PPF calculator one can earn more than Rs 90 thousand monthly know the details dgtl
PPF Account
মাসে ৯০ হাজারের বেশি আয়! পিপিএফ থেকে কী ভাবে মোটা অর্থ রোজগার করা সম্ভব?
পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডে (পিপিএফ) বিনিয়োগ করলে প্রতি মাসে মিলতে পারে ৯০ হাজারের বেশি টাকা। এই তহবিল থেকে ঋণ নেওয়া কতটা লাভজনক?
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:০৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
অবসরের পর কী ভাবে সংসার চলবে, তা নিয়ে চিন্তায় ঘুম উড়েছে? স্টকে লগ্নি বাজারগত ঝুঁকিসাপেক্ষ হওয়ায় সেখানে বিনিয়োগ করতে ভয় পাচ্ছেন? সে ক্ষেত্রে একমাত্র বিকল্প হতে পারে স্থিতিশীল কম ঝুঁকির বিনিয়োগ। এর মধ্যে অন্যতম হল পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিপিএফ)। এর থেকে মাসে মাসে ৯১ হাজার টাকাও পেতে পারেন গ্রাহক।
০২১৭
লম্বা সময়ের জন্য লগ্নি করতে হয় পিপিএফে। এর ন্যূনতম বিনিয়োগের মেয়াদ ১৫ বছর। পিপিএফে লগ্নি আয়কর মুক্ত হওয়ায় সে দিক থেকে এটি বেশ লাভজনক। শুধু তা-ই নয়, একে ঋণভিত্তিক বিনিয়োগের তহবিল হিসাবে গড়ে তোলা হয়েছে। শেয়ার বাজারের ওঠাপড়ার সঙ্গে এর বৃদ্ধির সূচক নির্ভরশীল নয়।
০৩১৭
বর্তমানে পিপিএফে সুদের হার ৭.১ শতাংশ রেখেছে কেন্দ্র। সুদের হারের নিরিখে অন্য আর্থিক বিকল্পগুলির থেকে খুব একটা এগিয়ে নেই পিপিএফ। তবে করমুক্ত এবং দীর্ঘকালীন লগ্নির সুযোগ থাকায় একে অন্যতম সেরা তহবিল বলে মনে করেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা। ষাটোর্ধ্বদের ক্ষেত্রে পিপিএফ থেকে মোটা টাকা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
০৪১৭
পিপিএফের গ্রাহক মোট তিন ক্ষেত্রে কর ছাড়ের সুবিধা পেয়ে থাকেন। প্রথমত, এই তহবিলে লগ্নির টাকা পুরোপুরি কর-মুক্ত। আয়করের ৮০সি ধারা অনুযায়ী এই ছাড় পাবেন গ্রাহক। দ্বিতীয়ত, পিপিএফ থেকে প্রান্ত সুদ করের আওতাভুক্ত নয়। তৃতীয়ত, মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর সুদেমূলে পাওয়া টাকাকেও করের আওতার বাইরে রেখেছে সরকার।
০৫১৭
পিপিএফ গ্রাহক বছরে সর্বোচ্চ দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত এই তহবিলে রাখতে পারেন। প্রতি তিন মাস অন্তর এই তহবিলের সুদের হার পর্যালোচনা করে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। ফলে পিপিএফের সুদ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। এতে নির্দিষ্ট রিটার্নের নিশ্চয়তা রয়েছে। আর তাই মধ্যবিত্তদের একটি বড় অংশ এতে বিনিয়োগের দিকে ঝুঁকেছেন।
০৬১৭
চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ে পিপিএফের সুদ। বিশেষজ্ঞদের কথায়, আর্থিক বছরের গোড়াতেই এই তহবিলে সর্বোচ্চ অনুদান (পড়ুন দেড় লক্ষ টাকা) জমা করা ভাল। অর্থাৎ, ১ থেকে ৫ এপ্রিলের মধ্যে ওই টাকা লগ্নির পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। পিপিএফের সুদ প্রতি মাসে গণনা করা হয়। কিন্তু বার্ষিক ভাবে গ্রাহকের তহবিলে জমা পড়ে ওই সুদ।
০৭১৭
সুদ জমা পড়ার এই নিয়মের জন্য আর্থিক বছরের শুরুর দিকে বিনিয়োগ করলে বেশি লাভবান হবেন গ্রাহক। প্রাথমিক ভাবে ১৫ বছর পর বিনিয়োগকারী অতিরিক্ত অবদান-সহ বা ছাড়াই সীমাহীন সংখ্যক মেয়াদবৃদ্ধির জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে প্রতি ক্ষেত্রে পাঁচ বছরের জন্য লক ইন রাখতে হবে টাকা।
০৮১৭
১৫ বছর অবদান বাড়িয়ে পিপিএফ অ্যাকাউন্টে টাকা রেখে দিলে গ্রাহক অতিরিক্ত সুদ পাবেন। সে ক্ষেত্রে এই তহবিলে মূলধনের পরিমাণ বাড়বে। অন্য দিকে অবদান বৃদ্ধি না করলেও জমা থাকা অর্থের উপর সুদ পাওয়ার অধিকারী হবেন গ্রাহক। অর্থাৎ, সুদের পরিমাণে প্যাসিভ বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাবে।
০৯১৭
বছরে দেড় লক্ষ টাকা করে বিনিয়োগ করলে ১৫ বছর শেষে পিপিএফে মোট লগ্নির পরিমাণ দাঁড়াবে সাড়ে ২২ লক্ষ টাকা। বছরে ৭.১ শতাংশ সুদের হারে সে ক্ষেত্রে সুদ বাবদ ১৮.২ লক্ষ টাকা পাবেন গ্রাহক। সুদেমূলে মোট অর্থের পরিমাণ দাঁড়াবে ৪০.৭ লক্ষ টাকা।
১০১৭
১৫ বছর পর বিনিয়োগকারী আরও পাঁচ বছর লগ্নি করলে পিপিএফে জমা করা মোট টাকার পরিমাণ দাঁড়াবে ৩০ লক্ষ। ফলে সুদের অঙ্কও বেড়ে ৩৬.৬ লক্ষ টাকায় গিয়ে পৌঁছবে। সুদেমূলে ৬৬.৬ লক্ষ টাকা পাবেন তিনি।
১১১৭
একই ভাবে পিপিএফে ২৫ বছর লগ্নি করলে মোটা বিনিয়োগ সাড়ে ৩৭ লক্ষ টাকায় গিয়ে দাঁড়াবে। তখন এই তহবিল থেকে অনুমানিক ৬৫.৬ লক্ষ টাকা সুদ পাবেন গ্রাহক। আর তার সুদেমূলে মোট টাকার পরিমাণ দাঁড়াবে ১.০৩ কোটি।
১২১৭
পিপিএফ থেকে মোট দেড় কোটি টাকা পেতে হলে ৩০ বছর ধরে করতে হবে বিনিয়োগ। এই সময়সীমার মধ্যে ৪৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে গ্রাহককে। যার থেকে আনুমানিক ১.০৯ কোটি টাকা সুদ পাবেন তিনি। ১.৫৪ কোটি টাকা দাঁড়াবে সুদেমূলের অঙ্ক।
১৩১৭
এই প্রতিবেদনে বছরে ৭.১ শতাংশ হারে কত সুদ মিলতে পারে, তার হিসাব দেওয়া হয়েছে। সুদের হার কেন্দ্র বৃদ্ধি করলে এর চেয়ে বেশি টাকা পাবেন গ্রাহক। এতে বছরে প্রায় ১১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সুদ পাওয়া যেতে পারে। অর্থাৎ, মাসে ৯১ হাজার ৪০০ টাকা করে সুদ পাবেন গ্রাহক।
১৪১৭
সুদ বাবদ এই মাসিক আয় বছরে এক বার তুলতে পারেন গ্রাহক। মূল বিনিয়োগে হাত না দিয়েই ওই টাকা প্রত্যাহার করতে পারবেন তিনি। মূল লগ্নি ঠিক থাকায় তার উপর ফের সুদ জমার ক্ষেত্রে কোনও প্রতিবন্ধকতা নেই।
১৫১৭
বিশেষজ্ঞরা সব সময়ে কম বয়সে পিপিএফে বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। বছরে সর্বোচ্চ দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত লগ্নি করতে পারলে ভাল। মেয়াদ শেষের পর পাঁচ বছর করে অতিরিক্ত বিনিয়োগ বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে করতে হবে।
১৬১৭
পিপিএফ তহবিল থেকে ঋণ নেওয়ার সুবিধা রয়েছে। এতে ৩৬টি কিস্তিতে ঋণ পরিশোধের সুযোগ পাবেন গ্রাহক। নিয়ম অনুযায়ী, পিপিএফের সুদের চেয়ে এই তহবিল থেকে নেওয়া সুদের হার এক শতাংশ বেশি হবে। অর্থাৎ, ৮.১ শতাংশ বার্ষিক হারে সুদ পাবেন গ্রাহক।
১৭১৭
পিপিএফের নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে গ্রাহককে ঋণের মূল পরিমাণ শোধ করতে হবে। পরবর্তী কালে সুদ মেটাবেন তিনি। তবে খুব প্রয়োজন না হলে এই তহবিল থেকে ঋণ না নেওয়াই ভাল। কারণ, তাতে আর্থিক ভাবে লোকসানের সম্ভাবনা বাড়বে।