Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Presents

শীতঘুম শেষে

বাজারের চোখে এখন মোদীই যেন মেসি। অনেকের বিশ্বাস, নতুন প্রধানমন্ত্রীর জাদুছোঁয়ায় প্রাণ ফিরবে অর্থনীতিতে। গতি ফিরবে বৃদ্ধির চাকায়। স্বপ্ন সত্যি হবে কি না, উত্তর দেবে সময়ই। তবে এই আশার হাওয়ায় পাল তুলে নিজের লগ্নি-নৌকার হাল নতুন করে ধরতে হবে আপনাকে। হয়তো বদলে ফেলতে হবে বিনিয়োগ কৌশল। অমিতাভ গুহ সরকার।অর্থনীতি আর যা-ই হোক, রূপকথা নয়। এখানে এমন কোনও সোনার বা রুপোর কাঠি নেই, যা ছোঁয়ালে সব সমস্যা উধাও। সমস্ত মুশকিল ভোঁকাট্টা। কিন্তু শেয়ার বাজার সে কথা মনে রাখলে তো! সেই লোকসভা ভোটের আগে থেকে নরেন্দ্র মোদীর মসনদে বসার সম্ভাবনা যত প্রকট হয়েছে, তত লাফিয়ে বেড়েছে সূচক।

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৪ ০১:০৯
Share: Save:

অর্থনীতি আর যা-ই হোক, রূপকথা নয়। এখানে এমন কোনও সোনার বা রুপোর কাঠি নেই, যা ছোঁয়ালে সব সমস্যা উধাও। সমস্ত মুশকিল ভোঁকাট্টা। কিন্তু শেয়ার বাজার সে কথা মনে রাখলে তো! সেই লোকসভা ভোটের আগে থেকে নরেন্দ্র মোদীর মসনদে বসার সম্ভাবনা যত প্রকট হয়েছে, তত লাফিয়ে বেড়েছে সূচক। আর একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা সমেত তিনি ৭ রেসকোর্স রোডে এক বার ঢুকে পড়ার পরে তো কথাই নেই। সেনসেক্স, নিফ্টি সবই প্রায় বাড়ছে তরতরিয়ে। যে-সেনসেক্স কিছু দিন আগেও বারবার চেষ্টা সত্ত্বেও ২১ হাজারের মায়া ত্যাগ করতে পারছিল না, তা এখন ঘোরাফেরা করছে ২৫ হাজারের ঘরে।

আর অমনি কপালে চিন্তার ভাঁজ আমার-আপনার মতো সাধারণ লগ্নিকারীর! এ বার কী করণীয়, তা নিয়ে আমরা আতান্তরে। অনেকেরই প্রশ্ন, এখন শেয়ারে টাকা লাগানোই কি বুদ্ধিমানের কাজ? কেমন হবে বন্ডে লগ্নি করলে? মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের ভবিষ্যত্‌ কেমন, তা জানতেও উত্‌সুক সকলে। আসুন নতুন জমানায় লগ্নি কৌশল কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়েই আজ আলোচনায় বসি।

বাস্তব বুঝুন

শুরুতেই একটা কথা স্পষ্ট করে দিতে চাই। তা হল, রফতানি বাড়ছে, বাণিজ্য ঘাটতি কমছে, ফুলেফেঁপে উঠছে বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার, ভারতে আসতে ফের আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে বিদেশি লগ্নি সবই সত্যি। কিন্তু এটা অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু মাত্র। অনেকটা শীতঘুম শেষে আড়মোড়া ভাঙার মতো। সামনে লম্বা রাস্তা বাকি।

তাই নিজের লগ্নি কৌশল ঠিক করার সময়েও বিষয়টি মাথায় রাখুন। খেয়াল রাখুন, যাতে ঝুঁকি আর রিটার্নের দাঁড়িপাল্লা ঠিক থাকে। কয়েক দিনের ইরাক সঙ্কটেই ত্রাহি ত্রাহি রব তেলের বাজারে। ফের ষাটের উপরে উঠে গিয়েছে ডলার। ফলে বিপদ কখন কোন দিক থেকে আসবে, তা আঁচ করা শক্ত। তাই ঝুঁকি নিন, কিন্তু কাছা খুলে নয়।

তবে আশা কেন?

আশা জাগছে এই কারণেই যে, দেশের অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো নিয়ে বেশ একটা ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, অন্ধকার কেটে এ বার আলো ফোটার সম্ভাবনা। আগামী দিন উজ্জ্বল। আর এই সম্ভাবনা বা বিশ্বাসটুকুও কিন্তু লগ্নির বৃত্তে ঢের।

শেয়ার বাজার ওঠে কেন? কারণ তখন লগ্নিকারীরা মনে করেন, কিনে রাখা শেয়ারের দাম আগামী দিনে আরও বাড়বে। ওই একই আশাতেই তো মিউচুয়াল ফান্ড বা অন্যত্র টাকা ঢালি আমরা। ফলে অর্থনীতির লেখচিত্র উপর দিকে থাকার সম্ভাবনা যদি তীব্র হয়, তবে তার প্রভাব পড়ে শেয়ার বাজার-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে। যেমনটা ইতিমধ্যেই দেখা যাচ্ছে। অনেকে আশা করছেন, আগামী ৪-৬ বছরে ৫০ হাজার, ৬৫ হাজার এমনকী এক লক্ষে পৌঁছে যাবে সেনসেক্স। এর কতটা আদৌ ঘটবে, সেই প্রশ্ন আলাদা। কিন্তু লগ্নিকারী হিসেবে আমাদের কাজ এই সুদিনের আশায় বুক বাঁধা বাজারের ভরপুর ফায়দা ওঠানো।

সমস্যা দোলাচল

বাজারের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই মনে করছেন, ইরাক সঙ্কট সাময়িক। বৃষ্টিপাতে তেমন ঘাটতি না-হলে, দীর্ঘ মেয়াদে বাজার ভালই উঠবে। কিন্তু এই ‘সুখবরে’ও সমস্যায় পড়েছেন এক দল মানুষ। সেনসেক্স ২৫ হাজারে ওঠায়, এক দিকে তাঁরা পুরনো লগ্নির উপর ভাল লাভের গন্ধ পেয়েছেন। আবার ভবিষ্যতে দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনাও উপেক্ষা করতে পারছেন না। ফলে হাতের শেয়ার বেচে মুনাফা ঘরে তোলা উচিত, না কি বাড়তি লাভের আশায় তা আরও ধরে রাখা ভাল এ নিয়ে তাঁরা রীতিমতো ধন্দে। এঁদের অবস্থা অনেকটা তাঁদের মতো, যাঁরা শীত চলে গেলেও সহজে সোয়েটার ছাড়তে চান না। পাছে এখনও ঠান্ডার রেশ থাকে!

একই অবস্থা বাজারে নতুন লগ্নিকারীদেরও। এত উঁচু বাজারে নতুন করে টাকা ঢালতে কেমন ভয় করছে। আবার ভবিষ্যতে বাজার চড়চড়িয়ে উঠলে বিপুল লাভের হাতছানিও তাঁরা উপেক্ষা করতে পারছেন না। অর্থাত্‌, বাজারে বিনিয়োগকারীরা না পারছেন বেচতে, না ভরসা পাচ্ছেন নতুন করে শেয়ার কিনতে। কমবেশি একই অবস্থা মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নিকারীদেরও।

আবার এর ঠিক উল্টো হাওয়া বইছে সোনার বাজারে। শেয়ার বাজার চাঙ্গা হওয়ায় এবং একই সঙ্গে ডলারের দাম কমায় সোনার দাম ৩২,০০০ টাকা থেকে কমতে কমতে নেমে এসেছে ২৬-২৭ হাজারে। ফলে যাঁরা আগে বেশি দামে তা কিনেছেন, তাঁরা লোকসান মেনে বেচতে পারছেন না। আবার দর আরও পড়তে পারে এই আশায় সোনা বা গোল্ড ইটিএফে টাকা ঢালতে ভরসা পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ।

আসুন, একসঙ্গে বসে এই সমস্ত সমস্যার সমাধান খোঁজার চেষ্টা করি—

শেয়ার
সুযোগের সদ্ব্যবহার করুন

আমার প্রথম পরামর্শ, সময়ে সোয়েটার ছাড়ুন। মনে রাখবেন, বাজার-ভিত্তিক যে-কোনও লগ্নিতেই লাভের আশার কোনও সীমা নেই। সূচক ২০ হাজারে উঠলে মনে হবে, দেখি ২২ হাজার হয় কিনা। ২৫ হাজার হলে, দিন গোনা শুরু হবে ৩০ হাজারের জন্য। কিন্তু অনন্তকাল শেয়ার ধরে রেখে লাভ নেই। তাতে বরং ঠকারই সম্ভাবনা। এক সময়ে না এক সময়ে বাজার (সেই সঙ্গে আপনার হাতে থাকা শেয়ারের দাম) পড়বেই। তাই শুধু পরে আরও বেশি পাওয়ার আশায় লগ্নি ধরে না-রেখে সময়ে মুনাফা ঘরে তোলাই ভাল।

কথাতেই আছে, বনের দু’টি পাখির থেকে হাতের একটি পাখিই ভাল। এর মানে, যে-লাভ নাগালের মধ্যে আছে, আগে তা ঘরে তুলুন। অযথা ফেলে রাখবেন না। যদি একেবারেই তা করতে মন না-চায়, তবে অন্তত কিছুটা তো সেই কাজে লাগানো উচিতই। যেমন, যদি একই শেয়ার বেশি সংখ্যায় থাকে, তবে তার কিছুটা বেচে আংশিক লাভ ঘরে তোলা যায়। বাকিটা রেখে দেওয়া যেতে পারে ভবিষ্যতে আরও উঁচু বাজারের সুযোগ নেওয়ার জন্যে।

অনেকের আবার কোনও বিশেষ শেয়ারের প্রতি একটু বেশিই ভালবাসা জন্মায়। কোনও অবস্থাতেই তিনি তা হাতছাড়া করতে চান না। কিন্তু এটি মস্ত ভুল। ধৃতরাষ্ট্রের অন্ধ ভালবাসার পরিণতি তো আমাদের জানা। মনে রাখবেন, কোনও শেয়ারই চিরকাল ধরে রাখার জন্য নয়। লাভের জন্যই তা কেনা। লাভই যদি ঘরে তোলা না-হল, তবে মাঠের ফসল মাঠেই ফেলে রাখার মতো শুধু তা ধরে থেকে লাভ কী?

যত ভাল শেয়ারই হোক না কেন, তার দরে উত্থান-পতন থাকবেই। তাই এত চড়া বাজারে সেই শেয়ারে লাভের মুখ দেখলে, তার কিছুটা বিক্রি করা যেতে পারে। পরের পতনে না-হয় আবার তা কিনবেন। যেমন, গত বৃহস্পতিবার দিনের শেষে একটি মোটরসাইকেল সংস্থার শেয়ার দর ছিল ২,৭০৪ টাকা। তখন ওই দামের আশেপাশে যাঁরা ওই শেয়ার বিক্রি করেছেন, ঠিক পরের দিনই (শুক্রবার) তাঁরা তা কেনার সুযোগ পেয়েছেন ২,৫৮৮ টাকায়।

হাতে যদি এমন শেয়ার থাকে, যা বহু কাল তলিয়ে থাকার পরে এই রেকর্ড উচ্চতার বাজারে হঠাত্‌ই একটু প্রাণচঞ্চল হয়েছে, তা হলে সামান্য ভাল দাম পেলেই চটজলদি তাকে বিদায় করুন।

গত দু’মাসে দারুণ উঠেছে মাঝারি ও ছোট সংস্থার (মিড ক্যাপ এবং স্মল ক্যাপ) শেয়ারগুলি। তাই এই অবস্থায় নতুন করে এ ধরনের লগ্নিতে ঝুঁকি থাকবে। এই জাতীয় শেয়ারে লগ্নি করার আগে তার ভবিষ্যত্‌ ভাল ভাবে বিশ্লেষণ করা জরুরি।

এই চড়া বাজারে বড় সংস্থার (লার্জ ক্যাপ) শেয়ার কিনতে হলেও কিন্তু প্রথমে প্রাধান্য দেওয়া উচিত ‘ডিফেন্স’ শেয়ারে। যারা বাজারের উত্থান-পতনে তেমন গা ভাসায় না। ওঠা-পড়া করে মূলত নিজেদের গুণগত মান অনুযায়ী। ধীর গতিতে। উদাহরণ, আইটিসি, হিন্দুস্তান ইউনিলিভার ইত্যাদি।

মনে রাখবেন, বাজার যত উঁচুতে, তখন সামান্যতম কারণেও তার পতনের সম্ভাবনা তত বেশি। তাই চটজলদি লাভের আশায় এখন বাজারে ঢুকবেন না। বরং শেয়ার কিনুন তার গুণগত মান বিচার করে এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য। দীর্ঘ মেয়াদে কিন্তু বাজার অনেক উপরে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

আগে কেনা কোনও শেয়ার বিক্রি করে লাভ হয়ে থাকলে, এখনই যে তা বাজারে ঢালতে হবে এমনটা নয়। বরং অপেক্ষা করুন পরের পতনের। লাভের মন্ত্রই হল, উত্থানে বিক্রি-পতনে ক্রয়।

দেশের অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে পরিকাঠামো, নির্মাণ, বিদ্যুত্‌ উত্‌পাদন, টেলিকম ইত্যাদি শিল্পে বিশেষ জোর দেবে এনডিএ সরকার। নতুন করে লগ্নির সময়ে সে কথা মাথায় রাখুন। নজর রাখতে হবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শেয়ারের উপরেও।

বাজারে বড় অঙ্কের লগ্নির আগে নতুন সরকারের প্রথম বাজেট দেখে নিলে তা মন্দ হবে না।

সেরা দামে শেয়ার কেনা বা বিক্রি করা ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না। তাই যখনই মনে হবে নিজের লক্ষ্যের কাছাকাছি দাম পাচ্ছেন, তখনই তা বিক্রির সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

মিউচুয়াল ফান্ড

লক্ষ্য হোক এসআইপি

মিউচুয়াল ফান্ড প্রকল্পগুলি মূলত দু’ধরনের। ইকুইটি-নির্ভর এবং ঋণপত্র-নির্ভর। শেয়ার নিয়ে এতক্ষণ আমরা যা আলোচনা করেছি, তার অনেকটাই ইক্যুইটি-নির্ভর ফান্ডের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আসুন, ফান্ডে লগ্নির কৌশল কী হওয়া উচিত, তা দেখে নেওয়ার চেষ্টা করি—

রেকর্ড উচ্চতার এই বাজারে ইক্যুইটি ফান্ডে নতুন লগ্নি এসআইপি পদ্ধতিতে করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। কারণ, তাতে ওঠা-পড়ার বাজারে গড় দামে ইউনিট কেনা সম্ভব হবে।

ইউনিট কিনতে হবে দীর্ঘ মেয়াদে (অন্তত তিন থেকে পাঁচ বছরের জন্য)।

মূল্যবৃদ্ধির যা হাল, তাতে ২০১৪ সালে সুদ তেমন কমার সম্ভাবনা কম। তাই দীঘর্র্ মেয়াদি বন্ড-ফান্ডে বিনিয়োগ এখন এড়িয়ে চলাই ভাল। সুদ কমার পরিস্থিতি তৈরি হলে, তখনই বরং এই ধরনের ফান্ডে ঢোকার কথা ভাবুন।

চড়া বাজারে ইক্যুইটি শেয়ার বা ইক্যুইটি ফান্ড থেকে বেরিয়ে এসে টাকা গচ্ছিত রাখা যায় স্বল্প মেয়াদি (শর্ট টার্ম অথবা আলট্রা শর্ট টার্ম) ফান্ডে। এখানে ঝুঁকি কম। কর কম। অথচ ৮.৫% থেকে ১০% পর্যন্ত আয়ের সুযোগ রয়েছে। সেভিংস অ্যাকাউন্টে মাত্র ৪ শতাংশ সুদে পড়ে থাকা ‘অলস’ টাকাও সরিয়ে আনতে পারেন এখানে।

চলতি বছরে ৮০সি ধারায় কর সাশ্রয়কারী প্রকল্পে লগ্নির সর্বোচ্চসীমা এক লক্ষ টাকা থেকে বাড়ানো হতে পারে। তা মাথায় রেখে এখন থেকেই ভাল ইএলএসএস (ইক্যুইটি লিঙ্কড সেভিংস স্কিম) প্রকল্পে এসআইপি পদ্ধতিতে লগ্নি শুরু করতে পারেন।

বন্ড

দেখে নিন সুদ ও সুরক্ষা

যাঁরা লগ্নির বিষয়ে অতি সাবধানী, তাঁরা অবশ্যই সুরক্ষিত বিশেষত সরকারি সংস্থার বন্ডে লগ্নি করতে পারেন। কিন্তু নীচের বিষয়গুলি দেখতে ভুলবেন না—

বন্ড যেন উচ্চ রেটিং যুক্ত হয়। এএএ (ট্রিপল-এ) অথবা এএ+।

বাজারে নথিবদ্ধ হলে সুবিধাজনক। কারণ, সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনে বন্ড বিক্রি করে বেরিয়ে আসার সুযোগ থাকে।

যে-বন্ড কিনছেন, তার সুদের হার যেন ব্যাঙ্ক সুদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। সাধারণত ব্যাঙ্কে সুদ কমলে, বন্ডের বাজার দর বাড়ে। মনে রাখবেন, ২০১৫ সালে ব্যাঙ্কে সুদ কমার সম্ভাবনা আছে।

উঁচু হারে করদাতাদের জন্য করমুক্ত বন্ড বিশেষ উপযোগী। সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে এই বন্ড বাজারে আসতে শুরু করে। শেয়ার বাজার থেকেও তা কেনা যায়। তবে তাতে দাম একটু বেশি পড়ে।

সোনা

ডলারে নজর রাখুন

পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখবেন, ভারতে সোনা সাধারণত ডলারের অনুগামী। এ দেশে তেলের মতোই সোনার দরও বাড়ে-কমে ডলারের ওঠা-পড়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে। এ ছাড়া আছে বিশ্ব বাজারের প্রভাব এবং স্বর্ণ নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রয়োগ।

৩২,০০০ যদি শৃঙ্গ হয়, তবে সোনার এখনকার দাম রয়েছে বেস ক্যাম্পে। টাকার সাপেক্ষে ডলার পড়লে, তা আরও কমবে। আর ডলার বাড়লে, উল্টোটা। এখন যেমন ইরাক সঙ্কটের কারণে ডলার ফের ষাটের আশেপাশে। কিন্তু মোদী জমানায় দেশের অর্থনীতির হাল বদলালে, আরও বেশি করে বিদেশি লগ্নি আসবে। ফলে পড়তে পারে ডলারের দাম। আর সে ক্ষেত্রে সোনাও যে আরও আরও পড়বে না, তার নিশ্চয়তা নেই। বিশেষত এ বার বৃষ্টি কম হলে যেখানে গ্রামাঞ্চলে সোনার চাহিদা আরও কমার সম্ভাবনা।

তাই সে দিক থেকে দেখলে, এখনও সোনার দাম বেশ আকর্ষণীয় জায়গায় রয়েছে। এই মুহূর্তে আপনার করণীয়—

পরিবারে সোনার প্রয়োজন থাকলে, এখন থেকেই ধাপে ধাপে তা সঞ্চয় করুন। বর্তমান দাম উপযুক্ত মনে হলে, থোক টাকার সোনাও কিনতে পারেন।

সোনা বিপদের বন্ধু। তাই দাম এতটা নামার পর গোল্ড-ইটিএফে লগ্নি করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। মোট বিনিয়োগের ১০-১৫ শতাংশ সোনায় থাকা বাঞ্ছনীয়।

যাঁরা আগে উঁচু দামে সোনা বা গোল্ড ইটিএফে টাকা ঢেলেছেন, তাঁরা বর্তমান দরে আরও কিছুটা লগ্নি করতে পারেন। এতে বিনিয়োগের গড় দাম কিছুটা কমবে। তখন তাতে মুনাফা করাও তুলনায় সহজ হতে পারে।

সোনার দাম কিছুটা পড়তে পারে। কিন্তু তা তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই। ফলে দীর্ঘ মেয়াদে এই বিশ্বস্ত বন্ধুর হাত ধরলে হয়তো ঠকবেন না।

সুতরাং...

১৩ জুলাই মেসির হাতে বিশ্বকাপ উঠবে কি না জানা নেই। মোদীর হাতে দেশ কতটা বদলাবে, তা-ও অজানা। কিন্তু যে-সুযোগ আর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তা খোয়াবেন কেন? রাত জেগে মেসির খেলা যেমন গিলছেন, না-হয় তেমনই বুদ্ধি করে খেলে মুনাফাও ঘরে তুলুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

investment tips amitava guha sarkar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE