All need to know about Mohini Mohan Dutta who may get 500 crore rupees from Ratan Tata’s will dgtl
Mohini Mohan Dutta
রতন টাটার উইলে নাম ‘বহিরাগতের’! সম্পত্তির ৫০০ কোটি পাবেন মোহিনীমোহন দত্ত, কে তিনি?
সম্প্রতি রতন টাটার উইল থেকে এমন একটি নাম প্রকাশ্যে এসেছে, যার জন্য মনে করা হচ্ছে শিল্পপতির সম্পত্তির বণ্টন নিয়ে বিরোধ তৈরি হতে পারে। সেই নাম মোহিনীমোহন দত্তের। তিনি টাটা গোষ্ঠীর প্রাক্তন কর্মী এবং প্রয়াত শিল্পপতির আস্থাভাজন।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:৫১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২১
গত বছরের ৯ অক্টোবর ভারতের শিল্পজগতে নক্ষত্রপতনের দিন। ৮৭ বছর বয়সে মৃত্যু হয় ভারতীয় শিল্পপতি রতন টাটার। এর পর সাধারণের মনে দানা বাঁধে অন্য প্রশ্ন। রতন নওল টাটার ব্যক্তিগত সম্পত্তির মালিক কে হবেন, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয় আমজনতার।
০২২১
টাটা সাম্রাজ্যের একদা অধীশ্বরের কোনও সন্তান বা উত্তরাধিকারী ছিলেন না। অকৃতদার রতন টাটা মারা যাওয়ার পর তাঁর সম্পত্তির কী হবে তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়।
০৩২১
পার্সি ধনপতির মোট সম্পত্তির পরিমাণ কয়েক হাজার কোটি টাকা। সংবাদমাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে মৃত্যুর পরে তাঁর এই বিশাল সম্পত্তি কার হাতে উঠবে তা উইল করে আগে থেকেই ঠিক করে গিয়েছিলেন রতন। সেই উইল কার্যকর করার গুরুদায়িত্ব সঁপেছিলেন খুব ঘনিষ্ঠ কয়েক জনের হাতে।
০৪২১
রতন টাটার ইচ্ছাপত্র প্রকাশ্যে আসার পর জানা যায় কার জন্য কী রেখে গিয়েছেন রতন টাটা। দেখা যায়, পোষ্য, সহচর, রাঁধুনি— তাঁর উইল থেকে বাদ পড়েননি কেউই। জনহিতকর কাজের জন্যও টাকা রেখে গিয়েছেন তিনি।
০৫২১
কিন্তু সম্প্রতি রতন টাটার উইল থেকে এমন একটি নাম প্রকাশ্যে এসেছে, যার জন্য মনে করা হচ্ছে শিল্পপতির সম্পত্তির বণ্টন নিয়ে বিরোধ তৈরি হতে পারে। সেই নাম মোহিনীমোহন দত্তের। তিনি জামশেদপুরের এক ব্যবসায়ী, টাটা গোষ্ঠীর প্রাক্তন কর্মী এবং প্রয়াত শিল্পপতির আস্থাভাজন।
০৬২১
সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইকোনমিক টাইম্স’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, জামশেদপুরের ওই ব্যবসায়ীর নামে ৫০০ কোটি টাকা রেখে গিয়েছেন রতন টাটা। আর তা নিয়েই টাটা পরিবার এবং রতন টাটার ঘনিষ্ঠেরা নাকি বিস্মিত।
০৭২১
প্রতিবেদন অনুযায়ী, রতন টাটার উইল ঠিক করে কার্যকর হচ্ছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব যাঁদের কাছে ছিল, তাঁরাও নাকি বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট অবাক।
০৮২১
উইল অনুযায়ী, ৭৪ বছর বয়সি মোহিনীমোহন রতন টাটার অবশিষ্ট সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ পাবেন। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাঙ্কে জমা থাকা ৩৫০ কোটিরও বেশি টাকা এবং রতন টাটার ব্যক্তিগত সংগ্রহে থাকা ছবি ও ঘড়ি বিক্রির আয়।
০৯২১
সম্পত্তির বাকি দুই-তৃতীয়াংশ রতন টাটার দুই সৎবোন শিরিন জেজীভোয় এবং ডিনা জেজীভোয় পাবেন। টাটা গোষ্ঠী এবং তার বাইরে অন্যান্য সংস্থায় থাকা শিল্পপতির শেয়ার-সহ শিল্পপতির মূল সম্পদের সিংহভাগ তাঁর দু’টি ফাউন্ডেশনের জন্য রেখে গিয়েছেন তিনি।
১০২১
অন্য দিকে, মোহিনীমোহন ইতিমধ্যেই রতন টাটার সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ গ্রহণ করবেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি নাকি মনে করছেন যে, ওই সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা হওয়া উচিত ছিল।
১১২১
মোহিনীমোহনের সেই দাবি নাকি রতন টাটার সম্পত্তির কিছু অংশীদারের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। কারণ, প্রয়াত শিল্পপতির একটি সম্পত্তির আনুষ্ঠানিক মূল্যায়ন এখনও হয়নি।
১২২১
পাশাপাশি, বোম্বে হাই কোর্টে রতন টাটার উইলের প্রোবেট (একটি আইনি প্রক্রিয়া, যেখানে আদালত এক জন মৃত ব্যক্তির সম্পদ এবং ঋণ সংক্রান্ত নথি খতিয়ে দেখে) প্রক্রিয়া হওয়া এখনও বাকি।
১৩২১
‘দ্য ইকোনমিক টাইম্স’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, টাটা গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত অনেকেই জানিয়েছেন যে, রতন টাটার মোট সম্পত্তি থেকে তাঁর ভাই জিমি টাটা পেয়েছেন ৫০ কোটির সম্পত্তি। তবে সৎভাই নোয়েল টাটা এবং তাঁর সন্তানদের নাম উইলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
১৪২১
সম্পত্তির অংশীদারদের একাংশ নাকি রতন টাটার উইলে মোহিনীমোহনের মতো এক জন ‘বহিরাগতের’ নাম থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
১৫২১
মোহিনীমোহনের সঙ্গে রতন টাটার যোগাযোগ কী ভাবে? তাঁর পরিবারের ঘনিষ্ঠেরাও নাকি মোহিনীমোহনকে সে ভাবে চেনেন না। প্রতিবেদন অনুযায়ী, রতন টাটা এবং মোহিনীমোহনের আলাপ জামশেদপুরে। সেখানেই দু’জনের মধ্যে বন্ধুত্ব গাঢ় হয়।
১৬২১
পরবর্তীতে মোহিনীমোহনের কর্মজীবন এবং ব্যবসায়িক উদ্যোগকেও সমর্থন করেছিলেন ভারতীয় শিল্পপতি। মোহিনীমোহনের দাবি, রতন টাটার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক দীর্ঘ ছয় দশকের।
১৭২১
শিল্পপতির শেষকৃত্যের পর তিনি বলেছিলেন, ‘‘রতন টাটার যখন ২৪ বছর বয়স, তখন জামশেদপুরের ডিলার্স হোস্টেলে আমাদের প্রথম দেখা হয়। উনি আমাকে সাহায্য করেছিলেন এবং আমাকে গড়ে তুলেছিলেন।’’
১৮২১
‘স্ট্যালিয়ন ট্র্যাভেল এজেন্সি’ নামে একটি ভ্রমণ সংস্থার মালিক ছিলেন মোহিনী। তবে তার আগে তিনি টাটা তাজের হয়ে কাজ করতেন। পরের দিকে তাজের ভ্রমণ বিভাগের সঙ্গে মিলে কাজ করত মোহিনীমোহনের ওই সংস্থা। টাটা ক্যাপিটাল পরবর্তীতে সংস্থাটিকে অধিগ্রহণ করে এবং পরে টমাস কুকের কাছে ব্যবসা বিক্রি করে দেয়। তবে এখনও মোহিনীমোহন সেই সংস্থার ডিরেক্টর।
১৯২১
টাটাদের সঙ্গে যুক্ত প্রবীণ ব্যক্তিদের অনেকেই নাকি জানিয়েছেন, মোহিনীমোহন প্রায়ই নিজেকে রতন টাটার দত্তক পুত্র হিসাবে দাবি করতেন। যদিও, উইল এবং বিভিন্ন নথি থেকে স্পষ্ট যে রতন টাটা কখনওই বিয়ে করেননি বা আইনত কোনও সন্তান দত্তক নেননি।
২০২১
রতন টাটার জীবনে মোহিনীমোহনের কী এমন গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল যে, তাঁর নামে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি রেখে গিয়েছেন শিল্পপতি? আপাতত সেই প্রশ্নই ঘুরছে বিভিন্ন মহলে। যেখানে ভাইয়ের নামে ৫০ কোটি টাকার সম্পত্তি, সেখানে কী করে মোহিনীমোহন ৫০০ কোটি পেলেন? উঠছে সেই প্রশ্নও। ‘রহস্যময়’ মোহিনীমোহনকে নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যেও।
২১২১
তবে টাটা গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ রয়েছে এমন অনেকেই দাবি করেছেন মোহিনীমোহন এবং টাটা পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক স্পষ্ট। রতন টাটার আস্থাভাজন ছিলেন মোহিনীমোহন। মোহিনীমোহনের কন্যা প্রায় ১০ বছর টাটা ট্রাস্টে কাজ করেছেন। তার আগে তাজ হোটেলেও কাজ করেছিলেন তিনি। গত বছরের ডিসেম্বরে মুম্বইয়ের রতন টাটার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মোহিনীমোহন।