কোনও গ্রামে একটাই লোক, কোনওটা দড়ি দিয়ে হাঁটে, অদ্ভুত সব গ্রামের কথা
কোনও গ্রাম দাবার জন্য বিখ্যাত, কোনও গ্রামে আবার বাসিন্দারা দড়ির উপর দিয়ে হাঁটেন— বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা এমন বেশ কয়েকটি আজব গ্রামের ‘গজব’ কাহিনি সম্পর্কে জেনে নিন।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৯ ১৬:২৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৩
কোনও গ্রাম দাবার জন্য বিখ্যাত, কোনও গ্রামে আবার বাসিন্দারা দড়ির উপর দিয়ে হাঁটেন— বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা এমন বেশ কয়েকটি আজব গ্রামের ‘গজব’ কাহিনি সম্পর্কে জেনে নিন।
০২১৩
সোভক্রা-১: গ্রেটার ককাস পর্বতের কোলে গড়ে উঠেছে রাশিয়ার ছোট্ট এই গ্রাম। এ গ্রামের বিশেষত্ব, এখানে সক্ষম প্রত্যেক ব্যক্তি দড়ির উপর দিয়ে হাঁটতে পারেন। তাই একে ‘টাইটরোপ ভিলেজ’ও বলা হয়। এটি একটি শতাব্দীপ্রাচীন প্রথা। কী ভাবে এই প্রথা শুরু হল তা নিয়ে প্রচলিত একটি কাহিনিও রয়েছে।
০৩১৩
পাশের পাহাড়ি গ্রামে বিয়ে করতে সোভক্রা গ্রামের পুরুষদের ট্রেকিং করে যেতে হত। এর থেকে মুক্তি পেতে পাহাড়ের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে দড়ি টাঙাতেন। সেই দড়ি বেয়েই তাঁরা যাতায়াত করা শুরু করেন। তার পর থেকেই নাকি সেই প্রথা চলে আসছে। গ্রামের স্কুলগুলিতেও শিশুদের ‘টাইটরোপ ওয়াকিং’ শেখানো হয়।
০৪১৩
মারোত্তিচাল: উত্তর কেরলের এই গ্রাম ‘চেস ভিলেজ’ নামে পরিচিত। গ্রামের ১০০ শতাংশ মানুষই দাবা খেলায় দক্ষ। কী ভাবে হয়ে উঠল দাবা গ্রাম? একটা সময়ে গোটা গ্রাম জুয়া, মদে আসক্ত ছিল। গ্রামেরই এক যুবক উন্নিকৃষ্ণণ কাছেরই একটি ছোট একটি শহরে থাকতেন। সেখানে থাকাকালীনই দাবা শেখেন।
০৫১৩
তিনিই গ্রামে ফিরে দাবার প্রচলন করেন। ধীরে ধীরে গ্রামে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে দাবা। মদ, জুয়া ছেড়ে দাবা-আসক্ত হয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা। দাবার জন্য মারোত্তিচাল গ্রামের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। স্কুল সিলেবাসেও দাবা আছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেকেই দাবা শিখতে আসেন এই গ্রামে।
০৬১৩
রেনবো ফ্যামিলি ভিলেজ: তাইওয়ানের ছোট্ট একটি গ্রাম। তাইওয়ানের এই গ্রামটিকে প্রোমোটাররা কিনে ফেলার জন্য চেষ্টা করছে। সরকারও গ্রামটি ভেঙে ফেলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। বাসিন্দা হুয়াং ইয়ুং ফু গ্রামটিকে বাঁচানোর জন্য একটা পন্থা বার করেন। হাতে তুলে নেন রং-তুলি।
০৭১৩
পুরো গ্রামটিকে রঙিন করে তোলেন ঘর-বাড়িতে নানান চিত্র এঁকে। ধীরে ধীরে গ্রামটির নাম ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়। সেখান থেকে গোটা বিশ্বে। এখন এটি একটি পর্যটনস্থল হিসেবে গড়ে উঠেছে। হুয়াং ইয়ুং ফু-র এই সিদ্ধান্তই শেষমেশ গ্রামটিকে বাঁচিয়ে দিয়েছে।
০৮১৩
মনোউই: নেব্রাস্কার বয়েড কাউন্টির ছোট্ট একটি গ্রাম। ০.২১ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। গ্রামে এক জনই থাকেন। ৮৬ বছর বয়সী বৃদ্ধা এলসি এইলার। ১৯০২-এ গড়ে ওঠা এই গ্রামটি একটা সময় বেশ সমৃদ্ধ ছিল। ১৯৩০-এর জনগণনায় গ্রামে ১৫০ জন বাসিন্দা ছিলেন। কিন্তু গ্রামের যুব সম্প্রদায় একে একে গ্রাম ছেড়ে শহরে পাড়ি দেয়।
০৯১৩
২০০০-এ দেখা যায়, গ্রামে মাত্র দু’জন পড়ে রয়েছেন— এইলার ও তাঁর স্বামী রুডি। ২০০৪-এ রুডির মৃত্যুর পর একটা লাইব্রেরি এবং রেস্তরাঁ খোলেন এইলার। লাইব্রেরিতে যা সংগ্রহ আছে তার টানে ১০০ কিমি দূর থেকেও বইপ্রেমীরা ছুটে আসেন এখানে।
১০১৩
পপাই গ্রাম: মাল্টার সমুদ্রোপকূলের একটি গ্রাম। ১৯৮০-তে বিখ্যাত কমিক চরিত্র ‘পপাই’ ছবির শুটিং হয়েছিল এই গ্রামে। সেই শুটিংয়ের জন্য মাত্র ৭ মাসের মধ্যে নেদারল্যান্ডস ও কানাডা থেকে কাঠ এবং বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে এসে গ্রামটি গড়ে তোলা হয়। ছবিতে গ্রামটির নাম রাখা হয়েছিল ‘সুইটহ্যাভেন ভিলেজ’।
১১১৩
শুটিংয়ের জন্য তৈরি করা গ্রামের ওই সেটটির প্রেমে পড়ে যান মাল্টার বাসিন্দারা। ফলে ছবি মুক্তি পাওয়ার পরেও কৃত্রিম গ্রামের ওই সেটটি নষ্ট করতে দেননি তাঁরা। এটাই এখন মাল্টার অন্যতম পর্যটনস্থল। বিয়ের জন্যও গ্রামটিকে ভাড়াও দেওয়া হয়।
১২১৩
কালাচি: কাজাখস্তানের এই গ্রামের বাসিন্দারা হঠাৎ হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়েন। সেই ঘুম কখনও কখনও এক সপ্তাহ পরে গিয়েও ভাঙে। শিশু থেকে বুড়ো সকলের মধ্যেই একই প্রবণতা দেখা যায়। কেউ কাজ করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ছেন, কেউ আবার কথা বলতে বলতে! আশ্চর্যের বিষয়, ঘুম থেকে ওঠার পর কারও কিছু মনেও থাকে না।
১৩১৩
শুধু মানুষ নয়, পশু-পাখিদের মধ্যেও এমন লক্ষণ দেখা যায়! কেন এমন হচ্ছে? গবেষকদের প্রাথমিক ধারণা, কাছেরই ইউরেনিয়াম খনির প্রভাব পড়ছে গ্রামবাসীদের উপর। প্রচুর পরিমাণে কার্বন মনোক্সাইড সৃষ্টি হওয়ার ফলে বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। যার জেরে এই অবস্থা।