Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Sachin Tendulkar

কোচ রমাকান্তের একটি চড়ই বদলে দেয় সচিনের জীবন

বিশ্বের প্রতিটি শিক্ষকই বোধ হয় নিরন্তর সংগ্রাম করে যান সচিনের মতো ছাত্র গড়ে তোলার জন্য।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২১ ১২:২৬
Share: Save:
০১ ১৫
রমাকান্ত আচরেকর। সচিন তেন্ডুলকরের শিক্ষাগুরু। সচিনকে হাতে ধরে খেলা শিখিয়েছিলেন তিনি। বিনিময়ে সচিনও তাঁকে যথার্থ গুরুদক্ষিণা দিয়েছেন। বিশ্বের প্রতিটি শিক্ষকই বোধ হয় নিরন্তর সংগ্রাম করে যান সচিনের মতো ছাত্র গড়ে তোলার জন্য। কিন্তু সব ছাত্র বোধহয় সচিনের মতো গুরুদক্ষিণা দিতে পারেন না।

রমাকান্ত আচরেকর। সচিন তেন্ডুলকরের শিক্ষাগুরু। সচিনকে হাতে ধরে খেলা শিখিয়েছিলেন তিনি। বিনিময়ে সচিনও তাঁকে যথার্থ গুরুদক্ষিণা দিয়েছেন। বিশ্বের প্রতিটি শিক্ষকই বোধ হয় নিরন্তর সংগ্রাম করে যান সচিনের মতো ছাত্র গড়ে তোলার জন্য। কিন্তু সব ছাত্র বোধহয় সচিনের মতো গুরুদক্ষিণা দিতে পারেন না।

০২ ১৫
ক্রিকেটের শিক্ষাগুরুকে সচিন যেমন দিয়েছিলেন। তবে মুম্বইয়ের সেই ছোট ছেলেটির বিশ্বের দোর্দন্ডপ্রতাপ ব্যাটসম্যান হওয়ার পিছনে অবদান রয়েছে তাঁর কোচ রমাকান্তের চড়ের।

ক্রিকেটের শিক্ষাগুরুকে সচিন যেমন দিয়েছিলেন। তবে মুম্বইয়ের সেই ছোট ছেলেটির বিশ্বের দোর্দন্ডপ্রতাপ ব্যাটসম্যান হওয়ার পিছনে অবদান রয়েছে তাঁর কোচ রমাকান্তের চড়ের।

০৩ ১৫
একটি ম্যাচ মিস করার জন্য সজোরে তাঁর বাঁ গালে চড় মেরেছিলেন রমাকান্ত। হাতের টিফিন বাক্স ছিটকে মাটিতে পড়ে ছিটকে পড়েছিল সমস্ত খাবার। সেই চড়ের শব্দ তাঁর কানে আজও এমন ভাবেই বিচরণ করছে যে ক্রিকেট ছাড়া আর কিছুই তিনি ভাল ‘শুনতে’ পান না। সেই থেকেই তাঁর জীবনের মূল মন্ত্র ক্রিকেট।

একটি ম্যাচ মিস করার জন্য সজোরে তাঁর বাঁ গালে চড় মেরেছিলেন রমাকান্ত। হাতের টিফিন বাক্স ছিটকে মাটিতে পড়ে ছিটকে পড়েছিল সমস্ত খাবার। সেই চড়ের শব্দ তাঁর কানে আজও এমন ভাবেই বিচরণ করছে যে ক্রিকেট ছাড়া আর কিছুই তিনি ভাল ‘শুনতে’ পান না। সেই থেকেই তাঁর জীবনের মূল মন্ত্র ক্রিকেট।

০৪ ১৫
২০১৯ সালে ৮৬ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু হয় রমাকান্তের। তাঁর ৭৯তম জন্মদিনে মুম্বইয়ের বান্দ্রার ফ্ল্যাটে জড়ো হয়েছিলেন শ’খানেক ছাত্র। সচিন, বিনোদ কাম্বলি, অজিত আগরকর সহ হাজির ছিলেন আরও অনেকে। সেখানেই পুরনো দিনের সে সব স্মৃতিগুলো শেষবারের মতো চারণ করে নিয়েছিলেন গুরুর সঙ্গে।

২০১৯ সালে ৮৬ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু হয় রমাকান্তের। তাঁর ৭৯তম জন্মদিনে মুম্বইয়ের বান্দ্রার ফ্ল্যাটে জড়ো হয়েছিলেন শ’খানেক ছাত্র। সচিন, বিনোদ কাম্বলি, অজিত আগরকর সহ হাজির ছিলেন আরও অনেকে। সেখানেই পুরনো দিনের সে সব স্মৃতিগুলো শেষবারের মতো চারণ করে নিয়েছিলেন গুরুর সঙ্গে।

০৫ ১৫
রমাকান্তের ক্রিকেট স্কুলের নাম কামাথ মেমোরিয়াল ক্রিকেট ক্লাব। প্রতিদিনই স্কুলের পর সচিনের জন্য কিছু ম্যাচ রাখতেন রমাকান্ত। স্কুল ছুটি হলেই ক্লাবে গিয়ে খেলায় বুঁদ হতেন সচিন।

রমাকান্তের ক্রিকেট স্কুলের নাম কামাথ মেমোরিয়াল ক্রিকেট ক্লাব। প্রতিদিনই স্কুলের পর সচিনের জন্য কিছু ম্যাচ রাখতেন রমাকান্ত। স্কুল ছুটি হলেই ক্লাবে গিয়ে খেলায় বুঁদ হতেন সচিন।

০৬ ১৫
কিন্তু একদিন সচিন উল্টো কাজ করে বসলেন। স্কুল ছুটির পর মাঠে না গিয়ে এক বন্ধুর সঙ্গে চলে আসেন ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে। তাঁর স্কুলের ইংরেজি এবং মরাঠি মিডিয়াম ছাত্রদের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। বন্ধুর সঙ্গে অতি মনোযোগ সহকারে ম্যাচ দেখছিলেন সচিন আর চিৎকার করে নিজের দলের মনোবল বাড়াচ্ছিলেন।

কিন্তু একদিন সচিন উল্টো কাজ করে বসলেন। স্কুল ছুটির পর মাঠে না গিয়ে এক বন্ধুর সঙ্গে চলে আসেন ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে। তাঁর স্কুলের ইংরেজি এবং মরাঠি মিডিয়াম ছাত্রদের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। বন্ধুর সঙ্গে অতি মনোযোগ সহকারে ম্যাচ দেখছিলেন সচিন আর চিৎকার করে নিজের দলের মনোবল বাড়াচ্ছিলেন।

০৭ ১৫
ম্যাচের মাঝেই আচমকা সচিনের চোখ আটকে যায় দূরে তাঁর গুরুর দিকে। ওই দিন স্টেডিয়ামে হাজির ছিলেন রমাকান্তও।

ম্যাচের মাঝেই আচমকা সচিনের চোখ আটকে যায় দূরে তাঁর গুরুর দিকে। ওই দিন স্টেডিয়ামে হাজির ছিলেন রমাকান্তও।

০৮ ১৫
সহজ সরল মনে বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে গুরুর কাছে গিয়ে হাসি মুখে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে যান সচিন। সচিনের কথা শেষ হওয়ার আগেই তাঁর দিকে উড়ে এসেছিল গুরুর চড়। কিংকর্তব্যবিমূঢ় সচিন গালে হাত চেপে ধরে দাঁড়িয়েছিলেন। তারপর গুরুর নির্দেশেই ম্যাচ শেষ হওয়ার আগে বাড়ি ফিরে যান।

সহজ সরল মনে বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে গুরুর কাছে গিয়ে হাসি মুখে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে যান সচিন। সচিনের কথা শেষ হওয়ার আগেই তাঁর দিকে উড়ে এসেছিল গুরুর চড়। কিংকর্তব্যবিমূঢ় সচিন গালে হাত চেপে ধরে দাঁড়িয়েছিলেন। তারপর গুরুর নির্দেশেই ম্যাচ শেষ হওয়ার আগে বাড়ি ফিরে যান।

০৯ ১৫
রমাকান্ত সে দিন সচিনকে বলেছিলেন, “অন্যদের উত্সাহিত করার কাজ তোমার নয়। এমন ভাবে খেলতে হবে যাতে স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শক তোমার জন্য চিৎকার করেন।” ঠিক সেটাই পরবর্তীকালে করে দেখিয়েছেন সচিন।

রমাকান্ত সে দিন সচিনকে বলেছিলেন, “অন্যদের উত্সাহিত করার কাজ তোমার নয়। এমন ভাবে খেলতে হবে যাতে স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শক তোমার জন্য চিৎকার করেন।” ঠিক সেটাই পরবর্তীকালে করে দেখিয়েছেন সচিন।

১০ ১৫
কঠোর পরিশ্রমের অর্থ কী, ওই চড়টাই সচিনকে বুঝিয়ে দেয়। এর পর থেকে আর কোনও দিন খেলায় ফাঁকি দেওয়ার কথা মাথায় আনেননি তিনি। তা না হলে হয়তো আজও সে দিনের মতো গ্যালারি থেকে অন্য কারও মনোবল বাড়াতে হত তাঁকে।

কঠোর পরিশ্রমের অর্থ কী, ওই চড়টাই সচিনকে বুঝিয়ে দেয়। এর পর থেকে আর কোনও দিন খেলায় ফাঁকি দেওয়ার কথা মাথায় আনেননি তিনি। তা না হলে হয়তো আজও সে দিনের মতো গ্যালারি থেকে অন্য কারও মনোবল বাড়াতে হত তাঁকে।

১১ ১৫
পরিশ্রমের কোনও বিকল্প ছিল না রমাকান্তের কাছে। মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কে সারাদিন প্রশিক্ষণ দিতেন তিনি। আর শেষে ক্লান্ত শরীরে যখন বাড়ি যাওয়ার মানসিক প্রস্তুতি নিতেন সচিন ঠিক তখনই তাঁকে ব্যাট-প্যাড পরা অবস্থায় দৌড় করাতেন।

পরিশ্রমের কোনও বিকল্প ছিল না রমাকান্তের কাছে। মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কে সারাদিন প্রশিক্ষণ দিতেন তিনি। আর শেষে ক্লান্ত শরীরে যখন বাড়ি যাওয়ার মানসিক প্রস্তুতি নিতেন সচিন ঠিক তখনই তাঁকে ব্যাট-প্যাড পরা অবস্থায় দৌড় করাতেন।

১২ ১৫
মাঠে থাকুন বা না থাকুন ছাত্রদের উপরে সব সময়েই কড়া নজর থাকত গুরুর। তাই কেউ কোনওদিন ফাঁকি দিতে পারেননি। বন্ধু বিনোদ কাম্বলির সঙ্গেও এমনই এক স্মৃতি উগড়ে দেন তিনি। বন্ধু বিনোদও তাঁর মতোই গুরুর রোষের শিকার হয়েছিলেন।

মাঠে থাকুন বা না থাকুন ছাত্রদের উপরে সব সময়েই কড়া নজর থাকত গুরুর। তাই কেউ কোনওদিন ফাঁকি দিতে পারেননি। বন্ধু বিনোদ কাম্বলির সঙ্গেও এমনই এক স্মৃতি উগড়ে দেন তিনি। বন্ধু বিনোদও তাঁর মতোই গুরুর রোষের শিকার হয়েছিলেন।

১৩ ১৫
অনুশীলনের সময় ফিল্ডিং করার বদলে ঘুড়ি ওড়াচ্ছিলেন বিনোদ। তার আগে অবশ্য তাঁর চোখ মাঠের কোণায় কোণায় রেকি করে নিয়েছিল গুরু রমাকান্তকে। রমাকান্তকে দেখতে না পেয়ে বেশ নিশ্চিন্ত মনেই ঘুড়ির সুতোয় টান দিচ্ছিলেন।

অনুশীলনের সময় ফিল্ডিং করার বদলে ঘুড়ি ওড়াচ্ছিলেন বিনোদ। তার আগে অবশ্য তাঁর চোখ মাঠের কোণায় কোণায় রেকি করে নিয়েছিল গুরু রমাকান্তকে। রমাকান্তকে দেখতে না পেয়ে বেশ নিশ্চিন্ত মনেই ঘুড়ির সুতোয় টান দিচ্ছিলেন।

১৪ ১৫
গুরু যে তাদের উপরে নজর রাখছেন বেশ কয়েকবার তাকে সতর্কও করেছিলেন সচিন। পাত্তা দেননি বিনোদ। তার ফলও ভুগেছিলেন। অনুশীলন শেষ হওয়ার পর একই ভাবে তার গালেও গুরুর শক্ত হাতের চড় পড়েছিল।

গুরু যে তাদের উপরে নজর রাখছেন বেশ কয়েকবার তাকে সতর্কও করেছিলেন সচিন। পাত্তা দেননি বিনোদ। তার ফলও ভুগেছিলেন। অনুশীলন শেষ হওয়ার পর একই ভাবে তার গালেও গুরুর শক্ত হাতের চড় পড়েছিল।

১৫ ১৫
সচিন আসলে দেখে ফেলেছিলেন যে গুরু রমাকান্ত দূরের একটি গাছ থেকে তাঁদের উপর নজর রাখছেন। সে কারণেই বিনোদকে সতর্ক করেছিলেন। তখন অবশ্য বন্ধুর কাছে এই বিষয়টি স্বীকার করেননি তিনি। এর অনেক বছর পর গুরুর শেষ জন্মদিনে একত্রিত হয়ে বলেন।

সচিন আসলে দেখে ফেলেছিলেন যে গুরু রমাকান্ত দূরের একটি গাছ থেকে তাঁদের উপর নজর রাখছেন। সে কারণেই বিনোদকে সতর্ক করেছিলেন। তখন অবশ্য বন্ধুর কাছে এই বিষয়টি স্বীকার করেননি তিনি। এর অনেক বছর পর গুরুর শেষ জন্মদিনে একত্রিত হয়ে বলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE