মৃতদেহ উদ্ধারের পর তাঁর দেহে কোনও বিশাল প্রাণীর কামড় ও আঘাতের চিহ্ন খুঁজে পান চিকিৎসকেরা। সেই আঘাত দেখে তাঁরা নিশ্চিত হন, পোষা প্রাণীটিই নির্মম ভাবে হত্যা করেছে মালিককে। পোষ্য ঘাতকের নাম হামফ্রে। প্রায় দেড় টন ওজনের একটি জলহস্তী। ২০০৫ সালে বন্যার জলে ভেসে যাওয়া এই বন্যপ্রাণীটিকে উদ্ধার করে এনেছিলেন মারিয়াস। ২০১১ সালে তার আক্রমণে মৃত্যু হয় মারিয়াসের।
পোষা প্রাণী না ভেবে হামফ্রেকে পরিবারের সদস্য বলে ভাবতে শুরু করেছিলেন মারিয়াস। প্রায়শই তার সঙ্গে নদীর পারে বেড়াতে চলে যেতেন। নদীর জলে চলত জলকেলি। জলহস্তীটিকে মানুষের সঙ্গে সাঁতার কাটার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেই সংক্রান্ত ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। পাঁচ বছর বয়সি জলহস্তীর পিঠে চড়ে মারিয়াসের ছবিটি খুঁজলে এখনও পাওয়া যায়।
বিশাল বপুর জলহস্তীটির পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়াতেন নির্ভীক সেনাধিনায়ক। মারিয়াসের সঙ্গে হামফ্রের এই সখ্য দেখে অবশ্য আতঙ্কিত হতেন তাঁর পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা। শেষমেশ তাঁদের সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। মারিয়াসের মৃতদেহ নদীতে ডুবে থাকা অবস্থায় পাওয়া যায়। সেই নদী থেকেই তিনি মারা যাওয়ার ছ’বছর আগে বন্যার সময় জলহস্তীটিকে উদ্ধার করেছিলেন।
বন্য জন্তুর সঙ্গে এই মাখামাখি দেখে স্ত্রী ও আত্মীয়-বন্ধুরা তাঁকে অনেক বার সতর্ক করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তবে সেই সমস্ত সাবধানবাণীকে তেমন আমল দিতেন না মারিয়াস। তাঁকে বলতে শোনা যেত, ‘‘হামফ্রে আমার ছেলের মতো। ও একজন মানুষের মতোই আচরণ করে। আমার এবং হামফ্রের মধ্যে এমন একটি সম্পর্ক রয়েছে যা অনেকেই বুঝতে পারেন না।’’
মারিয়াসের স্ত্রী লুইস, পেশায় এক ফার্মাসিস্ট। তাঁর স্বামীর এই আদরের পোষ্য সম্পর্কে ভিন্ন মত পোষণ করতেন তিনিও। জলহস্তীটির আচরণ সম্পর্কে তিনি প্রায়ই সন্দেহ প্রকাশ করতেন। কারণ এই বিশাল প্রাণীটি আগেও সমস্যা বয়ে এনেছিল। মারিয়াসের কাছে ‘বাধ্য ছেলে’র মতো আচরণ করলেও এলাকার মানুষ বিশাল বপুর এই প্রাণীটিকে খানিকটা সমঝেই চলতেন।
২০১৯ সালের অগস্ট মাসে লিওনের ‘মহলা ভিউ লায়ন গেম লজে’ ঘটেছিল এই মারাত্মক ঘটনাটি। সিংহের থাকার জায়গার বেড়াটি আরও সুরক্ষিত করার জন্য মেরামত করেছিলেন তিনি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে একটি সিংহ এসে পিছন থেকে তাঁকে আক্রমণ করে ঘাড় কামড়ে দেয়। এর পর একে একে বাকি সিংহগুলি আক্রমণ করে পালকপিতাকে। বাধা দেওয়ার কোনও সুযোগই পাননি লিওন।
বন্যপ্রাণীদের যতই প্রশিক্ষণ দেওয়ার চেষ্টা করা হোক না কেন তাদের পাশবিক প্রবৃত্তি হঠাৎ করে জেগে উঠতেই পারে। ফলে পরিণতি মারাত্মক হতে পারে বলে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ সংস্থার কর্মীরা। অনেকেই মনে করছেন, লিওন ও মারিয়াস দু’জনেই মারাত্মক ভুল করেছিলেন। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, বন্যপ্রাণীদের পোষ্য হিসাবে রাখা উচিত নয়। বন্য পশুর সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় সখ্য না করলে এই প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব ছিল বলে মনে করছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy