Know about the rumours regarding reincarnation of American baseball player Lou Gehrig dgtl
Christian Haupt-Cathy Byrd
‘১৯৪১ সালে মারা গিয়েছিলাম’, ছেলের কথায় চমকে ওঠেন মা! সত্যিই ‘জাতিস্মর’ হয়ে ফেরেন ‘দ্য আয়রন হর্স’? না কি পুরোটাই চমক?
বালকের দাবি, সে নাকি আগের জন্মে ১৯২০ সাল থেকে ১৯৩০-এর দশকে বেসবল খেলত। স্নায়ুজনিত সমস্যার কারণে খেলা থেকে অবসর নিয়ে নেয় সে। তার দু’বছরের মাথায় ৩৭ বছর বয়সে ১৯৪১ সালে মারা যায় সে। সবই নাকি তার পূর্বজন্মের কাহিনি।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২৫ ১১:৪২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
বাবা-মা কারও বেসবলের প্রতি আগ্রহ নেই। অথচ শৈশব থেকেই ছেলে বেসবল খেলার খুঁটিনাটি জানে। শুধু তা-ই নয়, প্রশিক্ষণ নেওয়া খেলোয়াড়দেরও নাকি কচি বয়সে খেলার মাঠে ঘোল খাইয়ে দিতে পারত ‘বিস্ময় বালক’। এই দক্ষতা আলাদা ভাবে অর্জন করতে হয়নি তাকে। সবই নাকি তার পূর্বজন্মের দান! এমনটাই দাবি করে ক্রিশ্চিয়ান হপ্ট।
০২১৫
সাউথ ক্যালিফোর্নিয়ায় স্বামী এবং পুত্রকে নিয়ে সংসার গুছিয়ে ফেলেছিলেন ক্যাথি বার্ড। রিয়্যাল এস্টেটের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত তিনি। পেশাদার জীবন এবং সংসার নিপুণ হাতে সামলাচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎ তাঁর পুত্র ক্রিশ্চিয়ান নজর কাড়ে ক্যাথির।
০৩১৫
২০০৮ সালে জন্ম ক্রিশ্চিয়ানের। ক্যাথির দাবি, তাঁর স্বামীর বেসবল খেলার প্রতি কোনও কালেই আগ্রহ ছিল না। ক্যাথি নিজেও বেসবল থেকে শতহস্ত দূরে থাকেন। কিন্তু তাঁদের পুত্র ক্রিশ্চিয়ান নাকি ছোট্টবেলা থেকেই বেসবল নিয়ে মেতে উঠেছিল।
০৪১৫
ক্যাথিকে নাকি মাঝেমধ্যেই ক্রিশ্চিয়ান ইশারায় বুঝিয়ে বলত যে, সে আগের জন্মে এক জন বেসবল খেলোয়াড় ছিল। সে নাকি বেশ লম্বাও ছিল। ক্রিশ্চিয়ানের কথায় প্রথম প্রথম তেমন আমল দিতেন না ক্যাথি।
০৫১৫
ধীরে ধীরে বেসবলের প্রতি ক্রিশ্চিয়ানের টান বাড়তে শুরু করে। এক দিন হঠাৎ করে সে ক্যাথিকে বলে বসে, ‘‘আমি খুব তাড়াতাড়ি মারা গিয়েছিলাম। আমার শরীরে সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাজ করা থামিয়ে দিয়েছিল।’’ ক্যাথির তখন মাথায় ভেসে ওঠে আমেরিকার জনপ্রিয় বেসবলার লুই গেহরিগের কথা।
০৬১৫
ক্রিশ্চিয়ানের দাবি, সে নাকি আগের জন্মে ১৯২০ সাল থেকে ১৯৩০-এর দশকে বেসবল খেলত। স্নায়ুজনিত সমস্যার কারণে খেলা থেকে অবসর নিয়ে নেয় সে। তার দু’বছরের মাথায় ৩৭ বছর বয়সে ১৯৪১ সালে মারা যায় সে। সবই নাকি ক্রিশ্চিয়ানের পূর্বজন্মের কাহিনি।
০৭১৫
বেসবল খেলোয়াড়ের সম্পর্কে মাঝেমধ্যে বিস্তারে আলোচনা করলেও কখনও তাঁর নাম উল্লেখ করত না ক্রিশ্চিয়ান। এক দিন ক্যাথি তাঁর পুত্রকে নিউ ইয়র্ক ইয়াঙ্কিস বেসবল দলের একটি পুরনো ছবি দেখান। হাত দিয়ে লুইকে দেখিয়ে ক্রিশ্চিয়ান বলে ওঠে, ‘‘এই তো আমি!’’
০৮১৫
লুইয়ের ছবি দেখার পর অধিকাংশ সময় কখনও ট্রেন সফরের কথা, কখনও বেসবল ম্যাচের কথা, কখনও আবার অন্য খেলোয়াড়ের সঙ্গে মতবিরোধের কথা আলোচনা করত ক্রিশ্চিয়ান। ছেলের কথা বিশ্বাস করতে শুরু করেন ক্যাথি।
০৯১৫
ক্রিশ্চিয়ান আদৌ ‘জাতিস্মর’ কি না তা পরখ করে দেখার জন্য জিম টাকার নামে এক মনোবিদ এই বিষয়ে গবেষণা করতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু ক্রিশ্চিয়ানের সঙ্গে দীর্ঘ সময় আলোচনা করার পর তিনি বুঝতে পারেন যে, বাচ্চা ছেলেটি মনগড়া কথা বলছে। ‘জাতিস্মর’ হওয়ার কাহিনিকে নস্যাৎ করে দেন জিম।
১০১৫
পুত্রের প্রতি অগাধ বিশ্বাস ছিল ক্যাথির। তাই কোনও ভাবেই হাল ছাড়তে রাজি ছিলেন না তিনি। ক্রিশ্চিয়ানকে বেসবল খেলার প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। ধীরে ধীরে ক্রিশ্চিয়ানের সমস্ত কথা এক জায়গায় লিখতে শুরু করেন ক্যাথি।
১১১৫
২০১৭ সালের মার্চ মাসে ছেলেকে নিয়ে একটি বই লিখে ফেলেন ক্যাথি। ‘দ্য বয় হু নিউ টু মাচ’ নামের বইয়ে ক্রিশ্চিয়ান এবং তার ‘পূর্বজন্মের কথা’ উল্লেখ করেন ক্যাথি। পাশাপাশি ছেলের নামে একটি ওয়েবসাইটও খুলে ফেলেন তিনি।
১২১৫
ক্রিশ্চিয়ান যে আদতে লুইয়ের ‘জাতিস্মর’ তা প্রমাণিত হয়নি। কিন্তু আজও সেই বেসবল খেলোয়াড়কে মাঠে দেখলে লোকজনের মধ্যে কানাঘুষো চলতে থাকে। ক্যাথির দাবি, আট বছর বয়স থেকেই নাকি চুপচাপ হয়ে গিয়েছিল তাঁর পুত্র।
১৩১৫
আট বছর বয়স থেকেই নাকি আর লুই সংক্রান্ত কোনও রকম আলোচনা করত না ক্রিশ্চিয়ান। বরং তার নিজের জীবন নিয়েই বেশ সচেতন হয়ে পড়েছিল সে।
১৪১৫
আমেরিকার জনপ্রিয় বেসবল খেলোয়াড় ছিলেন লুই। ১৯২৩ সাল থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত নিউ ইয়র্ক ইয়াঙ্কিস দলের তরফে মোট ১৭টি মরসুমে মেজর লিগ বেসবল ম্যাচে খেলেছিলেন তিনি। তিনি বেসবল খেলায় এতটাই দক্ষ ছিলেন যে, তাঁকে অনেকে ‘দ্য আয়রন হর্স’ বলে সম্বোধন করতেন।
১৫১৫
কারও মতে, প্রচারের আলোয় আসার জন্যই নাকি ছেলেকে নিয়ে এই ধরনের কাহিনি ছড়িয়েছিলেন ক্যাথি। পুনর্জন্মে বিশ্বাসী লোকজন আবার ক্রিশ্চিয়ান এবং ক্যাথির কাহিনি বিশ্বাসও করেন। তবে বিশ্বাস থাকলেও পুনর্জন্মের কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি ‘সোনার কেল্লা’ থেকে ক্রিশ্চিয়ানের বাস্তবের ‘মুকুল’ হয়ে ওঠা নিয়ে আজও রহস্য থেকে গিয়েছে।