Manipur’s officer created history for becoming PM Modi First Female SPG Commando dgtl
Who is Adaso Kapesa
নাগা-কন্যার হাতে মোদীর নিরাপত্তা! দেশের সবচেয়ে অভিজাত কমান্ডো বাহিনীতে প্রথম মহিলা মণিপুরের ভূমিকন্যা
দেশের পয়লা নম্বর হাই প্রোফাইল মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্ব পাওয়া প্রথম মহিলা এসপিজি কমান্ডো আদাসো কাপেসা। নরেন্দ্র মোদীর সুরক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছেন এই মণিপুরি তরুণী।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৫ ১০:০৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
পরনে দুধসাদা শার্ট, কালো ব্লেজ়ার। মুখের অভিব্যক্তি শান্ত অথচ আত্মবিশ্বাসী। হবে নাই বা কেন! প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সুরক্ষার দায়িত্বভার যে রয়েছে তাঁরই কাঁধে। মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি স্বাক্ষর করতে ব্রিটেনে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। মোদীর সাম্প্রতিক সেই ব্রিটেন সফরের সময়ে তাঁর ডান দিকে, পিছনে দাঁড়ানো এই মহিলা নজর কেড়েছিলেন সকলের।
০২১৬
সমাজমাধ্যম জুড়ে প্রবল চর্চা শুরু হয় ওই তরুণীকে নিয়ে। কে তিনি যাঁকে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বলয়ে উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে? প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দেখভাল করে ‘স্পেশ্যাল প্রোটেকশন গ্রুপ’ (এসপিজি)। ভাইরাল হওয়া পোস্টগুলিতে যাঁকে দেখা গিয়েছে তিনি আর কেউ নন, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্ব পাওয়া প্রথম মহিলা এসপিজি কমান্ডো।
০৩১৬
মণিপুর-দুহিতা, নাম তাঁর আদাসো কাপেসা। মণিপুর তথা উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে তিনিই প্রথম এসপিজির কমান্ডো হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। নরেন্দ্র মোদীর সুরক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছেন এই মণিপুরি তরুণী।
০৪১৬
মোট পাঁচটি বলয়ের বেষ্টনী দিয়ে ঘেরা থাকে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা। সমস্ত নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছোনো অসাধ্যসাধনেরই নামান্তর। জনসমক্ষে কোনও অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গেলে, তাঁকে ঘিরে থাকেন এসপিজি কমান্ডোরা।
০৫১৬
প্রধানমন্ত্রীর এসপিজি নিরাপত্তার বহর তাক লাগানোর মতোই। যে কোনও হামলার ঘটনা এড়াতে এই বিশেষ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়। প্রধানমন্ত্রী জনসমক্ষে এলে তাঁর সুরক্ষার্থে এসপিজির বিশেষ নিরাপত্তা দল মোতায়েন করা হয়।
০৬১৬
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য কমান্ডো নিয়োগের ক্ষেত্রেও বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় নিয়োগ করার আগে পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই করে নেওয়া হয়। তার পরই তাঁদের নিয়োগ করা হয়।
০৭১৬
সচরাচর দেশের এক নম্বর হাই প্রোফাইল মানুষের নিরাপত্তা বলয়ে তুখোড় এসপিজি কমান্ডো ভিন্ন কারও থাকার কথা নয়। সেই বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কমান্ডোদের তালিকায় নাম রয়েছে ডেপুটেশনে কর্মরত ইনস্পেক্টর আদাসোর।
০৮১৬
মণিপুরের সেনাপতি জেলার কাইবি গ্রামের বাসিন্দা আদাসো। পুরো নাম এমেইমেইফি আদাসো কাপেসা। তিনি মণিপুরের ভূমিকন্যা হলেও আদতে মাও নাগা জনগোষ্ঠীর সদস্য।
০৯১৬
আদাসো এর আগে পিথোরাগড়ের ৫৫তম ব্যাটালিয়নে সশস্ত্র সীমা বলে ইনস্পেক্টর (জেনারেল ডিউটি) পদে নিযুক্ত ছিলেন। দুর্দান্ত কর্মদক্ষতার জন্য তিনি কর্তৃপক্ষের নজরে পড়েন। এসপিজিতে প্রশিক্ষণের জন্য বাছাই করে নেওয়া হয়েছিল আদাসোকে।
১০১৬
এক প্রত্যন্ত গ্রামে বেড়ে ওঠা আদাসো প্রথম থেকেই সাধ্যের বাইরে গিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন। কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের উপর ভর করে সশস্ত্র সীমা বলে জায়গা করে নেন তিনি। তবে তাঁর দৃষ্টি ছিল ভারতের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং সুরক্ষা বাহিনীর উপর। সেই লক্ষ্য পূরণে সমর্থ হয়েছেন আদাসো। প্রতিভা, শৃঙ্খলা এবং নিরলস পরিশ্রমের ফলে ধাপে ধাপে উত্তরণ ঘটে তাঁর।
১১১৬
এসপিজি হল দেশের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ নিরাপত্তা বাহিনী, যেখানে শুধুমাত্র সেরা কমান্ডোদেরই নির্বাচন করা হয়। লিঙ্গনির্বিশেষে এসপিজি কমান্ডোদের প্রচণ্ড শারীরিক পরিশ্রম, কৌশলগত এবং মানসিক প্রশিক্ষণের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। কঠোর সেই প্রশিক্ষণ সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন করেন আদাসো।
১২১৬
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বাহিনীর ইতিহাসে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। কারণ প্রথম বারের জন্য এক মহিলাকে প্রধানমন্ত্রীর সুরক্ষার দায়িত্বে দেখা গিয়েছে। এসপিজিতে যোগদান করা আদাসোর কাছে অন্যতম চ্যালেঞ্জ ছিল।
১৩১৬
কিছু দিন আগে পর্যন্ত এসপিজি ছিল একটি সম্পূর্ণ পুরুষ প্রধান ইউনিট। সেই ‘প্রথা’ ভেঙে চুরমার করে দিয়েছেন এই নাগা-কন্যা। অভিজাত স্কোয়াডে আদাসোর অন্তর্ভুক্তি ভারতীয় প্রতিরক্ষা এবং আধাসামরিক বাহিনীতে ক্রমবর্ধমান লিঙ্গসাম্যের প্রতীক।
১৪১৬
কমান্ডো বলতেই যে ছবিটা সাধারণ মানুষের মনে ভেসে ওঠে সেই চিত্র পাল্টে দিতে পেরেছেন মণিপুরি মহিলা কমান্ডো। অনামি এক গ্রাম থেকে উঠে আসা এই লড়াকু মেয়েটিকে পুরুষ সহকর্মীদের সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দিতে হয়েছে। প্রমাণ দিতে হয়েছে জঙ্গলে যুদ্ধ, রাতের অভিযান, পাহাড়ে চড়া, জলে ঝাঁপানো, মার্শাল আর্ট-কমান্ডো প্রশিক্ষণে তিনি পুরুষ সহকর্মীদের চেয়ে কোনও অংশে কম নন।
১৫১৬
ভারতীয় সেনাবাহিনীতে তাঁরা সংখ্যায় গুটি কতক। ৩.৮৯ শতাংশ মহিলা সেনাকর্মী, ৬.৭ শতাংশ নৌবিভাগে। ১৩.২৮ শতাংশ বায়ুসেনায়। লিঙ্গ ও সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রতি এ এক নজরকাড়া অবহেলা। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থায়ী সেনাবাহিনীর দেশে অধিকার কায়েম করতে নানা অগ্নিপরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় মহিলা সেনা অফিসারদের।
১৬১৬
অভিজাত স্কোয়াডে আদাসো কাপেসার প্রবেশ আরও বেশি সংখ্যক মেয়েকে নিরাপত্তাবাহিনীতে যোগ দেওয়া ও কমান্ডো হওয়ায় উৎসাহ দেবে। তাঁর এই লড়াইয়ের উদাহরণ দেখিয়ে লিঙ্গ ও সামাজিক ন্যায়বিচার পাবেন আরও অনেক আদাসো কাপেসা।