণ্যের সঙ্গে এই চরিত্র সামলেছেন। ফিটজরয়ের ভূমিকায় রাজা ভট্টাচার্য মানানসই। ঐতিহাসিক চরিত্র কার্ল মার্কস সেটা অভিনেতা দীপক মিত্র ভুলে যাননি। ওয়ালেস এবং হাক্সলি চরিত্রে ছিলেন রোহিত নাথ ও অনির্বাণ চক্রবর্তী। বৃদ্ধ সেজউইক এবং বৃদ্ধ হেনসলোর ভূমিকায় উত্তম পাল এবং গোপাল বন্দ্যোপাধ্যায় খুবই বিশ্বাসযোগ্য। লেফটেন্যান্ট ভিকহ্যাম এবং সুলিভ্যানের চরিত্রে অচিন্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রবীর আদিত্য। নির্দেশক জ্যোতির্ময় নাটকে বৃদ্ধ ক্রীতদাসের ভূমিকায় দর্শকদের চোখে জল এনে দিয়েছে। সৌম্যজ্যোতি মল্লিক, সুতপা মিত্র, সুমন্ত সাহা এবং পারমিতা চট্টোপাধ্যায় নজর কেড়েছেন।

manasij majumder galapagoser pakhi bengali theatre kalapi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy