২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন সাধারণ নাগরিক নিহত হওয়ার পর পাল্টা এই অভিযান চালানো হয়। বিভিন্ন উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং প্রচুর সূত্র কাজে লাগিয়ে ন’টি জায়গা চিহ্নিত করেছিল ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা। সেই নির্দেশ পৌঁছোয় সেনার কাছে। শুরু হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর তোড়জোড়। তার পরেই আসে প্রতিশোধের পালা।
লাহোর থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরের বহাওয়ালপুর শহরটিকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের শক্ত ঘাঁটি বলে দাবি করা হয়। পাকিস্তানের দক্ষিণ পঞ্জাবের বহাওয়ালপুরের জামিয়া মসজিদ শুভান আল্লা ছিল অন্যতম প্রধান লক্ষ্যবস্তু। এই ঘাঁটিটি হাওয়ালপুর জেলার করাচি মোড়ে বহাওয়ালপুরের উপকণ্ঠে ৫ নম্বর জাতীয় সড়কে (করাচি-তোরখাম জাতীয় সড়কে) অবস্থিত ছিল।
আন্তর্জাতিক সীমানা থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই শিবিরটি ছিল জইশের সদর দফতর। ১৮ একর জমি জুড়ে বিস্তৃত এই শিবিরেই জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ, শিক্ষা এবং নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হত। জইশের শীর্ষনেতারাও এখানে বৈঠক করতেন। জইশের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ আজ়হার ও তাঁর পরিবারের সদস্যেরাও এই শিবিরে থাকতেন বলে জানা গিয়েছে।
কারণ ২৬/১১ হামলার জঙ্গি আজমল কসাব এবং ষড়যন্ত্রকারী ডেভিড কোলম্যান হেডলি এখানে প্রশিক্ষণ পেয়েছিলেন। শোনা যায়, মারকাজ় ত্যায়বা কমপ্লেক্সের মধ্যে মসজিদ ও গেস্ট হাউস নির্মাণের জন্য ওসামা বিন লাদেন ১ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন। প্রতি বছর বিভিন্ন কোর্সে প্রায় হাজার শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এখানে। কমপ্লেক্সের ভিতরে রয়েছে মাদ্রাসা, বাজার, সদস্যদের আবাসিক এলাকা, খেলার মাঠও।
সিয়ালকোটের মেহমুন জোয়া শিবিরটি আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। হিজ়বুল মুজাহিদিনের সবচেয়ে বড় শিবিরগুলির মধ্যে অন্যতম এটি। ওই শিবির থেকে সন্ত্রাসীদের জম্মুর কাঠুয়ায় সন্ত্রাস ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য পাঠানো হয়েছিল। ২০১৬ সালে পাঠানকোট বিমানঘাঁটির যে হামলায় আট জন সৈনিক নিহত হন, সেটিও এখানেই পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কোটলি গুলপুর লশকর ঘাঁটি। এই ঘাঁটির সন্ত্রাসীরা জম্মু ও কাশ্মীরের রাজৌরি এবং পুঞ্চ জেলায় সক্রিয় ছিল। পুঞ্চ এবং তীর্থযাত্রীদের বাসের উপর হামলার নেপথ্যেও এই ঘাঁটির হাত ছিল। ২০২৪ সালের ৯ জুন লশকরের জঙ্গিরা একটি বাসে গুলি চালালে ন’জন তীর্থযাত্রী নিহত হন। বাসটি খাদে পড়ে যায়।
এই ঘাঁটিগুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল বহাওয়ালপুরের ঘাঁটিটি। এখানে ভারতীয় সেনার প্রাণঘাতী হামলাতেই প্রাণ হারান মাসুদ আজ়হারের পরিবারের ১০ জন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন মাসুদের বোন এবং শ্যালকও! সর্বশেষ খবর থেকে জানা যায়, বহাওয়ালপুরের ওই ক্যাম্পাসে বসেই আবার নতুন করে জঙ্গি হামলার ছক কষছিলেন আজ়হার। মনে করা হচ্ছে সেই তথ্যের ভিত্তিতেই বহাওয়ালপুরে জইশের ঘাঁটিতে হামলা চালায় ভারতীয় বিমানবাহিনী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy