Super Alcohol only found in space finally made in Earth by a group of scientists dgtl
Super Alcohol
মহাকাশের ‘শক্তি-সুরা’ এ বার পৃথিবীতেই বানিয়ে ফেললেন বিজ্ঞানীরা! কী এই ‘সুপার অ্যালকোহল’?
‘মিথেনটেট্রোল’ একটি অত্যন্ত অস্থির অণু। পৃথিবীতে কোনও ব্যবহারিক প্রয়োগ নেই এই সুরার। কোনও পানীয় তৈরিও সম্ভব নয় এই সুরা দিয়ে।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২৫ ১০:০৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
পৃথিবীর বুকে মদপ্রেমীদের সংখ্যা বিপুল। বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন ধরনের মদ পছন্দ। কেউ হুইস্কিতে চুমুক দিতে পছন্দ করেন, তো কারও পছন্দ বিয়ার, রাম। কারও কারও আবার বিশেষ ব্র্যান্ডের মদ ছাড়া মুখে রোচে না।
০২১৮
শুধু পৃথিবীতে নয়, মহাকাশেও রয়েছে মদের ভান্ডার। মেঘেদের মতো ভেসে বেড়ায় সেই সুরা! যদিও মহাকাশে থাকা সেই মদের মেঘ পৃথিবীর মানুষের নাগালের বাইরে।
০৩১৮
এমনই এক সুরা রয়েছে, এত দিন যার খোঁজ মিলেছিল কেবল মহাকাশে এবং তত্ত্বে। এ বার মহাকাশের সেই ‘সুপার অ্যালকোহল’ বা ‘শক্তি-সুরা’ পৃথিবীতেই বানিয়ে ফেললেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি তেমনই তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। বিজ্ঞানীমহলে হইচইও পড়েছে বিষয়টিকে নিয়ে।
০৪১৮
প্রথম বারের মতো বিজ্ঞানীরা গবেষণাগারে ‘মিথেনটেট্রোল’ নামে পরিচিত সেই অনন্য সুরা সফল ভাবে তৈরি করেছেন। এই অণু এখনও পর্যন্ত কেবল তত্ত্ব এবং মহাকাশে বিদ্যমান ছিল।
০৫১৮
একটি একক কার্বন পরমাণুর সঙ্গে চারটি হাইড্রোক্সিল (ওএইচ) গ্রুপ নিয়ে গঠিত হয় ‘সুপার অ্যালকোহল’ বা ‘মিথেনটেট্রোল’।
০৬১৮
‘মিথেনটেট্রোল’ একটি অত্যন্ত অস্থির অণু। পৃথিবীতে কোনও ব্যবহারিক প্রয়োগ নেই এই সুরার। কোনও পানীয় তৈরিও সম্ভব নয় সেই সুরা দিয়ে।
০৭১৮
কারণ, আলোর সংস্পর্শে এলে তৎক্ষণাৎ ভেঙে যায় ‘মিথেনটেট্রোল’-এর অণু। বিজ্ঞানীরা ১০০ বছরেরও বেশি সময় আগে ‘মিথেনটেট্রোল’-এর অস্তিত্বের পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এর আগে এটি কখনও তৈরি করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা।
০৮১৮
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল সেই অসাধ্যসাধন করেছেন। প্রথমে অত্যন্ত কম তাপমাত্রায় কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং জলকে জমাটবদ্ধ করে মহাকাশের মতো পরিস্থিতি তৈরি করেন ওই বিজ্ঞানীদের দল।
০৯১৮
তার পর সেটিকে সুপারনোভা এবং তারা যেমন উচ্চ শক্তির বিকিরণ নির্গমন করে, তেমন এক বিকিরণের সংস্পর্শে আনা হয়। সেই প্রতিক্রিয়ায় তৈরি হয় ‘মিথেনটেট্রোল’।
১০১৮
ওই বিজ্ঞানীরা তাঁদের গবেষণায় উল্লেখ করেছেন, এই আবিষ্কারটি আন্তঃনাক্ষত্রিক মেঘ, নক্ষত্রের মধ্যে বরফের ধুলোতে ঘটে যাওয়া অনন্য এবং অপ্রত্যাশিত রাসায়নিক পদ্ধতিকে উন্মোচিত করেছে। বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব সহকারে আরও গবেষণা চালানো দরকার বলেও জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
১১১৮
বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন, এই আবিষ্কার থেকে বোঝা যায় যে মহাবিশ্বে আরও এমন অনেক ‘অসম্ভব’ অণু থাকতে পারে, যা আমাদের বুঝতে সাহায্য করতে পারে যে কোনও গ্রহে জীবন কী ভাবে শুরু হতে পারে।
১২১৮
প্রাণসঞ্চারের জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক বস্তুগুলি কী ভাবে তৈরি হয়, তা-ও এই গবেষণা থেকে বোঝা যেতে পারে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
১৩১৮
মিথেনটেট্রোল পৃথিবীতে প্রাকৃতিক ভাবে পাওয়া যায় না। কারণ এটি আলোর সংস্পর্শে এলে এর অণু অবিলম্বে ভেঙে যায়। এই প্রক্রিয়াকে বলে বিচ্ছিন্ন আলোক আয়নীকরণ।
১৪১৮
পরীক্ষাগারে বিজ্ঞানীরা কেবল কয়েক মুহূর্তের জন্য মিথেনটেট্রোলের অণু তৈরি করতে পেরেছিলেন। তার পরেই এর অণু ভেঙে যায়।
১৫১৮
বিজ্ঞানীদের এই একই দল এর আগে মিথেনট্রায়ল নামক আর একটি ‘অসম্ভব’ অণু আবিষ্কার করেছিলেন। ওই বিজ্ঞানীদের অনুমান, মহাকাশে ঘটে যাওয়া রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাত্র এক শতাংশ আবিষ্কার করতে পেরেছে মানুষ। বাকিটা অজানা।
১৬১৮
মিথেনটেট্রোল তৈরির অগ্রণী গবেষণাটি সম্প্রতি একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। ওই আবিষ্কার প্রসঙ্গে আমেরিকার হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা বিজ্ঞানী রাল্ফ কাইজ়ার বলেন, ‘‘এই গবেষণা মহাকাশের রসায়ন সম্পর্কে আমাদের ধারণাকে একটি নতুন পথে চালিত করবে।’’
১৭১৮
বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবী থেকে মহাকাশে থাকা মদের মেঘের দূরত্ব ১০ হাজার আলোকবর্ষ। সেখানের নক্ষত্রমণ্ডলে নাকি মদের বিশাল ভান্ডার রয়েছে। কিন্তু আজকের প্রযুক্তিতে সেখানে পৌঁছোনো কার্যত অসম্ভব।
১৮১৮
বিজ্ঞানীদের দাবি, এই মেঘের কোথাও কোথাও একাধিক যৌগের ‘ককটেল’ও রয়েছে। এই ককটেলের মধ্যে কার্বন মনোক্সাইড, হাইড্রোজেন সায়ানাইড এবং অ্যামোনিয়ার মতো ক্ষতিকারক যৌগ রয়েছে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা।