Telegram billionaire co-founder and CEO leave fortune to over 106 children he has fathered dgtl
Pavel Durov
বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে ১০৬ সন্তান! মাত্র একটি শর্ত মানলেই পাভেলের এক লক্ষ ২০ হাজার কোটির সম্পত্তির মালিক হবেন তাঁরা
রাশিয়া ছাড়ার পর বার্লিন, লন্ডন, সিঙ্গাপুর, সান ফ্রান্সিসকো ঘুরে পাভেল শেষ পর্যন্ত টেলিগ্রামের সদর দফতর হিসাবে দুবাইকে বেছে নিয়েছিলেন। সেখান থেকেই নিয়ন্ত্রিত হত তাঁর অ্যাপের কাজকর্ম। ২০২১ সালের অগস্ট মাসে তাঁকে ফরাসি নাগরিকত্ব দেওয়া হয়।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৫ ১১:০৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
বিশ্বের ধনকুবেরদের তালিকার প্রথম সারিতে নাম রয়েছে তাঁর। বিয়ে না করেও শতাধিক সন্তানের বাবা তিনি। নিজের কোটি কোটি ডলারের সম্পত্তি সেই সন্তান-সন্ততির মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন বার্তা আদানপ্রদান সংক্রান্ত অ্যাপ ‘টেলিগ্রাম’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা তথা সিইও পাভেল দুরভ। তবে সেই সম্পত্তির ভাগ পেতে হলে মানতে হবে বিশেষ শর্ত।
০২১৯
সন্তানের সংখ্যার দিক দিয়ে ধৃতরাষ্ট্রকেও টপকে গিয়েছেন পাভেল। তবে তিনি অবিবাহিত। বিয়ে না করেই ১০৬ সন্তানের পিতা তিনি। ঔরসজাত সকল সন্তানের মধ্যেই নিজের সম্পত্তি ভাগ করে দিতে চান পাভেল। সম্প্রতি একটি স্থানীয় পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
০৩১৯
‘ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়র্স ইনডেক্স’ অনুযায়ী পাভেলের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১৩৯০ কোটি ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ এক লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। পাভেল জানান, ১০৬ সন্তানের মধ্যে এই টাকা সমান ভাগে ভাগ হবে। তবে পাভেলের একটি শর্ত মানলে তবেই তাঁর বিপুল সম্পত্তির ভাগীদার হবেন তাঁর সন্তানেরা। নচেৎ সম্পত্তির এক কণাও পাবেন না তাঁরা।
০৪১৯
পাভেল সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘আগামী ৩০ বছরে আমার সম্পত্তির ভাগ-বাঁটোয়ারা হবে না। আমি চাই, আমার সন্তানেরা সকলেই নিজের মতো করে সফল হোক। প্রচুর ব্যাঙ্ক ব্যালান্স দেখে গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়াবে, এমনটা যেন না হয়।’’
০৫১৯
১৯৮৪ সালের অক্টোবর মাসে রাশিয়ার সাবেক লেনিনগ্রাডে জন্ম পাভেলের। পাভেল তাঁর দাদা নিকোলাই দুরভের সঙ্গে শৈশবের অধিকাংশ সময় ইটালির তুরিনে কাটিয়েছেন। সেখানকার এক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করতেন পাভেলের বাবা।
০৬১৯
২০০২ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত পিটার্সবার্গ স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজি এবং অনুবাদ নিয়ে পড়াশোনা করেছেন পাভেল। কানাঘুষো শোনা যায় যে, সেই কলেজে পড়াকালীন দারিয়া বনদারেনকো নামে এক তরুণীর আলাপ হয়। একাংশের দাবি, দারিয়াকে নাকি বিয়েও করেছিলেন পাভেল। সেই সম্পর্ক থেকে দুই সন্তানের জন্ম দেন দারিয়া। পরে নাকি দারিয়ার সঙ্গে পাভেলের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়।
০৭১৯
দারিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর আরও দুই তরুণীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন পাভেল। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সেই সম্পর্কগুলি থেকে আরও তিন সন্তান রয়েছে পাভেলের। তা হলে তাঁর সন্তানের সংখ্যা শতাধিক কী করে?
০৮১৯
আয়ুষ্মান খুরানা অভিনীত ‘ভিকি ডোনার’ ছবিতে ভিকি চরিত্রটি রোজগারের জন্য শুক্রাণু দান করত। শুনতে এক রকম মনে হলেও পাভেলের কাহিনি অনেকটাই আলাদা। ১৫ বছর আগে এক বন্ধু দম্পতির অনুরোধে প্রথম বার শুক্রাণু দান করেছিলেন পাভেল। তাঁর শুক্রাণুর সাহায্যেই অভিভাবক হওয়ার সাধ পূরণ হয়েছিল ওই দম্পতির।
০৯১৯
পরে আইভিএফ ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের অনুরোধে অসংখ্য বার শুক্রাণু দান করেছিলেন পাভেল। রাশিয়ার একটি আইভিএফ ক্লিনিক সূত্রে খবর, পাভেলের শুক্রাণু বিনামূল্যে পাওয়ার ‘সুবর্ণসুযোগ’ হাতছাড়া করতে চাইতেন না মহিলারা। পাভেল আগেই জানিয়েছিলেন, তাঁর শুক্রাণু জরায়ুতে প্রতিস্থাপন করে যাঁরা গর্ভধারণ করবেন তাঁদের চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করবেন তিনি।
১০১৯
পাভেলের ঔরস যাঁরা গর্ভে ধারণ করতেন, তাঁদের জন্য তিনি বেঁধে দিয়েছিলেন শর্ত। যে সব মহিলা এই ‘সুযোগ’ নিতে চাইতেন, তাঁদের বয়স ৩৭-এর মধ্যে হওয়া বাঞ্ছনীয় ছিল। আইভিএফের মাধ্যমে সন্তানধারণের জন্য শরীর প্রস্তুত কি না, সেই পরীক্ষাতেও পাশ করতে হত ওই মহিলাদের। এই ভাবে ১২টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে রয়েছে পাভেলের ঔরসজাত সন্তানেরা।
১১১৯
রাশিয়া, ফ্রান্স এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি— এই তিনটি দেশের পাসপোর্ট রয়েছে পাভেলের। ২০০৬ সালে ব্যবসায় হাতেখড়ি হয় তাঁর। ২০১৩ সালে ভাই নিকোলাইয়ের সঙ্গে টেলিগ্রাম অ্যাপ শুরু করেন তিনি। এই অ্যাপ প্রথম দিকে জনপ্রিয়তা লাভ করে রাশিয়া এবং ইউক্রেনে। ২০১৮ সালে রাশিয়া এই অ্যাপ নিষিদ্ধ করার পথে হাঁটে।
১২১৯
রুশ সরকারের সঙ্গে পাভেলের সংঘাত বহু দিনের। অভিযোগ, ‘টেলিগ্রাম’ অ্যাপের তথ্যভান্ডার রুশ প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয় পাভেলকে। সেই চাপের হাত থেকে বাঁচতে ২০১৪ সালে রাশিয়া ছাড়েন তিনি।
১৩১৯
রাশিয়া ছাড়ার পর বার্লিন, লন্ডন, সিঙ্গাপুর, সান ফ্রান্সিসকো ঘুরে পাভেল শেষ পর্যন্ত টেলিগ্রামের সদর দফতর হিসাবে দুবাইকে বেছে নিয়েছিলেন। সেখান থেকেই নিয়ন্ত্রিত হত তাঁর অ্যাপের কাজকর্ম। ২০২১ সালের অগস্ট মাসে তাঁকে ফরাসি নাগরিকত্ব দেওয়া হয়।
১৪১৯
এখন অবশ্য আর শুক্রাণু দানের সঙ্গে যুক্ত নন পাভেল। দীর্ঘ দিন ধরে কোনও ক্লিনিকের সঙ্গে যোগাযোগও নেই তাঁর। এক সময়ে পাভেলের বিরুদ্ধে জারি করা হয়েছিল গ্রেফতারি পরোয়ানা। ২০২৪ সালের অগস্ট মাসে ব্যক্তিগত বিমানে প্যারিসের লো বোর্গেট বিমানবন্দরে নামতেই ফরাসি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন তিনি।
১৫১৯
টেলিগ্রাম কর্তা পাভেলের বিরুদ্ধে সংগঠিত অপরাধে জড়িত থাকার ‘প্রাথমিক অভিযোগ’ এনেছিল ফ্রান্সের তদন্তকারী সংস্থা। টেলিগ্রাম অ্যাপের মাধ্যমে কিছু অপরাধী চক্র মাদক পাচার, শিশু পর্নোগ্রাফি-সহ বেশ কিছু অপরাধমূলক কাজকর্ম চালিয়েছিল বলে অভিযোগ।
১৬১৯
তদন্তকারীদের অভিযোগ, অপরাধমূলক কার্যকলাপ ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন টেলিগ্রাম কর্তা পাভেল। ব্যক্তিগত বিমানে আজ়ারবাইজানের বাকু থেকে ফ্রান্সে যাচ্ছিলেন পাভেল। তাঁর সঙ্গী ছিলেন জুলি ভ্যাভিলোভা নামে ২৪ বছর বয়সি বান্ধবী। বান্ধবীর সামনেই তাঁকে হাতকড়া পরিয়েছিল ফরাসি পুলিশ।
১৭১৯
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, জুলি ভ্যাভিলোভা এক জন ক্রিপ্টো বিশেষজ্ঞ এবং গেমার। প্রায়ই নানা দেশে পাভেলকে সঙ্গ দিতে দেখা যেত জুলিকে। ইংরেজি, স্প্যানিশ, আরবি এবং রাশিয়ান ভাষায় দড় ছিলেন পাভেলের বান্ধবী।
১৮১৯
গ্রেফতারির চার দিন পর ৫০ লক্ষ ইউরোর (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৪৬ কোটি ৭১ লক্ষ টাকা) বিনিময়ে জামিন পেয়েছিলেন পাভেল। তবে জামিনের শর্ত ছিল, তিনি ফ্রান্সের বাইরে যেতে পারবেন না।
১৯১৯
চলতি বছরের মার্চ মাসে প্রথম বার ফ্রান্সের বাইরে পা রাখার অনুমতি দেওয়া হয় পাভেলকে। কয়েক সপ্তাহের জন্য কড়াকড়ি শিথিল করেছে ফ্রান্সের আদালত। ফ্রান্স থেকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে পৌঁছোন দুরভ। বর্তমানে তিনি রয়েছেন দুবাইয়ে।