India is not keen to buy F-35 stealth fighter jets may cause tariff row with US President Donald Trump dgtl
F-35 Stealth Fighter Jets
‘এফ-৩৫’ লড়াকু জেট কিনতে চাপ দেয় ওয়াশিংটন, মাথা নোয়ায়নি নয়াদিল্লি! তাই কি শুল্ক-সাজায় ক্ষমতা জাহির ট্রাম্পের?
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পাশে দাঁড়িয়ে স্টেল্থ শ্রেণির পঞ্চম প্রজন্মের ‘এফ-৩৫’ যুদ্ধবিমান ভারতকে বিক্রির সরাসরি ইঙ্গিত দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু, এ ব্যাপারে নয়াদিল্লি আগ্রহ না দেখানোর জেরেই কি ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপালেন তিনি? উঠছে প্রশ্ন।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৫ ০৭:৫৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২১
রাশিয়ার থেকে সস্তায় খনিজ তেল কেনার শাস্তি! ‘অবাধ্য’ ভারতকে জব্দ করতে ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অবশ্য দাবি, নয়াদিল্লির উপর তাঁর এই গোসার নেপথ্যে রয়েছে অন্য কারণ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বরাবর ‘বন্ধু’ বলে ডেকে এসেছেন তিনি। আর তাই ভারতের সঙ্গে স্টেল্থ শ্রেণির পঞ্চম প্রজন্মের ‘এফ-৩৫ লাইটনিং টু’ যুদ্ধবিমানের প্রতিরক্ষা চুক্তি সেরে ফেলার ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু, দিল্লি সেখানে জল ঢালায় তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বর্ষীয়ান প্রেসিডেন্ট।
০২২১
জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেওয়ার পর থেকেই ভারতের সঙ্গে একাধিক প্রতিরক্ষা চুক্তি সেরে ফেলতে আগ্রহী হন ট্রাম্প। সেই তালিকার শীর্ষে ছিল ‘এফ-৩৫’ লড়াকু জেটের নাম। কিন্তু সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোদী সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে আমেরিকার থেকে অতিরিক্ত হাতিয়ার কেনা সম্ভব নয়। শুধু তা-ই নয়, ‘এফ-৩৫’ নিয়ে কোনও আলোচনাই করতে চায়নি নয়াদিল্লি। বিষয়টি কানে যেতেই চটে যান যুক্তরাষ্ট্রের বর্ষীয়ান প্রেসিডেন্ট। যদিও এই ইস্যুতে সরকারি ভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
০৩২১
পশ্চিমি গণমাধ্যমগুলির একাংশের দাবি, নয়াদিল্লি যে ভারতীয় বিমানবাহিনীর জন্য মার্কিন সংস্থা লকহিড মার্টিনের তৈরি ‘এফ-৩৫’ কিনবে না, তা একরকম স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিংহ। সংসদে ওঠা এই সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মুখে সংশ্লিষ্ট লড়াকু জেটটির বিক্রির কথা বললেও এই সংক্রান্ত কোনও আলোচনা আমাদের মধ্যে হয়নি।’’ পরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘এফ-৩৫’ কেনার ক্ষেত্রে একগুচ্ছ সমস্যা রয়েছে। সেগুলি ওয়াশিংটনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
০৪২১
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যিক ঘাটতি অনেকটাই বেশি। যুক্তরাষ্ট্র এ দেশের পণ্য এবং পরিষেবা দুটোই বিপুল পরিমাণে নিয়ে থাকে। কিন্তু, সেই হারে নয়াদিল্লিকে বিক্রি করতে পারে না তারা। এই ব্যবধান ঘোচাতে মোটা টাকার প্রতিরক্ষা চুক্তি করতে চাইছিলেন ট্রাম্প। সেটা ভেস্তে যাওয়ায় শুল্কের ভয় দেখিয়ে নিজের শর্তে বাণিজ্যচুক্তি করার ছক ছিল তাঁর। কিন্তু, সেখানেও ব্যর্থ হন তিনি। ফলে ভারতের উপর ক্ষোভ বাড়তে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের।
০৫২১
ট্রাম্পের যুক্তি, বিভিন্ন পণ্য মার্কিন বাজারে বিক্রি করে বিপুল অর্থ রোজগার করছে নয়াদিল্লি। সেই টাকা দিয়ে আমেরিকার শত্রু দেশ রাশিয়া থেকে সস্তা দরে খনিজ তেল এবং হাতিয়ার কিনছে মোদী সরকার। এতে আখেরে লোকসান হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের। এ ব্যাপারে কোনও ভাবেই বাগে আনা যাচ্ছে না ভারতকে। ‘এফ-৩৫’ যুদ্ধবিমানের চুক্তি না করে তড়িঘড়ি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নয়াদিল্লি বাণিজ্য সমঝোতা সেরে নিলে হয়তো কিছুটা শান্ত থাকতেন তিনি। সেটি যে হওয়ার নয়, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল।
০৬২১
মার্কিন প্রেসিডেন্ট চাইছিলেন, শুল্কের ভয়ে বাণিজ্যচুক্তিতে ভারতের কৃষি এবং দুগ্ধজাত পণ্যের বাজার খুলে দেবে নয়াদিল্লি। বাস্তবে তা হয়নি। কেন্দ্রের যুক্তি এতে আর্থিক ভাবে মারাত্মক লোকসানের মুখে পড়বে এ দেশের ‘অন্নদাতা’রা। চাষি পরিবারগুলির পাশাপাশি দুধ উৎপাদন এবং দুগ্ধজাত পণ্যের সঙ্গে জড়িতদেরও ক্ষতি হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। সেই কারণে ট্রাম্পের শর্তে বাণিজ্যচুক্তিতে রাজি হয়নি মোদী সরকার।
০৭২১
অন্য দিকে সাবেক সেনাকর্তাদের দাবি, ইচ্ছাকৃত ভাবে এ দেশের বিমানবাহিনী ‘এফ-৩৫’ পছন্দ করছে না, এমনটা নয়। প্রথমত, সংশ্লিষ্ট লড়াকু জেটটির দাম রাশিয়ার তৈরি স্টেল্থ শ্রেণির পঞ্চম প্রজন্মের ‘এসইউ-৫৭ ফেলন’-এর থেকে অনেকটাই বেশি। দ্বিতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্রের জেটটির রক্ষণাবেক্ষণের খরচও অনেক বেশি। তৃতীয়ত, ‘এফ-৩৫’-এর প্রযুক্তিগত হস্তান্তর করতে রাজি নয় আমেরিকা।
০৮২১
সূত্রের খবর, রাশিয়া ইতিমধ্যেই যৌথ ভাবে ‘এসইউ-৫৭’ তৈরির ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের আমল থেকে মস্কোর তৈরি হাতিয়ার আমদানি করে চলেছে ভারত। ক্রেমলিনের ‘এসইউ-৩০এমকেআই’ যুদ্ধবিমানটিকে এ দেশের বায়ুসেনার শিরদাঁড়া বলা যেতে পারে। ফলে ‘এসইউ-৫৭’ আমদানি করলে তার রক্ষণাবেক্ষণ করা যে অনেকটাই সহজ হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
০৯২১
তা ছাড়া স্বাধীনতার পর থেকে ভারত-রাশিয়া সম্পর্কে কোনও উত্থান-পতন আসেনি। উল্টে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেটা আরও মজবুত হয়েছে। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময়ে খোলাখুলি ভাবে নয়াদিল্লির পাশে এসে দাঁড়ায় মস্কো। অন্য দিকে প্রথম থেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রেখে চলেছে আমেরিকা। ফলে প্রয়োজনের সময়ে মার্কিন হাতিয়ার এ দেশের সেনাবাহিনী হাতে পাবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সেই কারণে ‘এফ-৩৫’ কেনার ব্যাপারে কেন্দ্রের চটজলদি সিদ্ধান্ত নেওয়া খুবই কঠিন।
১০২১
বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ আবার মনে করেন, শক্তির নিরিখে মার্কিন জেটটিকে দুর্দান্ত বলা যাবে না। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক বার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ধ্বংস হয়েছে ‘এফ-৩৫’। আমেরিকার ধনকুবের শিল্পপতি ইলন মাস্কও একে ‘ভাল’ বা ‘খুব ভাল’ রেটিং দিতে নারাজ। ফলে ‘লকহিড মার্টিন’-এর তৈরি যুদ্ধবিমানটির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। চলতি বছরের জুনে এই ধারণায় শেষ পেরেক পুঁতে দেয় ব্রিটিশ রয়্যাল নেভি।
১১২১
গত ১৪ জুন আরব সাগরে ভারতীয় নৌবাহিনীর সঙ্গে একটি মহড়ায় অংশ নেয় ব্রিটিশ রয়্যাল নেভির ‘এইচএমএস প্রিন্স অফ ওয়েলস’ বিমানবাহী রণতরী। কেরল উপকূল থেকে প্রায় ১০০ নটিক্যাল মাইল দূরে দাঁড়িয়ে থাকা ইংরেজ যুদ্ধজাহাজটিতেই মোতায়েন ছিল ‘এফ-৩৫বি’। মহড়ার সময়ে সেটি আকাশে ওড়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই জরুরি অবতরণের জন্য সাহায্য চান লড়াকু জেটের পাইলট। সঙ্গে সঙ্গে তিরুঅনন্তপুরমের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার অনুমতি দেওয়া হয় তাঁকে।
১২২১
অবতরণের পর জানা যায় যে প্রযুক্তিগত সমস্যার মুখে পড়েছে মার্কিন যুদ্ধবিমান। কিন্তু শত চেষ্টা করেও আর সেটিকে সারাতে পারেননি ব্রিটিশ সামরিক ইঞ্জিনিয়াররা। শেষে বাধ্য হয়ে লড়াকু জেটটিকে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। ২০২২ সালে একই রকমের সমস্যার মুখে পড়ে দক্ষিণ কোরিয়ার বিমানবাহিনী। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে একটি ‘এফ-৩৫এ’ যুদ্ধবিমানের জরুরি অবতরণ করায় তারা। পরে ওই লড়াকু জেটটিরও ডানা খুলে সড়কপথে মালবাহী গাড়িতে করে সামরিক ছাউনিতে নিয়ে যেতে হয়েছিল সোলের বায়ুসেনাকে।
১৩২১
২০২০ সালে ছ’টি ‘অ্যাপাচে এএইচ-৬৪ই’ হেলিকপ্টার কেনার জন্য আমেরিকার সঙ্গে ৬০ কোটি ডলারের চুক্তি করে ভারত।পাঁচ বছর পেরিয়ে সেগুলি এখনও পুরোপুরি নয়াদিল্লিকে সরবরাহ করেনি ওয়াশিংটন। এ ক্ষেত্রে দু’বার সময়সীমা বেঁধে দিয়েও সময়ে হাতিয়ার হাতে পেতে ব্যর্থ হয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। একই কথা ‘তেজস’ লড়াকু জেটের ইঞ্জিনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। মার্কিন সংস্থা জেনারেল ইলেকট্রিক (জিই) এখনও পর্যন্ত মাত্র দু’টি ইঞ্জিন সরবরাহ করেছে। ফলে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ওই যুদ্ধবিমানের উৎপাদনে গতি আনতে সমস্যার মুখে পড়ছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড’ বা হ্যাল।
১৪২১
এ ছাড়া গত মার্চে ‘এফ-৩৫’ যুদ্ধবিমান নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করে জার্মানি। বার্লিনের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ওই লড়াকু জেটে বিশেষ একটি ‘কিল সুইচ’ রয়েছে। সেটা সক্রিয় হলেই কাজ করা বন্ধ করে দেবে সংশ্লিষ্ট যুদ্ধবিমান। এই দাবি সত্যি হলে ‘এফ-৩৫’ কিনলে বিপদে পড়বে ভারতীয় বায়ুসেনা। আক্রমণের সময়ে আমেরিকার হাতের পুতুলে পরিণত হতে পারে তারা, যা কখনওই চায় না নয়াদিল্লি।
১৫২১
সাবেক সেনাকর্তাদের দাবি, রাশিয়ার ক্ষেত্রে এই ধরনের কোনও সমস্যা নেই। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর ঠিক মুখে নয়াদিল্লিকে ‘ইগলা-এস’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র পাঠায় মস্কো। স্বল্প পাল্লার ওই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হাতে পাওয়ায় ওই সময়ে সেনার মনোবল বৃদ্ধি পেয়েছিল। এ ছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও ‘আইএনএস তুশিল’-সহ একাধিক রণতরী সময়মতো ভারতকে সরবরাহ করেছে ক্রেমলিন।
১৬২১
১৯৭১ সালের বাংলাদেশ যুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে বঙ্গোপসাগরে সপ্তম নৌবহর পাঠানোর ঘোষণা করে আমেরিকা। ওই সময়ে খোলাখুলি ভাবে ভারতের পাশে দাঁড়ায় সাবেক সোভিয়েত সরকার। নয়াদিল্লির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ওই এলাকায় একাধিক পরমাণু ডুবোজাহাজ মোতায়েন করে মস্কো। ফলে পিছু হটতে বাধ্য হয় ওয়াশিংটন।
১৭২১
১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধের সময়েও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থান বুঝতে কৃত্রিম উপগ্রহভিত্তিক দিক নির্ণয়কারী প্রযুক্তি দিতে ভারতকে অস্বীকার করে আমেরিকা। ফলে লড়াইয়ের সময়ে যথেষ্ট সমস্যার মুখে পড়েছিল এ দেশের ফৌজ। ওই সময়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় ইজ়রায়েল। তড়িঘড়ি ‘স্পাইস-২০০০’ নামের একটি অত্যাধুনিক বোমা এ দেশের বায়ুসেনাকে পাঠায় ইহুদি সরকার। সংঘাতের মোড় ঘুরিয়ে দিতে সেটা যথেষ্ট সাহায্য করেছিল।
১৮২১
বর্তমান পরিস্থিতিতেও সেই অবস্থান থেকে আমেরিকা খুব একটা সরে এসেছে এমনটা নয়। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর গত জুনে হোয়াইট হাউসের ভোজসভায় ট্রাম্পের আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন পাক সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। তাঁর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন তিনি। পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়ে দেন যে পাকিস্তানে তাঁর ক্রিপ্টো ব্যবসার দেখভাল করবেন সেনাপ্রধান মুনির। ইসলামাবাদের উপরে মাত্র ১৯ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন তিনি, যেটা ভারতের চেয়ে অনেকটাই কম।
১৯২১
গত ফেব্রুয়ারিতে আমেরিকা সফরে যান প্রধানমন্ত্রী মোদী। তখনই হোয়াইট হাউসে যৌথ বিবৃতির মঞ্চে তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ‘এফ-৩৫’ বিক্রি করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন ট্রাম্প। ব্লুমবার্গের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট মোদীর থেকে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া চাইছিলেন। কিন্তু, ওই সময়ে এ ব্যাপারে একটি শব্দও খরচ করেননি ভারতের প্রধানমন্ত্রী। উল্টে দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে ৫০ হাজার কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
২০২১
ভারত ‘এফ-৩৫’ কিনবে না বুঝতে পেরে মাস কয়েক আগে একটি সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন মার্কিন বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক। তিনি বলেন, ‘‘নয়াদিল্লির সঙ্গে আমাদের কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু, সমস্যা হল ওরা শুধুই রাশিয়ার থেকে হাতিয়ার কেনে। এটা মেনে নেওয়া আমাদের পক্ষে খুবই কষ্টকর।’’
২১২১
বিশ্লেষকেরা মনে করেন, গত শতাব্দীর ৫০-এর দশকে শুরু হওয়া ‘ঠান্ডা যুদ্ধ’-র সময় থেকে রাশিয়াকে পুরোপুরি নির্বান্ধব করে ফেলতে মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আমেরিকা। আর তাই ভারতকে পুরোদস্তুর হাতিয়ার বিক্রি করতে পারলে ওয়াশিংটনের উপর নয়াদিল্লির বাড়বে নির্ভরশীলতা। আপাতত সেটা না হওয়ায় বিরক্ত ট্রাম্প এ দেশের অর্থনীতিকে ‘মৃতবৎ’ বলতেও ছাড়েননি। ফলে ‘এফ-৩৫’ কেনার সব সম্ভাবনাই বিশ বাঁও জলে চলে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।