Advertisement
০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
Indian Deep State

মার্কিন শুল্ক-গুঁতো, পাকিস্তানের পরমাণু হুমকি! হঠাৎ ওঠা ঝড় সামলাতে ‘ডিপ স্টেট’ তৈরি করবে ভারত? গুপ্ত দলে থাকবেন কারা?

ভূ-রাজনৈতিক জটিলতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই ভারতের নিজস্ব ‘ডিপ স্টেট’ রাখার পক্ষে সওয়াল করছেন কূটনীতিকদের একাংশ। কী এই ‘ডিপ স্টেট’? কাদের নিয়ে গঠিত হয় এই গুপ্ত গোষ্ঠী?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৫ ০৭:৫০
Share: Save:
০১ ২০
India should strengthen its own Deep State to counter adversities of US, China and Pakistan

কখনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধ। কখনও আবার পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের পরমাণু হামলার হুমকি। বিভিন্ন ঘটনায় বার বার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে নয়াদিল্লি। এ-হেন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের হাতে ‘ডিপ স্টেট’ থাকার প্রয়োজনীয়তার পক্ষে সওয়াল করেছেন দুঁদে কূটনীতিকদের একাংশ। সংশ্লিষ্ট ‘হাতিয়ার’টি তৈরি করা ছাড়া ভারতের পক্ষে ‘মহাশক্তিধর’ হয়ে ওঠা যে কঠিন, সে কথা মেনেছেন তাঁরা।

০২ ২০
India should strengthen its own Deep State to counter adversities of US, China and Pakistan

আমেরিকা, রাশিয়া, চিন থেকে শুরু করে পাকিস্তান। বর্তমান বিশ্বের বহু রাষ্ট্রের গোপন অস্ত্র হল ‘ডিপ স্টেট’। শত্রুদেশে সরকারের গদি টলিয়ে দেওয়ার নেপথ্যে এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। এ ছাড়া তথ্যযুদ্ধ (পড়ুন ইনফরমেশন ওয়ারফেয়ার) এবং কৌশলগত লগ্নির ক্ষেত্রে ‘ডিপ স্টেট’-এর পরামর্শ নিয়ে থাকে প্রশাসন।

০৩ ২০
India should strengthen its own Deep State to counter adversities of US, China and Pakistan

এখন প্রশ্ন হল, কী এই ‘ডিপ স্টেট’? এটি আসলে সরকারের মধ্যে থাকা অনুমোদিত একটি ক্ষমতার নেটওয়ার্ক। এর সদস্যেরা তাঁদের লক্ষ্যপূরণের জন্য নির্বাচিত রাজনৈতিক নেতৃত্বের বাইরে গিয়ে কাজ করে থাকেন। আর তাই ‘ডিপ স্টেট’-এর কোনও কাজের দায়ভার নিতে হয় না প্রশাসনকে। সরকারের গুপ্তচরবাহিনীর পাশাপাশি গণমাধ্যম, শিল্প সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, এমনকি বিদেশে বসবাসকারী উঁচু পদে থাকা নাগরিকেরাও এর অঙ্গ হতে পারেন। তবে এদের পুরো কাজটাই হয় গোপনে।

০৪ ২০
India should strengthen its own Deep State to counter adversities of US, China and Pakistan

বিশেষজ্ঞদের দাবি, ২০৪০ সালের মধ্যে আর্থিক ও সামরিক দিক থেকে ‘সুপার পাওয়ার’-এর তকমা পাবে ভারত। সেই লক্ষ্যে দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে এ দেশের অর্থনীতি। নয়াদিল্লির এই উত্থানকে একেবারেই ভাল চোখে দেখছে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন বা পাকিস্তানের মতো দেশ। আর তাই এ দেশের ভিতরে অরাজকতা ছড়িয়ে দিতে ‘ডিপ স্টেট’কে কাজে লাগাচ্ছে তারা। বিষয়টি কেন্দ্রের জন্য যথেষ্ট উদ্বেগের, বলছেন বিশ্লেষকেরা।

০৫ ২০
India should strengthen its own Deep State to counter adversities of US, China and Pakistan

বিশ্বের ‘মহাশক্তিধর’ দেশগুলির মধ্যে আমেরিকার ‘ডিপ স্টেট’কে সবচেয়ে শক্তিশালী বলে গণ্য করা হয়। তাদের কীর্তিকলাপের মধ্যে প্রথমেই আসবে ইরাক আক্রমণের কথা। ২০০৩ সালে পশ্চিম এশিয়ার দেশটিকে আক্রমণ করে বসে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের তরফে যুক্তি ছিল, প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হুসেনের নেতৃত্বে বাগদাদে স্বৈরতন্ত্র চলছে। তা ছাড়া ইরাকের হাতে গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে বলেও খবর ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয় মার্কিন ‘ডিপ স্টেট’।

০৬ ২০
India should strengthen its own Deep State to counter adversities of US, China and Pakistan

ইরাক যুদ্ধের অবসানের পর বাগদাদের খনিজ তেলের কুয়োগুলির নিয়ন্ত্রণ পায় আমেরিকা। আজও সেখানকার ‘তরল সোনা’ উত্তোলনকারী সংস্থাগুলিতে মোটা অঙ্কের শেয়ার রয়েছে মার্কিন উদ্যোগপতিদের। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, সাদ্দামের পতন সত্ত্বেও আরব দেশটিতে কোনও গণবিধ্বংসী হাতিয়ার পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়া সত্ত্বেও শান্তি প্রতিষ্ঠার বদলে পশ্চিম এশিয়ার ওই যুদ্ধে জড়িয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।

০৭ ২০
India should strengthen its own Deep State to counter adversities of US, China and Pakistan

একই কথা লিবিয়ার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আফ্রিকার দেশটিতে ক্ষমতায় আসেন মুয়ম্মর গদ্দাফি। খনিজ তেল বিক্রিতে মার্কিন ডলার ব্যবহারে আপত্তি জানান তিনি। পাশাপাশি, এর দরও নিজের ইচ্ছামতো করতে চেয়েছিলেন গদ্দাফি। এর পরই তাঁকে সরাতে উঠেপড়ে লাগে মার্কিন ‘ডিপ স্টেট’। শুরু হয় গোপনে গোপনে লিবিয়ার বিদ্রোহীদের উস্কানি ও মদত দেওয়ার কাজ। সেই বিদ্রোহীদের হাতেই ২০১১ সালের ২০ অক্টোবর প্রাণ হারান গদ্দাফি।

০৮ ২০
India should strengthen its own Deep State to counter adversities of US, China and Pakistan

এই ঘটনার পর শান্তি ফেরা তো দূরস্থান, উল্টে ভয়ঙ্কর গৃহযুদ্ধের মুখে পড়ে লিবিয়া। আফ্রিকার দেশটিতে অবশ্য গণতন্ত্র ফেরানোর পক্ষে মার্কিন ‘ডিপ স্টেট’কে বার বার সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু, সৌদি আরবের ক্ষেত্রে এই যুক্তি কখনওই দেয়নি তারা। কারণ, সর্বাধিক খনিজ তেল উত্তোলনকারী আরব মুলুকটির সঙ্গে ‘কৌশলগত অংশীদারি’ রয়েছে আমেরিকার। রিয়াধের থেকে বছরের পর বছর ধরে সস্তা দরে ‘তরল সোনা’ আমদানি করে যাচ্ছে ওয়াশিংটন।

০৯ ২০
India should strengthen its own Deep State to counter adversities of US, China and Pakistan

১৯৯১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের (বর্তমান রাশিয়া) পতন হলে আমেরিকার বিরুদ্ধে ওঠে সার্বিয়ার বিদ্রোহে মদত দেওয়ার অভিযোগ। ইউরোপীয় দেশটি ভেঙে কসোভো তৈরিতে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে দেখা গিয়েছে মার্কিন ‘ডিপ স্টেট’কে। ২০১৪ সালে আবার ইউক্রেনের থেকে ক্রিমিয়া ছিনিয়ে নেয় রাশিয়া। তার পর কৃষ্ণসাগরের কোলের ওই উপদ্বীপে কোনও গণবিক্ষোভ দেখা যায়নি। বিশ্লেষকদের দাবি, ক্রিমিয়া আক্রমণের আগে সেখানে ক্রেমলিনের মতাদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার নেপথ্যে বড় হাত ছিল রুশ ‘ডিপ স্টেট’-এর।

১০ ২০
India should strengthen its own Deep State to counter adversities of US, China and Pakistan

জনমত গঠনের জন্য ‘ডিপ স্টেট’ অনেক সময়েই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে ব্যবহার করে থাকে। উদাহরণ হিসাবে সুইডেন-সহ একাধিক ইউরোপীয় সংস্থার কথা বলা যেতে পারে। মাঝেমধ্যেই সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করে থাকে তারা। কিসের ভিত্তিতে সেগুলি প্রকাশিত হয়, তা স্পষ্ট থাকে না বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। সেই ধরনের বেশ কিছু সমীক্ষা রিপোর্টে ভারতকে ‘নির্বাচিত স্বৈরতন্ত্র’ বলে প্রচার করা হয়েছে।

১১ ২০
India should strengthen its own Deep State to counter adversities of US, China and Pakistan

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিপ স্টেট’-এ আবার শিল্পপতি, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নির্মাণকারী সংস্থা এবং হাতিয়ারের দালালদের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের শিল্পপতিদের সঙ্গে কাজ করতে ভালবাসে। বছর কয়েক আগে শ্রীলঙ্কায় সমুদ্র-বন্দর প্রকল্পে মোটা টাকা লগ্নি করেন ভারতের ধনকুবের শিল্পপতি গৌতম আদানি। ওয়াশিংটন খোলাখুলি ভাবে একে সমর্থন জানিয়েছিল।

১২ ২০
India should strengthen its own Deep State to counter adversities of US, China and Pakistan

২১ শতকের গোড়া থেকেই শ্রীলঙ্কায় প্রভাব বাড়াচ্ছে চিন। দ্বীপরাষ্ট্রটির হাম্বানটোটা বন্দরে ঘাঁটি গেড়ে বসেছে ড্রাগন। বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, সেখান থেকে তাঁদের তাড়াতে কলম্বোয় আদানির লগ্নিকে স্বাগত জানিয়েছে আমেরিকার ‘ডিপ স্টেট’। তবে সব সময় যে তারা ভারতের পাশে থেকেছে এমনটাও নয়।

১৩ ২০
India should strengthen its own Deep State to counter adversities of US, China and Pakistan

পঞ্জাবের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী খলিস্তানিদের প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিপ স্টেট’-এর বিরুদ্ধে। ২০২৩ সালে নিষিদ্ধ ‘শিখ ফর জাস্টিস’ (এসএফজে)-এর নেতা গুরুপতবন্ত সিংহ পান্নুনকে হত্যার চেষ্টা করার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে নিখিত গুপ্ত নামে এক ভারতীয়কে দোষী সাব্যস্ত করে আমেরিকার আদালত।

১৪ ২০
India should strengthen its own Deep State to counter adversities of US, China and Pakistan

গত বছর (পড়ুন ২০২৪) ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বা এনএসএ (ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইসার) অজিত ডোভালকে তলব করে আমেরিকার একটি আদালত। এ দেশের গুপ্তচরবাহিনী ‘রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং’ বা র-এর বিরুদ্ধে ‘টার্গেট কিলিং’-এর অভিযোগও তুলতে দেখা গিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিপ স্টেট’কে। একে নয়াদিল্লির উপরে চাপ বাড়ানোর কৌশল হিসাবেই দেখেছেন বিশ্লেষকেরা।

১৫ ২০
India should strengthen its own Deep State to counter adversities of US, China and Pakistan

২০০৬ সালের ২৬ নভেম্বর পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি হামলায় রক্তাক্ত হয় মুম্বই। তদন্তে উঠে আসে ডেভিড হেডলি এবং তাহাউর রানার নাম। ঘটনার ১৯ বছর পর তাহাউরকে ভারতের হাতে তুলে দেয় আমেরিকা। তত দিনে ২৬/১১ মামলার তদন্ত অনেকটাই ঠান্ডা ঘরে চলে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ মনে করেন, এর পিছনে ছিল মার্কিন ‘ডিপ স্টেট’-এর হাত।

১৬ ২০
India should strengthen its own Deep State to counter adversities of US, China and Pakistan

মুম্বই জঙ্গি হামলার ঠিক পরেই তাহাউরকে হাতে পেলে আন্তর্জাতিক স্তরে পাকিস্তানের উপরে চাপ বৃদ্ধির সুযোগ পেত ভারত। সেটা কখনওই চায়নি ওয়াশিংটন। কারণ, নয়াদিল্লির চেয়ে ইসলামাবাদকে সব সময়েই বেশি কাছের বলে মেনে এসেছে ওয়াশিংটন।

১৭ ২০
India should strengthen its own Deep State to counter adversities of US, China and Pakistan

২০০৫ সালে ভারতের সঙ্গে অসামরিক পরমাণু চুক্তি করে আমেরিকা। এর জেরে যাবতীয় জটিলতা সরিয়ে রেখে ফের কাছাকাছি চলে আসে নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটন। বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, এই চুক্তির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ভারতীয়দের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। তাঁদের চেষ্টাতেই নয়াদিল্লি সম্পর্কে মার্কিন প্রশাসনের চিন্তাভাবনায় আসে বড় বদল।

১৮ ২০
India should strengthen its own Deep State to counter adversities of US, China and Pakistan

তবে ভারতের ক্ষেত্রে ‘ডিপ স্টেট’ তৈরিতে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এতে সরকারের ভিতরে মুষ্টিমেয় কয়েক জনের হাতে যাবতীয় ক্ষমতা চলে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল। এ ছাড়া শিল্পপতি বা গণমাধ্যমকে সব সময় নিজেদের কাজে ব্যবহার করা বেশ কঠিন। এতে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

১৯ ২০
India should strengthen its own Deep State to counter adversities of US, China and Pakistan

‘ডিপ স্টেট’-এর প্রবল বিরোধীরা এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানের উদাহরণ দিয়ে থাকেন। পশ্চিমের প্রতিবেশী দেশটির সেনা এবং গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই (ইন্টার সার্ভিসেস ইনটেলিজেন্স) যাবতীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। ফলে সেখানে মূল্যহীন হয়ে পড়েছে গণতন্ত্র। আর ‘ডিপ স্টেট’-এর হাত ধরে গজিয়ে উঠেছে লশকর-এ-ত্যায়বা এবং জইশ-ই-মহম্মদের মতো জঙ্গি সংগঠন। ইসলামাবাদের অর্থনীতিও বর্তমানে দাঁড়িয়ে আছে খাদের কিনারায়।

২০ ২০
India should strengthen its own Deep State to counter adversities of US, China and Pakistan

কিন্তু, তার পরেও আধুনিক বিশ্বে জাতীয় স্বার্থে ‘ডিপ স্টেট’-এর প্রয়োজনীয়তাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না কূটনীতিকদের একাংশ। ফৌজ, গুপ্তচরবাহিনী, শিল্প সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং গণমাধ্যমের পাশাপাশি সেখানে সমাজমাধ্যমকেও ব্যবহারের পরামর্শও দিয়েছেন তাঁরা। তবে ‘ডিপ স্টেট’-এর নিয়ন্ত্রণ অবশ্যই রাখতে হবে সরকারকে।

সব ছবি: সংগৃহীত ও এআই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy