Advertisement
০২ মে ২০২৪
Henry Kissinger Died

ইন্দিরাকে গালি, হিংসায় ‘মদত’ দিয়েও নোবেল শান্তি পুরস্কার! বিতর্ক নিত্যসঙ্গী ছিল কিসিঞ্জারের

ভারত সম্পর্কে কিসিঞ্জারের ‘বিদ্বেষমূলক’ মনোভাব নিয়েও বহু বার বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তৎকালীন সোভিয়েট ইউনিয়নের ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে এমনিতেই ভারতকে সন্দেহের চোখে দেখত আমেরিকা।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:৪০
Share: Save:
০১ ১৫
Key facts about Henry Kissinger, US diplomat and presidential adviser died on Wednesday

প্রয়াত হলেন আমেরিকার প্রাক্তন বিদেশ সচিব হেনরি কিসিঞ্জার। সদ্যই শতবর্ষে পা দিয়েছিলেন বিশ্ব রাজনীতিতে বহু আলোচিত এই কূটনীতিক। কয়েক বছর ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভোগার পর বুধবার কানেকটিকাটে নিজের বাসভবনেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।

০২ ১৫
Key facts about Henry Kissinger, US diplomat and presidential adviser died on Wednesday

কিসিঞ্জারের কর্মজীবনে খ্যাতি এবং সমালোচনা প্রায় হাত ধরাধরি করে হেঁটেছে। কখনও আন্তর্জাতিক নানা সঙ্কটে ইতিবাচক ভূমিকা নেওয়ার জন্য তিনি প্রশংসিত হয়েছেন, আবার কখনও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে নিন্দিতও হয়েছেন তিনি।

০৩ ১৫
Key facts about Henry Kissinger, US diplomat and presidential adviser died on Wednesday

কিসিঞ্জারের ব্যক্তিগত জীবনও কম আকর্ষণীয় নয়। জার্মানির এক ইহুদি পরিবার জন্মানো এই কূটনীতিক বহু চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে সাফল্যের দোরগোড়ায় পৌঁছন। কর্মজীবনে কিসিঞ্জারের সহকর্মীদের একাংশ তাঁকে এক জন অতি উচ্চাকাঙ্ক্ষী ব্যক্তি হিসাবেই দেখেছেন।

০৪ ১৫
Key facts about Henry Kissinger, US diplomat and presidential adviser died on Wednesday

১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় কিসিঞ্জার এবং আমেরিকার তৎকালীন প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে এখনও কাটাছেঁড়া চলে। বিশেষত দেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সম্পর্কে কিসিঞ্জার যে ধারণা পোষণ করতেন, তা নিয়েও বিতর্ক হয়। তার জেরে নয়াদিল্লি এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে দূরত্ব বৃদ্ধি পায়।

০৫ ১৫
Key facts about Henry Kissinger, US diplomat and presidential adviser died on Wednesday

১৯২৩ সালে জার্মানিতে জন্ম কিসিঞ্জারের। নাৎসি শাসনে ভীত কিসিঞ্জারের পরিবার ১৯৩৮ সালে আমেরিকায় চলে আসে। ১৯৪৩ সালে কিসিঞ্জার আমেরিকার নাগরিকত্ব পান এবং তিন বছর পর সে দেশের সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।

০৬ ১৫
Key facts about Henry Kissinger, US diplomat and presidential adviser died on Wednesday

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকান সেনার ৮৪তম ডিভিশনের সদস্য হয়ে জার্মানিতে যান কিসিঞ্জার। বন্দুক ধরেন অ্যাডলফ হিটলারের নাৎসি সেনার বিরুদ্ধে। জন্মসূত্রে জার্মান হওয়ার সুবাদে সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা শাখাকে একাধিক নথি অনুবাদ করতে সহায়তা করতেন কিসিঞ্জার।

০৭ ১৫
পরে সেনার গোয়েন্দা শাখাতেও যোগ দিয়েছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে পিএইচডি করার পর এই বিষয়ে দীর্ঘ দিন আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাও করেন তিনি। ১৯৬৯ সালে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন তাঁকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসাবে নিযুক্ত করেন।

পরে সেনার গোয়েন্দা শাখাতেও যোগ দিয়েছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে পিএইচডি করার পর এই বিষয়ে দীর্ঘ দিন আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাও করেন তিনি। ১৯৬৯ সালে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন তাঁকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসাবে নিযুক্ত করেন।

০৮ ১৫
পরে রাজনৈতিক বিতর্কের মুখে নিক্সন পদত্যাগ করেন। কিন্তু চাকরি যায়নি কিসিঞ্জারের। পরবর্তী প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডের আমলেও তিনি নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে ছিলেন। দুই প্রেসিডেন্টের আমলেই আমেরিকার বিদেশ সচিব হিসাবে কাজ করেছেন তিনি।

পরে রাজনৈতিক বিতর্কের মুখে নিক্সন পদত্যাগ করেন। কিন্তু চাকরি যায়নি কিসিঞ্জারের। পরবর্তী প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডের আমলেও তিনি নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে ছিলেন। দুই প্রেসিডেন্টের আমলেই আমেরিকার বিদেশ সচিব হিসাবে কাজ করেছেন তিনি।

০৯ ১৫
কিসিঞ্জারের আমলেই জনপ্রিয় হয়েছিল ‘রিয়েল পলিটিক’ লব্জটি। যেটির ব্যাখ্যা করলে দাঁড়ায় আদর্শের আগে কৌশলকে অগ্রাধিকার দেওয়া। আগাগোড়া নিজের কর্মজীবনে এই কৌশলকেই গুরুত্ব দিয়েছেন কিসিঞ্জার।

কিসিঞ্জারের আমলেই জনপ্রিয় হয়েছিল ‘রিয়েল পলিটিক’ লব্জটি। যেটির ব্যাখ্যা করলে দাঁড়ায় আদর্শের আগে কৌশলকে অগ্রাধিকার দেওয়া। আগাগোড়া নিজের কর্মজীবনে এই কৌশলকেই গুরুত্ব দিয়েছেন কিসিঞ্জার।

১০ ১৫
সত্তরের দশকে চিনের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতি করার উদ্দেশ্যে পাকিস্তানের প্রতি নমনীয় হয় আমেরিকা। ১৯৭১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (অধুনা বাংলাদেশ)-র মুক্তিযুদ্ধে ইসলামাবাদ সামরিক নিপীড়ন চালালে, তাতে মদত দেওয়ার অভিযোগ ওঠে কিসিঞ্জারের বিরুদ্ধে।

সত্তরের দশকে চিনের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতি করার উদ্দেশ্যে পাকিস্তানের প্রতি নমনীয় হয় আমেরিকা। ১৯৭১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (অধুনা বাংলাদেশ)-র মুক্তিযুদ্ধে ইসলামাবাদ সামরিক নিপীড়ন চালালে, তাতে মদত দেওয়ার অভিযোগ ওঠে কিসিঞ্জারের বিরুদ্ধে।

১১ ১৫
ভারত সম্পর্কে কিসিঞ্জারের ‘বিদ্বেষমূলক’ মনোভাব নিয়েও বহু বার বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এহ বাহ্য যে, সেই সময় তৎকালীন সোভিয়েট ইউনিয়নের ঘনিষ্ঠ হিসাবে ভারতকে সন্দেহের চোখে দেখত আমেরিকা। তবে কিছু বিদ্বেষ রাজনৈতিক গণ্ডি পেরিয়ে মনস্তাত্ত্বিকও হয়ে উঠেছিল।

ভারত সম্পর্কে কিসিঞ্জারের ‘বিদ্বেষমূলক’ মনোভাব নিয়েও বহু বার বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এহ বাহ্য যে, সেই সময় তৎকালীন সোভিয়েট ইউনিয়নের ঘনিষ্ঠ হিসাবে ভারতকে সন্দেহের চোখে দেখত আমেরিকা। তবে কিছু বিদ্বেষ রাজনৈতিক গণ্ডি পেরিয়ে মনস্তাত্ত্বিকও হয়ে উঠেছিল।

১২ ১৫
যেমন ২০০৫ সালে আমেরিকার বিদেশ দফতর কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি প্রকাশ্যে আনে। সেখানে দেখা যায় ইন্দিরার সঙ্গে বৈঠকের পর তাঁর সম্পর্কে নিক্সনের কাছে আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করেন কিসিঞ্জার। ভারতীয় মহিলাদের সম্পর্কেও কিসিঞ্জারের অশালীন ভাষা ব্যবহার করার প্রমাণ মেলে ওই নথি থেকে।

যেমন ২০০৫ সালে আমেরিকার বিদেশ দফতর কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি প্রকাশ্যে আনে। সেখানে দেখা যায় ইন্দিরার সঙ্গে বৈঠকের পর তাঁর সম্পর্কে নিক্সনের কাছে আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করেন কিসিঞ্জার। ভারতীয় মহিলাদের সম্পর্কেও কিসিঞ্জারের অশালীন ভাষা ব্যবহার করার প্রমাণ মেলে ওই নথি থেকে।

১৩ ১৫
Key facts about Henry Kissinger, US diplomat and presidential adviser died on Wednesday

এ ছাড়াও সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে দ্বন্দ্বের পরিবেশ বজায় রাখা, চিলির মতো বেশ কিছু দেশে স্বৈরাচারী শাসকদের মদত দিয়ে যাওয়া ইত্যাদি একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন শতায়ু এই কূটনীতিক।

১৪ ১৫
Key facts about Henry Kissinger, US diplomat and presidential adviser died on Wednesday

মনে করা হয় যে, বহু আন্তর্জাতিক সঙ্কটে আমেরিকার কূটনৈতিক অবস্থানের নেপথ্যে মূলত কিসিঞ্জারেরই হাত ছিল। বিদেশ সচিব হিসাবে ১৯৭৩ সালে ইজ়রায়েল এবং প্যালেস্টাইনের মধ্যে হওয়া ইয়ম কিপুরের যুদ্ধ থামাতে তাঁর ভূমিকার কথা স্মরণ করেন কেউ কেউ। আবার আমেরিকা-ভিয়েতনাম যুদ্ধের আবহে প্যারিস শান্তিচুক্তির অন্যতম স্থপতি হিসাবেও কেউ কেউ তাঁর অবদানের কথা স্বীকার করেন।

১৫ ১৫
Key facts about Henry Kissinger, US diplomat and presidential adviser died on Wednesday

ভিয়েতনাম যুদ্ধ বন্ধের অন্যতম ‘কারিগর’ হিসাবে ১৯৭৩ সালে কিসিঞ্জার নোবেল শান্তি পুরস্কার পান। তাঁকে এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার জন্য নোবেল কমিটির দুই সদস্য পদত্যাগ করেন। আমেরিকার প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী টম লেহরের মশকরা করে বলেছিলেন, “হেনরি কিসিঞ্জার নোবেল পাওয়ার পর রাজনৈতিক প্রহসন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেল।”

সব ছবি: পিটিআই এবং রয়টার্স।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE