Aruna Irani Talks About Breast Cancer, Rekha cut her scenes, Refused to Perform Intimate Scene with Rishi Kapoor dgtl
Bollywood Gossip
অভিনেতার সঙ্গে পরকীয়া, ঋষি কপূরের সঙ্গে নগ্ন দৃশ্যে অভিনয় করতে চাননি, ছবি থেকে নায়িকাকে বাদ দিয়েছিলেন রেখা
রেখাকে প্রশ্ন করায় তিনি নাকি অভিনেত্রীকে বলেছিলেন, ‘‘তুমি যে চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলে, সে চরিত্রে দম ছিল। তুমি যদি দুর্দান্ত অভিনয় করতে তা হলে আর ছবিতে আমার অভিনয় কেউ দেখত না। তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’’
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২৫ ১০:২৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৩
সত্তর থেকে আশির দশকে হিন্দি ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করে নজর কেড়েছিলেন নায়িকা। তবুও তাঁকে নিয়ে নাকি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেন রেখার মতো বলিপাড়ার জনপ্রিয় অভিনেত্রী। নায়িকাকে নাকি হিংসা করতেন তিনি। এমনকি, একটি ছবি থেকে নায়িকাকে বাদই দিয়ে দিয়েছিলেন রেখা। বিবাহিত অভিনেতার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে সমালোচনার শিকারও হয়েছিলেন বলি নায়িকা অরুণা ইরানি।
০২২৩
১৯৬১ সালে শিশু অভিনেত্রী হিসাবে বড় পর্দায় অরুণার প্রথম অভিনয় ‘গঙ্গা যমুনা’ ছবিতে। হিন্দি ভাষার ছবির পাশাপাশি কন্নড়, গুজরাতি এবং মরাঠি ভাষার ছবি মিলিয়ে পাঁচশোরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। অরুণার অভিনয় দেখা গিয়েছে ছোট পর্দায়ও। যে নায়িকার কেরিয়ারের ঝুলিতে এত ছবি, তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও জলঘোলা হয়েছে মারাত্মক।
০৩২৩
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের অনেক অজানা কথা নিয়ে আলোচনা করেন অরুণা। রেখার সঙ্গে যে তাঁর ভাল বন্ধুত্ব ছিল তা উল্লেখ করেন অরুণা। ‘ঔরত ঔরত ঔরত’, ‘কশমকশ’, ‘ভগবান দাদা’ নামের একাধিক হিন্দি ছবিতে একসঙ্গে অভিনয় করেছেন রেখা এবং অরুণা। অধিকাংশ ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতেন অরুণা। তবুও অল্প সময়ের মধ্যেই অভিনয়দক্ষতার মাধ্যমে সকলের প্রশংসা কুড়োতেন তিনি। তা দেখেই নাকি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেন রেখা।
০৪২৩
‘ঔরত ঔরত ঔরত’ ছবিতে দুর্দান্ত চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন অরুণা। কিন্তু সেই চরিত্রের দিকে নজর দিয়েছিলেন রেখা। সাক্ষাৎকারে অরুণা বলেন, ‘‘এমন চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পাওয়ার জন্য অনেকে স্বপ্ন দেখেন। আমিও নিজের সেরা পারফরম্যান্স দেওয়ার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু রেখা বার বার বলত যে, আমার চরিত্র অনেক ভাল। ছবি থেকে আমার অনেক দৃশ্যে ওর কথায় কাঁচি চালানো হয়েছিল।’’
০৫২৩
অরুণা জানান যে, ‘ঔরত ঔরত ঔরত’ ছবির শুটিং শেষ করে মুক্তি পেতেই ছ’বছর সময় লেগে গিয়েছিল। ছবিমুক্তির পর তিনি দেখতে পান যে, তাঁর অভিনীত অধিকাংশ দৃশ্য ছবি থেকে বাদ পড়ে গিয়েছে। শুধু ছবি থেকে দৃশ্য বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রেই নয়, রেখা নাকি অরুণাকে একটি ছবি থেকেই বাদ দিয়ে দিয়েছিলেন।
০৬২৩
১৯৮১ সালে রেখা অভিনীত ‘মঙ্গলসূত্র’ নামের একটি হিন্দি ছবি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। অরুণার দাবি, এই ছবিতে একটি ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন তিনি। ছবিনির্মাতারা তাঁকে অগ্রিম টাকাও দিয়ে ফেলেছিলেন। পরে তিনি জানতে পারেন যে, ছবি থেকে তাঁর চরিত্রটিই বাদ পড়ে গিয়েছে।
০৭২৩
‘মঙ্গলসূত্র’ ছবি থেকে হঠাৎ কেন তাঁর চরিত্র বাদ পড়ল তা জানতে চান অরুণা। খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন যে, রেখা নাকি অরুণাকে ছবি থেকে বাদ দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন ছবিনির্মাতাদের কাছে। পরে তিনি এই প্রসঙ্গে রেখাকে সরাসরি প্রশ্ন করেছিলেন।
০৮২৩
রেখাকে প্রশ্ন করায় তিনি নাকি অরুণাকে বলেছিলেন, ‘‘তুমি যে চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলে, সে চরিত্রে দম ছিল। তুমি যদি দুর্দান্ত অভিনয় করতে তা হলে আর ছবিতে আমার অভিনয় কেউ দেখত না। তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’’ অরুণা জানান, তাঁর পেশাগত জীবনে রেখা মাঝেমধ্যে বাধা হয়ে দাঁড়ালেও তিনি অভিনেত্রীর প্রতি কোনও রাগ পুষে রাখেননি।
০৯২৩
১৯৭৩ সালে রাজ কপূরের পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘ববি’। এই ছবি মুক্তির পর ঋষি কপূর এবং ডিম্পল কপাডিয়ার জুটি বিপুল প্রশংসা অর্জন করে। এই ছবির এক দৃশ্যে ঋষির সঙ্গে অভিনয়ের কথা ছিল অরুণার। কিন্তু সেই দৃশ্যে অভিনয় করতে আপত্তি জানিয়েছিলেন অরুণা।
১০২৩
ঋষি নগ্ন অবস্থায় গামছা দিয়ে চুল মুছতে মুছতে অরুণার দিকে এগিয়ে আসবেন— ‘ববি’ ছবিতে এই দৃশ্যে দু’জনের অভিনয়ের কথা ছিল। কিন্তু পরিচালকের কাছে গিয়ে আপত্তি জানিয়ে অরুণা বলেছিলেন, ‘‘আমি ঋষির সঙ্গে নগ্ন দৃশ্যে অভিনয় করতে চাই না।’’ অরুণার কথা শুনে রাজ বলেছিলেন, ‘‘তুমি শুধু খারাপ জিনিসই ভাবো কেন? ভাল জিনিসের উপর মন দাও। দেখবে সব ঠিকঠাক থাকবে।’’
১১২৩
রাজের কথা শুনে বাধ্য হয়ে ঋষির সঙ্গে শুট করেছিলেন অরুণা। তবে শুটিংয়ের সময় কোনও সমস্যা হয়নি। পরে ঋষি নাকি অরুণাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘‘ছবিতে তো আমায় নগ্ন হতে হয়েছিল। তুমি কেন এত আপত্তি জানিয়েছিলে?’’ পরে অরুণা অবশ্য স্বীকার করেছিলেন যে, ঋষির সঙ্গে সেই দৃশ্যে অভিনয় করতে তিনি আসলে লজ্জা পাচ্ছিলেন।
১২২৩
কৌতুকাভিনেতা মেহমুদের সঙ্গে বহু ছবিতে কাজ করেছেন অরুণা। কাজের সূত্রে মেহমুদের সঙ্গে অভিনেত্রীর পরিচয় হলেও সেই বন্ধুত্ব প্রেমের সম্পর্কে পরিণত হয়। কিন্তু সেই সময় বিবাহিত ছিলেন মেহমুদ। অরুণা এবং মেহমুদের পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে বলিপাড়ায় বিতর্ক শুরু হয়। তবে, মেহমুদের সঙ্গে সম্পর্ক বেশি দিন টেকেনি অরুণার।
১৩২৩
অরুণা এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন যে, তাঁর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন মেহমুদ। তিনি অরুণার জীবনে এমন বদল এনেছিলেন যে, এক সময় অভিনেত্রী মনে করতে শুরু করেছিলেন যে, ঈশ্বর মেহমুদকে তাঁর জীবনে দূত হিসাবে পাঠিয়েছেন। অরুণা বলেছিলেন, ‘‘আমি বুঝতেই পারিনি কখন মেহমুদকে ভালবেসে ফেলেছিলাম। ও যে বিবাহিত তা আমি জানতাম। আমরা যে কখনও বিয়ে করতে পারব না, তা-ও বুঝতে পেরেছিলাম। তাই আমাদের সম্পর্ক বেশি দূর এগোয়নি। ও আমার জীবনে বন্ধুর চেয়েও বেশি ছিল।’’
১৪২৩
বলিপাড়ার জনশ্রুতি, ‘বম্বে টু গোয়া’ ছবিতে অরুণাকে কাজ পাইয়ে দিয়েছিলেন মেহমুদ। কিন্তু মেহমুদ যেমন তাঁর কেরিয়ার গড়ে তুলেছিলেন, তেমনই তাঁর কেরিয়ার নষ্টও করেছিলেন অভিনেতা। এমনটাই দাবি অরুণার। ‘বম্বে টু গোয়া’ ছবি মুক্তির পর বলিপাড়ায় রটে যায় যে, তিনি মেহমুদকে বিয়ে করেছেন। অরুণাকে নিয়ে সমালোচনাও শুরু হয়ে যায় চারদিকে।
১৫২৩
কানাঘুষো শোনা যায় যে, অরুণার সঙ্গে মেহমুদের সম্পর্কের কথা জানাজানি হলে মেহমুদের বাড়ি থেকে অভিনেত্রীর সঙ্গে মেলামেশায় দাঁড়ি টানার নির্দেশ দেওয়া হয়। স্ত্রীর নির্দেশ মেনে অরুণার সঙ্গে নাকি কাজ করা বন্ধ করে দেন মেহমুদ। তার পরেই অরুণার কেরিয়ারের রেখচিত্র নিম্নগামী হতে শুরু করে।
১৬২৩
অরুণার দাবি, মেহমুদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের পর কোনও ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পাচ্ছিলেন না তিনি। ১৯৯০ সালে পরিচালক কুকু কোহলিকে বিয়ে করেন অরুণা। কুকু-কে বিয়ে করার পরেও কম কথা শুনতে হয়নি তাঁকে। কুকু সেই সময় বিবাহিত ছিলেন। কুকু-কে বিয়ে করলেও অরুণার এই বিয়ে থেকে কোনও সন্তান হয়নি। বিয়ের পর দত্তক নিয়েছিলেন অরুণা।
১৭২৩
অরুণা বলেন, ‘‘প্রথম বিয়ে থেকে সন্তান হয়নি বলে আমার বাবা দ্বিতীয় বার বিয়ে করেছিল। আমি বাবার দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান। কিন্তু তাঁকে বাবা বলে ডাকার অনুমতি ছিল না। মা বকাবকি করতেন খুব। আমি চাইনি আমার সন্তানও এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হোক।’’ কুকু-র সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা করেন অরুণা।
১৮২৩
সাক্ষাৎকারে অরুণা বলেন, ‘‘আমি এক এক সময় ভাবতাম অন্য কাউকে বিয়ে করে সংসার করি। কিন্তু কুকু-র আপত্তি ছিল। আসলে, মানুষ মাঝেমাঝে জেনেশুনে এমন এক গলিতে ঢুকে পড়ে যার কোনও শেষ নেই। একমুখী পথে মানুষ শুধু একা একা হেঁটেই যাই। গলি থেকে বেরোনোর হাজার চেষ্টা করলেও বেরোনো যায় না। আগামীর জন্য কী যন্ত্রণা লেখা রয়েছে তা আর মাথায় আসে না। ক্ষণিকের সুখই তখন সত্য হয়ে ওঠে।’’
১৯২৩
অরুণা এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, কুকু-র প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তিনি পরিচালকের সঙ্গে তাঁর বিবাহিত সম্পর্ক নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করতেন। তার আগে তিনি কাউকে জানতে দিতেন না যে, তিনি বিবাহিত। এমনকি, পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে মহিলাদের সাধারণত কী ধারণা থাকে সেই প্রসঙ্গে আলোচনা করতেও বাকি রাখেননি অরুণা।
২০২৩
সাক্ষাৎকারে অরুণা বলেছিলেন, ‘‘কোনও বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে থাকলে ওই পুরুষের স্ত্রী সব সময় অপর মহিলাকে দোষারোপ করেন। যেন ওই মহি…
২১২৩
পর পর দু’বার স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন অরুণা। শুটিং করতে করতে হঠাৎ অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেছিলেন তিনি। পরে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে তিনি জানতে পেরেছিলেন যে, স্তনে টিউমার রয়েছে। অস্ত্রোপচার করিয়ে তা বাদ দেওয়ার পর চিকিৎসকেরা তাঁকে কেমোথেরাপির পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু অরুণা তাঁদের কথা শোনেননি।
২২২৩
কেমোথেরাপি করার পর চুল উঠে গেলে কী ভাবে অভিনয় করবেন সে কথা চিন্তা করে ওষুধ খেয়েই রোগ নিরাময়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অরুণা। কিন্তু ২০২০ সালের মার্চ মাসে আবার স্তন ক্যানসার ধরা পড়েছিল অভিনেত্রীর। তার পর কেমোথেরাপি নিয়েই সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। অরুণার যখন ৬০ বছর বয়স, তখন তাঁর ডায়াবিটিস ধরা পড়ে। কিডনিরও সমস্যা রয়েছে তাঁর।
২৩২৩
চলতি বছরের অগস্ট মাসে ৭৯ বছরে পা দেবেন অরুণা। ২০১৯ সালের পর আর ছোট পর্দায় দেখা যায়নি তাঁকে। তবে বড় পর্দায় এখনও অভিনয় চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। চলতি বছরের মে মাসে ‘কেসরী বীর’ নামের একটি হিন্দি ছবি মুক্তি পাওয়ার কথা। সেই ছবিতে অভিনয় দেখা যাবে অরুণার।