Advertisement
০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
Carroll A. Deering

রান্না করা খাবারে ভর্তি কেবিন, নেই কর্মী, জিনিসপত্র, উদ্ধার শুধু এক রহস্যময় বিড়াল! ভয় ধরাবে ক্যারল ডিয়ারিং জাহাজের গল্প

২৫৫ ফুট লম্বা এবং ১,৮৭৯ টন ওজন, পাঁচ মাস্তুলযুক্ত জাহাজটি পণ্য পরিবহণে জনপ্রিয়তা লাভ করে। তবে চালু হওয়ার মাত্র দু’বছর পরে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে জাহাজটির সঙ্গে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২৫ ১৬:৩৫
Share: Save:
০১ ২১
ship

ক্যারল এ ডিয়ারিং। ১৯১৯ সালে চালু হওয়া পণ্যবাহী জাহাজটি বেশি পরিচিত ছিল ক্যারল ডিয়ারিং নামেই। ক্যারল ডিয়ারিং যখন আত্মপ্রকাশ করে তখন ইস্পাতের তৈরি জাহাজে সমুদ্র ছেয়ে গিয়েছে। কিন্তু সে বাজারেও ক্যারল ডিয়ারিং তৈরি হয়েছিল কাঠ দিয়ে। জাহাজটি ছিল বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য নির্মিত কাঠের পালতোলা জাহাজগুলির মধ্যে অন্যতম।

০২ ২১
ship

ক্যারল ডিয়ারিং জাহাজটি তৈরি করেছিল আমেরিকার মেইনে স্টেটের জাহাজ প্রস্তুতকারী সংস্থা জি.জি. ডিয়ারিং। সংস্থার মালিক গার্ডিনার জি. ডিয়ারিংয়ের কনিষ্ঠ পুত্রের নামে জাহাজটির নাম দেওয়া হয়েছিল।

০৩ ২১
ship

২৫৫ ফুট লম্বা এবং ১,৮৭৯ টন ওজনের পাঁচ মাস্তুলযুক্ত জাহাজটি খুব শীঘ্রই পণ্য পরিবহণে জনপ্রিয়তা লাভ করে। তবে চালু হওয়ার মাত্র দু’বছর পরে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে জাহাজটির সঙ্গে।

০৪ ২১
ship

উত্তর ক্যারোলিনার কেপ হ্যাটেরাসে জনপ্রিয় জাহাজটি উদ্ধার হয়। জাহাজটির সঙ্গে ঠিক কী হয়েছিল তা আজও রহস্য। শেষমেশ ভূতু়ড়ে জাহাজের তকমা পায় ক্যারল এ ডিয়ারিং। কিন্তু কেন? কী ঘটেছিল সেই জাহাজের সঙ্গে?

০৫ ২১
ship

ডিয়ারিঙের শেষ যাত্রা শুরু হয় ১৯২০ সালের ২ ডিসেম্বর। রিয়ো ডি জেনেইরোয় কয়লার একটি চালান সফল ভাবে পৌঁছে দেওয়ার পর ব্রাজ়িল থেকে ক্যাপ্টেন ডব্লিউ বি ওয়ার্মেল-সহ ১২ জন কর্মীকে নিয়ে যাত্রা শুরু করে ক্যারল।

০৬ ২১
ship

জাহাজটি বার্বাডোজ়ে থেমেছিল। সেখানে ক্যাপ্টেন ওয়ার্মেল তাঁর বন্ধু এবং জাহাজের এক সহ-ক্যাপ্টেনকে বলেছিলেন যে, জাহাজকর্মীদের কেউ কেউ বিদ্রোহের ষড়যন্ত্র করছেন বলে আভাস পেয়েছেন তিনি। তবুও জাহাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ভার্জিনিয়ার হ্যাম্পটন রোডসের দিকে যাত্রা শুরু করে ক্যারল।

০৭ ২১
people

এর পর ১৯২১ সালের ২৯ জানুয়ারি, উত্তর ক্যারোলিনার উপকূলে ‘কেপ লুকআউট লাইট স্টেশন’-এর লাইটশিপ অতিক্রম করার সময় ক্যারল ডিয়ারিং জাহাজের দেখা মেলে। কেপ লুকআউট-এর কর্মীরা নাকি দেখেছিলেন যে, ক্যারলে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়েছে। জাহাজের ডেকে অস্থির ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন জাহাজের কর্মীরা।

০৮ ২১
sea

মেগাফোন ব্যবহার করে জাহাজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কেপ লুকআউটের কর্মীরা দেখেন, জাহাজে যিনি ফোন ধরেছেন, তিনি ইংরেজিতে নয়, অন্য ভাষায় কথা বলছিলেন।

০৯ ২১
ship

পরের দিন অর্থাৎ, ৩০ জানুয়ারি বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে পালতোলা ক্যারলের শেষ দেখা মেলে। ‘ডায়মন্ড শোলস লাইট স্টেশন’-এর দক্ষিণ-পশ্চিমে দেখা গিয়েছিল জাহাজটিকে।

১০ ২১
ship

বলা হয়, জাহাজটি অদ্ভুত ভাবে এগিয়ে যাচ্ছিল। তার পরেই নিখোঁজ হয় সেটি। কিন্তু ক্যারল ডিয়ারিঙের অন্তর্ধান রহস্য সমাধান হয় এক দিনেই। এক দিন পরে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় জাহাজটি।

১১ ২১
sea

১৯২১ সালের ৩১ জানুয়ারি সকালে উত্তর ক্যারোলিনার উপকূলে ঝড়় উঠেছিল। দৃশ্যমানতা কম থাকা সত্ত্বেও, মার্কিন উপকূলরক্ষী বাহিনীর এক সদস্য কেপ হ্যাটেরাসে একটি বিশাল কাঠের জাহাজ ডুবে থাকতে দেখেন। পালগুলিও অচল হয়ে পড়েছিল।

১২ ২১
ship

কেপ হ্যাটেরাসের আশপাশের অগভীর জলে কোনও জাহাজ ডুবে যাওয়া স্বাভাবিক ছিল না, বিশেষ করে ঢেউয়ের নীচে ‘ডায়মন্ড শোলস’ নামে বালির স্তূপে জাহাজ আটকে যাওয়ার ঘটনা আগেও ঘটেছিল। একই সঙ্গে ওই অঞ্চলের কুখ্যাত ঝোড়ো আবহাওয়ার কারণেও বেশ কয়েকটি জাহাজডুবি হয়েছিল। তা হলে রহস্য কোথায়?

১৩ ২১
ship

ঝোড়ো আবহাওয়ার কারণে বাধা পেয়ে অবশেষে ১৯২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ক্যারল ডিয়ারিঙে ওঠে উপকূলরক্ষী বাহিনী। কিন্তু জাহাজে উঠে বাহিনীর সদস্যেরা যা দেখেন, তা দেখে চমকে যান।

১৪ ২১
ship

উপকূলরক্ষী বাহিনী দেখে ক্যারল ডিয়ারিং জাহাজে মানুষের কোনও চিহ্ন নেই। জীবন্ত বা মৃত অবস্থায় জাহাজের এক জন কর্মীরও খোঁজ মেলেনি। কিন্তু তাঁরা দেখেন, জাহাজের রান্নাঘরে খাবার সাজানো রয়েছে সুন্দর ভাবে। মাংস এবং মটরশুঁটির স্যুপের গন্ধে মম করছিল পরিত্যক্ত জাহাজটি। এমনকি এক পাত্র কফিও রয়েছে। দেখে মনে হচ্ছিল যেন জাহাজের কর্মীরা খাবার খেতে বসে উঠে চলে গিয়েছেন কোথাও।

১৫ ২১
cat

রহস্য আরও বাড়ে যখন উপকূলরক্ষী বাহিনী জাহাজের মধ্যে শুধুমাত্র একটি বিড়ালকে খুঁজে পান। অদ্ভুত ভাবে বিড়ালটির একটি পায়ে ছ’টি আঙুল ছিল। সেই বিড়ালটি কার বা কী ভাবে জাহাজে এল, তার উত্তর মেলেনি।

১৬ ২১
ship

পাশাপাশি, উপকূলরক্ষী বাহিনী দেখে জাহাজের বেশির ভাগ অংশ ঠিকঠাকই ছিল। শুধু ক্যাপ্টেন ওয়ার্মেলের ঘর এলোমেলো অবস্থায় ছিল। ২৩ জানুয়ারি জাহাজের লগবুকে ওয়ার্মেলের ‘এন্ট্রি’ বন্ধ হয়ে যায়। তার পর থেকে সেই লগবুকে অন্য এক জনের হাতের লেখা মেলে। লেখাটি কার? জানা যায়নি।

১৭ ২১
ship

জাহাজ থেকে উল্লেখযোগ্য কোনও জিনিস উদ্ধার হয়নি। জাহাজের মধ্যে কর্মীদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র, গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম বা নথিপত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি। খুঁজে পাওয়া যায়নি লাইফবোট এবং জাহাজের নোঙরও।

১৮ ২১
sea

উপকূলরক্ষী বাহিনী দেখে কাঠের জাহাজটি বালির মধ্যে ১৪ ফুট গভীরে ঢুকে গিয়েছে। যেন কেউ প্রচণ্ড শক্তি দিয়ে টেনে সেটিকে বালির মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছে।

১৯ ২১
ship

এর পরেই প্রশ্ন ওঠে ক্যারলের কর্মীদের সঙ্গে তা হলে কী হয়েছিল? জাহাজটিকে এত ভাল অবস্থায় রেখে কোথায় উধাও হয়ে গেলেন তাঁরা? বিড়ালটিই বা কোথা থেকে এল? ক্যাপ্টেনের জায়গায় কে লিখেছিলেন জাহাজের লগবুকে? সে সব প্রশ্নের উত্তর আজও অধরা। অনেক অনুসন্ধান সত্ত্বেও সেই জাহাজের কর্মীদের আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। উদ্ধার হয়নি কোনও দেহ।

২০ ২১
ship

তবে এই নিয়ে অনেক তত্ত্ব রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম, ক্যাপ্টেনের বিরুদ্ধে জাহাজের কর্মীদের বিদ্রোহ ঘোষণা। অনেকে এ-ও মনে করেন, ওই জাহাজে হামলা চালিয়েছিল জলদস্যুরা। বন্দি করা হয়েছিল ক্যাপ্টেন-সহ জাহাজের বাকি কর্মীদের।

২১ ২১
ship

বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের খুব কাছ দিয়ে যাত্রা করেছিল ক্যারল ডিয়ারিং। অনেকে মনে করেন, তার প্রভাবেই উধাও হয়ে গিয়েছিলেন জাহাজের কর্মীরা। তবে অনেকে মনে করেন জাহাজে ভূতের উপদ্রব দেখা দিয়েছিল এবং ভূতেরাই কর্মীদের হাপিস করে জাহাজটিকে ওই অবস্থায় ছেড়ে রেখে গিয়েছিল।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy