পদ্মা সেতু প্রকল্প অনুমোদন পায় ২০০৭ সালে। সে সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ১৬২ কোটি টাকা। সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঠিকাদারের আয়ের উপর কর ও পণ্যের কর বৃদ্ধি, বাংলাদেশি টাকার সঙ্গে ডলারের বিনিময়ে মূল্যবৃদ্ধি, নদীবাঁধ ভাঙন, ফেরিঘাট স্থানান্তর, সেতুর জন্য যন্ত্রপাতি কেনা ও নকশায় কিছু সংশোধনের জন্য ব্যয় বেড়েছে।
কী কী কারণে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো দরকার, তার একটা তালিকা তৈরি করেছেন প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। বাড়তি যে ব্যয় ধরা হয়েছে, তার বেশির ভাগটাই খরচ হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে প্রকল্প সংশোধনের মাধ্যমে যা ব্যয়খাতে যোগ করা হচ্ছে। কিছু কাজ আগামী দিনে সম্পন্ন করা হবে। তার খরচ যোগ করে চূড়ান্ত সংশোধন করা হবে প্রকল্প প্রস্তাব।
সেতু বিভাগ সূত্রে খবর, সরকারের কর বৃদ্ধির কারণে সবচেয়ে বেশি খরচ বেড়েছে। এতে প্রকল্পের খরচ বেড়েছে ৬৮৭ কোটি টাকা। মূল সেতু ও নদীবাঁধ মেরামতের কাজ করছে চিনের ঠিকাদার সংস্থা। প্রকল্পের জন্য ব্যবহৃত সামগ্রীর বড় অংশই চিনের। বিদেশি পণ্য কেনার খরচ ডলারে শোধ করতে হয়েছে। ডলারের দাম বেড়েছে। ফলে বেড়েছে খরচ।
নির্মাণকাজের তদারকি করছে দক্ষিণ কোরিয়ার কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে কর্পোরেশন। ওই সংস্থার পরামর্শদাতাদের অধিকাংশই বিদেশি। ২০১৪ সালের নভেম্বরে ওই সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কাজের জন্য সংস্থার মেয়াদ ধার্য করা হয়েছিল ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত। কিন্তু সময়মতো কাজ শেষ না হওয়ায় ওই প্রতিষ্ঠানের জন্য এখনও খরচ বইতে হচ্ছে। এর ফলে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধি হয়েছে।
পদ্মা সেতুর নকশা তাক লাগিয়েছে বিশ্বকে। এই সেতুটি গড়তে নিজেদের পরিশ্রম উজাড় করে দিয়েছেন দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ২৪ লাইভ নিউজপেপারের তথ্য অনুযায়ী, পদ্মা সেতু তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে দামি সিমেন্ট। পদ্মা সেতুর নীচ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে রেলপথ। সেখান দিয়ে ছুটবে ট্রেন।
জানা গিয়েছে, পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য (জলের অংশ) ৬.১৫ কিমি। স্থলভাগের অংশ ধরে সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য ৯ কিমির বেশি। সেতু নির্মাণের কাজ পেয়েছিল চিনের মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং। পদ্মা নদীর দুই পাড়ের সংযোগ (সড়ক ও সার্ভিস এরিয়া) তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশি সংস্থা আব্দুল মোনেম লিমিটেডকে। মালয়েশিয়ার একটি সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে তারা কাজ করেছে।