All need to know about actor Harshvardhan Rane, his career and struggle dgtl
Bollywood Actor
১৬ বছর বয়সে ২০০ টাকা নিয়ে ছাড়েন চিকিৎসক বাবার ঘর, কাজ করতেন ওয়েটার হিসাবে, ছবির পুনর্মুক্তি ভাগ্য ফেরায় অভিনেতার
বিশ্বের সকল চলচ্চিত্র জগতেই এমন সব অভিনেতা এবং অভিনেত্রীর গল্প শুনতে পাওয়া যায়, যাঁদের জীবন সংগ্রামে ভরা। কিন্তু অধ্যবসায় এবং কঠোর পরিশ্রমের জোরে তাঁরা আজ সফল। অনেকে পেয়েছেন তারকা তকমা।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৫ ০৯:৩৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
বিশ্বের সকল চলচ্চিত্র জগতেই এমন সব অভিনেতা এবং অভিনেত্রীর গল্প শুনতে পাওয়া যায়, যাঁদের জীবন সংগ্রামে ভরা। কিন্তু অধ্যবসায় এবং কঠোর পরিশ্রমের জোরে তাঁরা আজ সফল। অনেকে পেয়েছেন তারকা তকমা।
০২২০
ভারতেও এমন অভিনেতা-অভিনেত্রীর সংখ্যা কম নয়। এমনও অনেকে রয়েছেন, যাঁরা শুধু অভিনয়ের টানে ঘর ছেড়েছিলেন। স্বপ্নপূরণের জন্য অনেক বাধা, অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়েছেন তাঁরা।
০৩২০
সে রকমই এক জন অভিনেতা হর্ষবর্ধন রাণে। মাত্র ১৬ বছর বয়সে ২০০ টাকা নিয়ে বাড়ি ছেড়েছিলেন তিনি। ১০ টাকার জন্য রেস্তরাঁয় কাজ করেছেন। তিনিই এখন সফল অভিনেতা।
০৪২০
অন্ধ্রপ্রদেশের রাজমহেন্দ্রভমে তেলুগু মা এবং মরাঠি বাবার ঘরে জন্ম হর্ষবর্ধনের। বড় হয়েছেন গ্বালিয়রে। হর্ষবর্ধনের বাবা বিবেক রাণে ছিলেন এক জন চিকিৎসক। কিন্তু বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করার কোনও পরিকল্পনা হর্ষবর্ধনের ছিল না।
০৫২০
ছোট থেকেই হর্ষবর্ধনের ইচ্ছা ছিল অভিনেতা হওয়ার। স্বপ্নপূরণ করতে মাত্র ১৬ বছর বয়সে ঘর ছাড়েন তিনি। বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার সময় তাঁর পকেটে ছিল মাত্র ২০০ টাকা।
০৬২০
হর্ষবর্ধন জানতেন, তিনি অভিনেতা হতে চান। কিন্তু কী ভাবে অভিনেতা হবেন, তা জানতেন না। বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রথমে নয়াদিল্লি পৌঁছোন হর্ষবর্ধন। দিল্লিতে দিন গুজরানের জন্য ছোটখাটো কাজ করতে শুরু করেন তিনি। এমনকি ওয়েটারের কাজও করেছেন। সেই কাজগুলি করে দিনে মাত্র ১০-২০ টাকা করে পেতেন অভিনেতা।
০৭২০
এক বার এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁর সংগ্রামের কথা বিস্তারিত ভাবে জানিয়েছিলেন হর্ষবর্ধন। জানিয়েছিলেন, কী ভাবে একটু পরিষ্কার জল এবং শৌচালয়ের জন্যও সংগ্রাম চালাতে হয়েছিল তাঁকে।
০৮২০
সাক্ষাৎকারে অভিনেতা বলেছিলেন, ‘‘আমি একটি হস্টেলে ওয়েটারের কাজ শুরু করি। একটি এসটিডি বুথে প্রতি দিন ১০ টাকায় একটি রেজিস্টার রাখার চাকরিও পাই। তার পর একটি ক্যাফেয় কাজ করতাম। সেখানে প্রতি দিন ২০ টাকা করে পেতাম।’’
০৯২০
হর্ষবর্ধনের কথায়, ‘‘আমার প্রথম সংগ্রাম ছিল প্রতি দিন কম টাকায় খাবার খুঁজে বার করা। তার পর একটি সুলভ শৌচালয় খুঁজে বার করতে হত। ওই শৌচালয়ের সাবানে অন্য কারও চুল আটকে থাকত। আমি যেখানে থাকতাম সেখানে চার-পাঁচ জন পরিশ্রমী মানুষ থাকতেন। ঘরে দুর্গন্ধের সমস্যা ছিল। আমার কাছে কোনও সুগন্ধি ছিল না। আমার মনে আছে যখন অভিনয় থেকে আমি প্রথম উপার্জন শুরু করি, তখন আমি একটি সুগন্ধি কিনেছিলাম। নামী জায়গায় খাবারও খেয়েছিলাম।”
১০২০
তবে দিল্লির ভাত বেশি দিন পেটে পড়েনি হর্ষবর্ধনের। মুম্বই চলে যান তিনি। তবে মুম্বই গিয়ে বিশেষ বসে থাকতে হয়নি অভিনেতাকে। শহরে পা দিয়ে ‘লেফট রাইট লেফট’ নামে একটি টেলিভিশন শোতে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি।
১১২০
হর্ষবর্ধন যখন টেলিভিশনে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পান, তখন তাঁর বয়স প্রায় ২৪। অর্থাৎ, বাড়ি থেকে বেরোনোর প্রায় ৮ বছর পর অভিনয়ের জন্য প্রথম পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন তিনি।
১২২০
টেলিভিশনে কাজ করার দু’বছর পর ২০১০ সালে হর্ষবর্ধনের প্রথম ছবি বড়পর্দায় মুক্তি পায়। তেলুগু সেই ছবির নাম ছিল ‘থাকিতা থাকিতা’। এর পর রানা দগ্গুবাতি এবং জেনেলিয়া দেশমুখের সঙ্গে ‘না ইশতাম’-এ কাজ করেন তিনি।
১৩২০
এর পরেই বিভিন্ন পরিচালকের নজরে পড়ে যান হর্ষবর্ধন। একের পর এক তেলুগু ছবিতে কাজের সুযোগ আসতে থাকে তাঁর কাছে। বছরে কমপক্ষে হর্ষবর্ধনের দু’টি করে ছবি মুক্তি পেতে শুরু করে।
১৪২০
২০১৬ সালে বলিউডে প্রবেশ করেন হর্ষবর্ধন। হর্ষবর্ধন এবং পাক অভিনেত্রী মাওরা হোসেন অভিনীত সেই ছবির নাম ছিল ‘সনম তেরি কসম’। ছবিটি দর্শকের থেকে এতটাই ভালবাসা পায় যে, আর ফিরে তাকাতে হয়নি হর্ষবর্ধনকে।
১৫২০
‘সনম তেরি কসম’ হর্ষবর্ধনের কেরিয়ারের অন্যতম সফল ছবি। প্রাথমিক ভাবে ছবিটি বক্স অফিসে সাফল্যের মুখ না দেখলেও ছবিটি যখন পুনরায় মুক্তি পায়, তখন সেটি বিশ্বব্যাপী ৫৩ কোটি টাকা আয় করে।
১৬২০
তবে হর্ষবর্ধনের কেরিয়ারের সবচেয়ে বড় হিট সদ্যমুক্তি পাওয়া ‘এক দিওয়ানি কি দিওয়ানিয়াত’ ছবিটি। ১০০ কোটির ব্যবসা করেছে ছবিটি।
১৭২০
২১ অক্টোবর মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটি ইতিমধ্যেই বক্স অফিসে ১০১ কোটি টাকা আয় করেছে। মিলাপ জাভেরি পরিচালিত এই ছবিতে হর্ষবর্ধন ছাড়াও রয়েছেন সোনম বাজওয়া, শাদ রন্ধাওয়া এবং শচীন খেড়কর।
১৮২০
অভিনয় ছাড়াও অনেক দিন ধরেই বিভিন্ন জনহিতকর কাজের সঙ্গে যুক্ত হর্ষবর্ধন। কোভিডের সময় অভাবীদের জন্য অক্সিজেন কনসেনট্রেটর কিনতে নিজের বাইক বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।
১৯২০
বাইকের বেশ কয়েকটি ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের বিনিময়ে আমার মোটরসাইকেলটি বিক্রি করছি। আমরা যাতে একসঙ্গে কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অভাবী মানুষদের পাশে দাঁড়াতে পারি, তাই এই সিদ্ধান্ত। হায়দরাবাদে ভাল অক্সিজেন কনসেনট্রেটর খুঁজে পেতে আমাকে সাহায্য করুন।’’
২০২০
একটি দাতব্য সংস্থাও রয়েছে অভিনেতার। মূলত বিভিন্ন ছবিতে যে জামাকাপড়গুলি পরে তিনি অভিনয় করেন, সেগুলি বিক্রি করে পাওয়া টাকা দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ান তিনি। ২০১৫ সাল থেকে ওই কাজ করে আসছেন হর্ষবর্ধন।